রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় • বাগনান |
কাজ শুরু হয়েছিল সংস্কারের। কাজ এগিয়েও ছিল বেশ কিছুটা। কিন্তু প্রায় এক বছর হতে চলল সংস্কারের কাজ বন্ধ রয়েছে হাওড়ার বাগনানের মেল্লকের চারশো বছরের প্রাচীন গোপালের মন্দিরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪৭০ শকাব্দে এই গোপালের মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মুকুন্দপ্রসাদ রায়চৌধুরী। তখন নিত্যপূজা, রথযাত্রা, জন্মোষ্টমী, ওরস পালিত হত সাড়ম্বরে। কিন্তু কালক্রমে হাওড়া জেলার পুরাকীর্তি এই মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ক্রমশ ধ্বংসের পথে এগিয়ে যায়। গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে মাঝে মাঝে মেরামত করে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টাও করে ছিলেন বেশ কয়েক বছর। কিন্তু তাতে সুরাহা না হওয়ায় মন্দির কমিটির উদ্যোক্তারা সংস্কারের জন্য মহাকরণ পুরাতত্ত্ব দফতরে লিখিত অভিযোগ জানান।
সরকারি টাকা মঞ্জুর হওয়ার পর ২০০৮ সাল নাগাদ মন্দির মেরামতের কাজ শুরু হয়। যদিও টাকার অভাবে এক বছরের বেশি কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দা অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কাজ শুরু হওয়ার পর মাঝে মাঝে পনেরো দিন বা এক মাস কাজ হত আবার কিছু দিন বন্ধ থাকতো। কিন্তু এ বার মন্দির সংস্কারের কাজ টানা তিন বছর বন্ধ রয়েছে। |
এখন মন্দিরচূড়া ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে, মন্দিরের গায়ে অজস্র বাঁশ বাঁধা এবং মাথার উপর ত্রিপলের বিভিন্ন অংশ ছিঁড়ে একাকার। এই অবস্থায় মন্দিরে মূর্তিটি রাখা যাচ্ছে না।” মন্দিরের পাশের বাসিন্দা বাসন্তী চট্টোপাধ্যায় জানান, ২০০৫ সালে মন্দিরের ছাদ ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই তাঁর বাড়িতেই রাধাকৃষ্ণ মূর্তিটি রাখা হয় এবং সেখানেই নিত্য পূজা ও ভোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রায়চৌধুরী পরিবারের জ্যোতির্ময়বাবু বলেন, “দোলে মন্দিরের কাজ শেষ হল না। এই উৎসবে মন্দির প্রাঙ্গণে এক দিনের মেলা বসে। পূজা অর্চনা ছাড়াও আবির খেলা হয়ে থাকে। তবে আগের মতো আড়ম্বর আর কিছুই নেই।” মন্দির কমিটির সদস্য সরল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমি গত ৮ বছর ধরে গোপালের রাস ও জন্মোষ্টমী দায়িত্বের সঙ্গে করে আসছি। মন্দিরের অবস্থা এখন আগের থেকে আরও খারাপ। যে ভাবেই হোক তার সংস্কার করতে হবে।” অন্য দিকে, মন্দির সংস্কারের ঠিকাদার সমর মুখোপাধ্যায় বলেন, “এ পর্যন্ত প্রায় ১২ লক্ষ টাকায় ৩৩ শতাংশ কাজ হয়েছে। এরপর টাকা এলে তবেই কাজ হবে।” এই বিষয়ে রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের এক কর্তা জানান, প্রশাসনিক কিছু জটিলতার জন্য আপাতত টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। জটিলতা কাটলে বিষয়টি ভেবে দেখা হবে। |