|
|
|
|
নন্দীগ্রামেও এ বার ‘সিন্ডিকেট’, রেল প্রকল্পের কাজে জট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
ইমারতি সামগ্রীর সরবরাহ নিয়ে শাসকদলের লোকজনের তৈরি সিন্ডিকেটে গোলমাল এবং শ্রমিক বিক্ষোভে নন্দীগ্রামে রেলপ্রকল্পের নির্মাণকাজ থমকে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার বিকেল থেকে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে ঠিকাদার সংস্থা সূত্রের খবর। তবে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, “ঝামেলার জেরে কাজ বন্ধের অভিযোগ ঠিক নয়। নন্দীগ্রামে শহিদ দিবস কর্মসূচির জন্য দু’দিন কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।”
আজ, বুধবারই ১৪ মার্চের শহিদ-স্মরণে নন্দীগ্রামে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে তিনিই নন্দীগ্রামকে রেললাইনে জুড়তে চেয়ে বাজকুল থেকে রেলসম্প্রসারণ প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। বাম জমানায় যাঁরা কেমিক্যাল হাবের জন্য জমি দিতে অস্বীকার করে ‘ভূমিরক্ষা আন্দোলন’ গড়ে তুলেছিলেন, বাড়তি ক্ষতিপূরণ ও চাকরির প্রস্তাবে সেই নন্দীগ্রামের মানুষই রেল প্রকল্পে জমি দিতে রাজি হয়ে যান। জমি-জট কেটে মাত্র কয়েক মাস আগে নির্মাণ শুরু হয়। তখন থেকেই ‘সিন্ডিকেট’ মাথা চাড়া দেয় বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য শেখ বাইতুল ও শেখ সানোয়ারদের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে ইমারতি সামগ্রী সরবরাহের সংস্থা। বাইতুল আগে ঠিকাশ্রমিক সরবরাহ করতেন। পরে ইমারতি সামগ্রী সরবরাহে নামেন। এখন সিন্ডিকেটের কাছ থেকেই নির্মাণ সামগ্রী কিনতে ঠিকাদার সংস্থাকে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। জিনিসপত্রের মান এবং পরিমাণ নিয়ে ঠিকাদার সংস্থার আপত্তি থাকলেও তারা প্রকাশ্যে বিরোধিতা করতে পারছিল না। যদিও সম্প্রতি রেলমন্ত্রকে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে ঠিকাদার সংস্থার দাবি। কিন্তু সিন্ডিকেটের মধ্যেই গোলমাল বেধে যাওয়ায় সমস্যা ঘোরালো হয়েছে।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে নন্দীগ্রাম থেকে রাজ্যে ‘পরিবর্তনের হাওয়া’ বইতে শুরু করেছিল, সেখানে এখন তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্য। বিরোধী দলের উপস্থিতি টের পাওয়াই ভার। এই অবস্থায় সিন্ডিকেটের শর্ত মেনেই কাজ চলছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে সিন্ডিকেটের মধ্যেই বিরোধ বেধেছে। নতুন একটি সংস্থাও মাথাচাড়া দিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। পুরনো ও নতুন সিন্ডিকেটের মধ্যে কে ইমারতি সামগ্রী সরবরাহ করবে, এই নিয়ে বিরোধ বেধেছে। বাইতুল-সানোয়ার বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। বাইতুলের সংস্থা ডাম্পারে মালপত্র আনা-নেওয়া শুরু করায় এক দল শ্রমিক কাজ হারিয়ে সোমবার বিক্ষোভ দেখান। বিকেলেই কাজ বন্ধ হয়ে যায় বলে ঠিকাদার সংস্থা জানিয়েছে। বাইতুল দাবি করেন, “আমি সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত নই। তবে আমাদের এলাকার কয়েক জন ইমারতি সামগ্রী সরবরাহ করেন। সোমবার কিছু লোকের সঙ্গে আমাদের শ্রমিক সংগঠনের ঝামেলা হয়। পঞ্চায়েত সদস্য হিসেবে আমি ওই ঝামেলা মিটিয়ে দিয়েছি।” চেষ্টা করেও সানোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। |
|
|
|
|
|