রাস্তা তৈরিতে বাধা আমগাছ, থমকে প্রকল্প
ঞ্চায়েতের নকশা অনুযায়ী, একটি গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করতে গেলে কাটা পড়বে একটি আম গাছ। গাছের মালিকের তাতে আপত্তি আছে। তিনি রাস্তাটি ঘুরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। গ্রামবাসীদের একাংশের পাল্টা দাবি, হয় ওই গাছ কেটে রাস্তা তৈরি হবে, না হলে রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে যদি অন্য কোথাও গাছ কাটার মতো পরিস্থিতি হয়, তা হলে রাস্তার গতি ঘুরিয়ে দিতে হবে। এই পরিস্থিতিতে মাস খানেক হতে চলল, আরামবাগের গৌরহাটি ১ পঞ্চায়েতের রতনপুর গ্রামে রাস্তা তৈরির কাজ শুরুই করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ অভিযোগ জানিয়েছেন বিডিও-র কাছে। রাস্তাটি আদৌ তৈরি করা যাবে কিনা, তা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গ্রামে উত্তেজনাও আছে।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে এই রাস্তাটি তৈরির জন্য দিন কুড়ি আগে বোল্ডার-মোরামও মজুত করা হয়েছে। মাস ছ’য়েক আগে বিতর্কিত জায়গাটি বাদে বিক্ষিপ্ত ভাবে মাটির কাজও হয়েছে বলে পঞ্চায়েত সূত্রে জানানো হয়েছে। বিডিও মৃণালকান্তি গুঁই বলেন, “গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বন দফতরের আরামবাগ শাখাকেও বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।” বন দফতরের আরামবাগ শাখার রেঞ্জ অফিসার চন্দ্রশেখর মাহাতো বলেন, “গাছের মালিক আপত্তি তুললে আইনত গাছ কাটা যাবে না।” এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের মুখাপেক্ষী গৌরহাটি ১ পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের পদ্মাবতী পাল। তাঁর কথায়, “রাস্তাটি হবে কিনা কিংবা কী ভাবে হবে সে ব্যাপারে বিডিও-ই নির্দেশ দেবেন।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এই গ্রামীণ রাস্তাটির দাবি দীর্ঘ দিনের। পঞ্চায়েত অতীতে মাটি ফেলে রাস্তার রূপরেখা তৈরি করলেও তা এখনও রেকর্ড-ভুক্ত নয়। সম্প্রতি রাস্তাটি স্থায়ী ভাবে বোল্ডার, মোরাম ফেলে তৈরির করার সিদ্ধান্ত হয়। পঞ্চায়েতের বাস্তুকারেরা মাপজোক করে নকশা তৈরি করেন। প্রস্তাবিত রাস্তাটি লম্বায় হবে ৪০০ মিটার। চওড়া ২.৮ মিটার।
মাস খানেক আগে স্থানীয় বাসিন্দা কাজল ঘোষ ও তাঁর ভাইয়েরা দাবি তোলেন, রাস্তাটি যেখান দিয়ে তৈরি হওয়ার কথা, সেখানে তাঁদের একটি আমগাছ পড়ছে। ওই গাছ কোনও মতেই কাটা যাবে না। এরই জেরে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
গ্রামের একাংশ তাতে ক্ষুব্ধ। ‘জনস্বার্থে’ গাছ কাটা উচিত বলে মনে করেন তাঁরা।
বিষয়টিতে ইতিমধ্যে রাজনীতির রঙও লেগেছে। কাজলবাবু ও তাঁর ভাই বিজয় ঘোষ, জগন্নাথ ঘোষেরা তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতার দ্বারস্থ হন। গাছ বাঁচিয়ে রাস্তা তৈরির দাবি তোলেন কাজলবাবুরা। সেই মতো পুলিশ-প্রশাসনকেও বিষয়টি জানান তাঁরা। অন্য দিকে, গ্রামের একটি অংশ আর এক তৃণমূল নেতার ‘স্মরণাপন্ন’ হন। দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
কাজলবাবুর বক্তব্য, “আমি রাস্তার জন্য জায়গা দিতে রাজি। কিন্তু এটুকুই দাবি করেছি, আমার জমির শেষ সীমানা দিয়ে রাস্তাটি হোক। তাতে গাছটিও বাঁচবে।” গ্রামবাসীদের তরফে বিজন সামন্ত, রতন ঘোষদের বক্তব্য, প্রস্তাবিত রাস্তাটির পুরো অংশ জুড়েই কিছু না কিছু অসুবিধা আছে। কারও জায়গা দ্বিখণ্ডিত হবে। কারও গাছ বা বাগানের ক্ষতি হবে। গ্রামবাসীদের এই অংশের যুক্তি, যাঁদের ক্ষতি হবে, তাঁরা সকলেই বলতে পারেন, রাস্তার মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু এ ভাবে রাস্তাটি আঁকাবাঁকা হবে, দূরত্ব বেড়ে যাবে। পঞ্চায়েতের নকশাই কার্যকর করা হোক বলে দাবি তুলেছেন তাঁরা।
কাজল ঘোষের পক্ষ নিয়ে তৃণমূল নেতা সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, “বিষয়টি পঞ্চায়েতকে বলেছি। পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনই সিদ্ধান্ত নেবে।” অন্য দিকে, গ্রামবাসীদের তরফে আর এক তৃণমূল নেতা ধনঞ্জয় ঘোষের বক্তব্য, “রাস্তা নিয়ে প্রথম বৈঠকে কাজল ঘোষেরা গাছ কাটার স্বপক্ষেই মত দিয়েছিলেন। এখন আবার আপত্তি তুলেছেন ওঁরা। রাস্তাটি নকশা অনুযায়ীই করতে হবে। পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছি আমরা।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.