আগের রেলবাজেটে ঘোষণা ছিল মেদিনীপুর স্টেশনে মাল্টি-ফাংশনাল কমপ্লেক্স তৈরি হবে। খড়্গপুরে হবে লোকো-পাইলট ট্রেনিং সেন্টার। আজ, বুধবার আর একটা রেল বাজেট পেশ হতে চলেছে সংসদে। অথচ শুরুই হয়নি আগের প্রকল্পগুলির কাজ! ভাদুতলা-ঝাড়গ্রাম ভায়া লালগড় নতুন লাইনের কথাও ঘোষণা করেছিলেন আগের রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কাজও এগোয়নি বলেই অভিযোগ। এই অবস্থায় আজ ফের বাজেট পেশ করতে চলেছেন মমতাদেবীর দলেরই রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। দুই মেদিনীপুরের জন্য এ বারের বাজেট নতুন কী খবর আনের থেকেও বেশি আগ্রহ পুরনো ঘোষণাগুলির জন্য কতটা বরাদ্দ থাকে বা আদৌ থাকে কি নাতা নিয়ে। |
পাঁশকুড়া থেকে ভায়া ঘাটাল চন্দ্রকোনা রোড পর্যন্ত রেললাইন তৈরির দাবি অনেক দিনের। সেই দাবিও এখনও পূরণ হয়নি। তারই মধ্যে লালগড়ে রেললাইনের ঘোষণায় শুধুমাত্র ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সুলভ চমক’ই ছিল বলে অভিযোগ বিরোধীদের। মেদিনীপুরের সিপিআই সাংসদ প্রবোধ পণ্ডার বক্তব্য, “বিপুল সংখ্যক প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছিল আগের এবং তারও আগের বাজেটে। কিন্তু অর্থের জোগান কোথা থেকে আসবে, সেটি নিশ্চিত করা হয়নি। ফলে অধিকাংশ প্রকল্পই মুখ থুবড়ে পড়েছে।” তাঁর কথায়, “কতটা কাপড় রয়েছে তা দেখেই জামা তৈরির বরাত দিতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তো কাপড়ই নেই। জামা হবে কী করে!” রেল দফতর অবশ্য জানিয়েছে, ভাদুতলা-ঝাড়গ্রাম ভায়া লালগড় নতুন লাইনের জন্য ইতিমধ্যে প্রাথমিক সমীক্ষা হয়েছে। এখন চূড়ান্ত-পর্যায়ে জায়গা চিহ্নিত করার কাজ চলছে। রেলের এক আধিকারিক বলেন, “নতুন লাইন এক বছরের মধ্যে হয় না। এ ক্ষেত্রে কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। ঘোষণার পর একে একে সেই সব প্রক্রিয়া শেষ হয়।” দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার বলেন, “ওই লাইন তৈরির জন্য প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে।”
তবে ঘোষিত প্রকল্পের অধিকাংশ কাজই কিন্তু এখনও শুরু হয়নি। রেলকে কেন্দ্র করে খড়্গপুর শহরের পরিধি বেড়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই শহরে একটি অ্যাডভান্সড লোকো-পাইলট ট্রেনিং সেন্টার গড়ে তুলতে উদ্যোগীও হয়েছিলেন। তৈরি হয়েছিল পরিকল্পনা। শেষমেশ ২০১০-এর অক্টোবরে প্রস্তাবিত প্রকল্পের শিলান্যাসও হয়। শহরের চাঁদমারি এলাকায় রেলের বেশ কিছুটা জমি রয়েছে। এখানেই গড়ে ওঠার কথা ছিল পাইলট ট্রেনিং সেন্টারের। কিন্তু, বছর ঘুরে গেলেও এখনও সেই কাজ শুরু হয়নি। মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, “শুধু লোকো-পাইলট ট্রেনিং সেন্টার কেন, মেদিনীপুর স্টেশনে মাল্টি-ফাংশনাল কমপ্লেক্স তৈরির ঘোষণাও হয়েছিল। তারই বা কী হল? আসলে বাজেটে কিছু জনপ্রিয় ঘোষণা করা হয়েছিল মাত্র। পরে তার রূপায়ণে আর নজর দেওয়া হয়নি। এ বারও হয়তো এমন কিছু ঘোষণা থাকবে!” ট্রেনিং সেন্টার তৈরির জন্য প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২ কোটি টাকা। শুধু এই ট্রেনিং সেন্টারই নয়, খড়্গপুরের চাঁদমারি এলাকায় রেলের জমির কাছে গেলে চোখে পড়বে আরও একাধিক ফলক। যেখানে ঘেরা জায়গায় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের হোর্ডিং রয়েছে। কিন্তু, প্রকল্পের কাজ এগোয়নি। যেমন, কাস্টমার কেয়ার ট্রেনিং সেন্টার তৈরির জন্য এখানে ৫.৫ একর জমি চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। অ্যাডভান্সড লোকো পাইলট হস্টেল তৈরির জন্য ৯.৭ একর জমি চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে।
কিন্তু ওই পর্যন্তই। |