|
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
(প্রধান শিক্ষক) |
|
শূন্য থেকে শুরু হয়েছিল পথচলা |
মাথার উপরে উদার আকাশ। দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ। আঁকা বাঁকা মেঠো পথ, পল্লীবাসীর অনাবিল এবং অনাড়ম্বর জীবনধারা। এমন প্রাকৃতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে ১৯৬৯ সালে আমাদের বিদ্যালয়ের পত্তন ঘটে। ১৯৮৪ সালে জুনিয়র হাইস্কুল হিসাবে সরকারি অনুমোদন লাভ করে। স্থাপন কাল থেকেই অনেক অভাব এবং চড়াই-উতরাই পার হয়ে আমাদের বিদ্যালয়কে অগ্রসর হতে হয়েছে। উলুবেড়িয়া ১ ব্লকের এই এলাকায় কোনও বিত্তশালী ও প্রভাবশালী মানুষ না থাকায় আমাদের স্কুল কোনও অর্থানুকুল্য লাভ করতে পারেনি। আমরা প্রায় প্রতিদিন গ্রামবাসীদের কাছ থেকে টালি, বাঁশ, ইট সংগ্রহ করতাম। এরই পাশাপাশি চালিয়ে যেতাম ছাত্র-ছাত্রী সংগ্রহের কাজ। এক কথায় শূন্য থেকে বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল। |
এর পর উত্তোরণের সোপান ধরে গত ২০০৫ সালে আমাদের স্কুল উন্নীত হয় দশম শ্রেণিতে। তখন পরিকাঠামোগত অসুবিধার পাশাপাশি স্কুলে তীব্র সঙ্কট চলছে। কারণ শিক্ষকের অভাব। সে সময়ে আমরা মাত্র ছ’জন শিক্ষক দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে প্রথম বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসালাম। প্রথম বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৭৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়। এর মধ্যে ২ জন পায় প্রথম বিভাগ। এর পরে একে একে আমাদের স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকা আসতে থাকেন। বর্তমানে আমাদের স্কুলে পঠনপাঠন ছাড়াও হয় সাংস্কৃতিক এবং ক্রীড়ানুষ্ঠান। এর পাশাপাশি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সততা এবং মূল্যবোধের শিক্ষা দেওয়া হয়। পরিচালন সমিতির সদস্যদের শিক্ষক শিক্ষিকামণ্ডলী এবং এলাকার সর্বস্তরের মানুষের ভালোবাসা, আন্তরিকতায় আমরা বার বার সমৃদ্ধ হয়েছি। অভাবে ঢাকা দেওয়া অতীতের পথ পার হয়ে আজ আমরা আলোকিত বর্তমানে পৌঁছেছি। সর্বশিক্ষা মিশন এবং মাননীয় সাংসদের আর্থিক সহযোগিতায় স্কুলের পরিকাঠামোগত অভাব অনেকটাই দূর হয়েছে। ভবিষ্যতে এই স্কুল উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হবে বলেও আশা রাখি।
|
আমার চোখে |
হোসেনুর রহমান
(দশম শ্রেণির প্রথম স্থানাধিকারী) |
|
আমি আমার স্কুলে প্রচণ্ড ভালোবাসি। শিক্ষকমণ্ডলীর থেকে নানা ভাবে আমি উৎসাহিত ও উপকৃত হই। আমার বইয়ের অনেকটা অভাবই আমার স্কুলে শিক্ষক মহাশয়েরা মিটিয়ে দিয়ে থাকেন। যখনই যা প্রয়োজন হয় আমার শিক্ষকেরা আমাদের পুত্রবৎ মনে করে সেই সব প্রয়োজন মিটিয়ে থাকেন। বিদ্যালয় আমার কাছে তীর্থক্ষেত্র। শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিকাশের ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতিনিয়ত আমাকে অনুপ্রাণিত করেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেখেই আমি ভবিষ্যতে এক জন আদর্শ শিক্ষক হিসাবে নিজেকে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখি। |