পারলে, আয়বৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগবে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেরও সুবিধে হবে।
আসন্ন বাজেটের দিকে তাকিয়ে ভারতীয় অর্থনীতির অবস্থা যাচাই করেছেন বিবেক দেবরায় |
দু’দিন পরে বাজেট। বাজেটে অনেক খুঁটিনাটি থাকে, আর থাকে একটা বড় ছবি। এ বারের বড় ছবিটা কী? সেই ছবির দুটো দিক আছে: আয়বৃদ্ধি আর মূল্যস্ফীতি। কয়েক বছরের আয়বৃদ্ধির হিসেবটা দেখা যাক। ২০০৩-০৪ সালে জি ডি পি তথা জাতীয় আয় বেড়েছিল ৮.৫ শতাংশ। তার পরের বছরগুলোর হিসেব: ৭.৫ শতাংশ (২০০৪-০৫), ৯.৫ (২০০৫-০৬), ৯.৫ (২০০৬-০৭), ৯.৮ (২০০৭-০৮)। ২০০৮-০৯ সালে আয়বৃদ্ধির হার কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৬.৭ শতাংশ, কিন্তু পরের দু’বছরে আবার সেই হার বাড়ে ৭.৪ শতাংশ (২০০৯-১০) এবং ৮.৫ (২০১০-১১)। সরকারি ব্যাখ্যা ছিল মোটামুটি এই রকম: বিশ্ব বাজারে আর্থিক বিপর্যয় আমাদের আঘাত করেছে, সেই ধাক্কা সামলানোর জন্য সরকারি ব্যয় বাড়ানোর দরকার হয়েছে এবং সরকারি ব্যয় বাড়িয়ে আমরা ধাক্কা সামলাতে পেরেছি। ভারতীয় অর্থনীতি আবার তার অগ্রগতির ধারায় ফিরে এসেছে। এ বার আয়বৃদ্ধির হার দুই অঙ্কে পৌঁছবে, মানে দশ শতাংশ ছাড়াবে।
কিন্তু ২০১১-১২ এক জোর ঝাঁকুনি দিল। সরকারের আনুমানিক আগাম হিসেব অনুসারে এই বছরে ভারতের জি ডি পি বাড়বে মোটামুটি ৬.৯ শতাংশ। এই অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে (অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর) আয়বৃদ্ধি যা দাঁড়িয়েছে তাতে অবশ্য গোটা বছরে ৬.৯ শতাংশ আয়বৃদ্ধির সম্ভাবনা বিশেষ উজ্জ্বল নয়। কিন্তু সেই তর্কে না গিয়েও বলা চলে যে, ২০১১-১২ সালে আয়বৃদ্ধি ৭ শতাংশের বেশি হবে না। ২০১২-১৩’য় কী হবে? প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদ গত ফেব্রুয়ারি মাসে একটি রিপোর্ট দাখিল করেছে, তাতে প্রত্যাশা করা হয়েছে যে, আগামী অর্থবর্ষে ৭.৫ থেকে ৮ শতাংশ আয়বৃদ্ধি ঘটবে। বিভিন্ন পেশাদার সংস্থার হিসেবের ভিত্তিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমান, আয়বৃদ্ধি হবে ৭.৩ শতাংশ। |
সংস্কারের পথে চলা সম্ভব কি? প্রণব মুখোপাধ্যায় ও মনমোহন সিংহ। |
সুতরাং আমাদের আয়বৃদ্ধির গতিভঙ্গ হয়েছে, বৃদ্ধির হার ৯ থেকে ৭ শতাংশে নেমে আসছে, এমন আশঙ্কার কারণ আছে। যোজনা কমিশন দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিক যোজনার (২০১২-১৭) যে সব নথিপত্র তৈরি করেছে, তাতেও এই আশঙ্কা স্পষ্ট। এই গতিভঙ্গের জন্য বিশ্ব অর্থনীতির, বিশেষত গ্রিস তথা ইউরোপের ঘটনাবলিকে দায়ী করা সহজ। কিন্তু দেশের আর্থিক নীতির যথাযথ সংস্কার ঘটাতে পারলে এই সব বাইরের সমস্যার মোকাবিলা করা যেত। এবং, অভ্যন্তরীণ সংস্কার মানে কেবল খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগকে ছাড়পত্র দেওয়া নয়। আরও বড় রকমের সংস্কার দরকার অন্যত্র। দু’একটা উদাহরণ দেওয়া যাক।
আয়বৃদ্ধির হার যা-ই হোক না কেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার ঘটাতে পারলে সে হার বাড়ানো সম্ভব। কতটা বাড়ানো সম্ভব, তার কিছু নমুনা দিই। পাকা অঙ্ক নয়, মোটামুটি একটা হিসেব, কিন্তু তা থেকে এই সব সংস্কারের গুরুত্ব বোঝা যাবে। এ দেশে বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট, রেল ইত্যাদি বিভিন্ন পরিকাঠামোয় বিরাট ঘাটতি আছে। এই ঘাটতি পূরণ করতে পারলে জি ডি পি আনুমানিক ১.৫ শতাংশ-বিন্দু বেশি হারে বাড়বে, অর্থাৎ এমনিতে যদি ৭ শতাংশ আয়বৃদ্ধি হয়, পরিকাঠামোর যথেষ্ট উন্নতি ঘটলে আয়বৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৮.৫ শতাংশ। শুধু যথেষ্ট বিদ্যুৎ সরবরাহের আয়োজন করতে পারলেই আয়বৃদ্ধির হার ১ শতাংশ-বিন্দু বাড়বে। দ্বিতীয়ত, যদি অসুস্থতা এবং মৃত্যুর হার যথেষ্ট কমানো যায়, কর্মক্ষম মানুষের কাজে যোগ দেওয়ার হার বাড়ানো যায় এবং কর্মীদের দক্ষতার মান উন্নত করা যায়, তা হলে আয়বৃদ্ধির হার আরও ১.৫ শতাংশ বাড়তে পারে। সরকারি পরিষেবা সরবরাহের ব্যবস্থায় উন্নতি ঘটালে আয়বৃদ্ধি ঘটবে আরও ১ শতাংশ বেশি। আর, আইন ব্যবস্থায় সংস্কার সাধনের ফলে পাওয়া যাবে বাড়তি ১ শতাংশ। ২০০৪ সালে ইউ পি এ সরকার আসার পর প্রায় আট বছর কেটে গেল, এখনও এই জরুরি সংস্কারগুলি ঘটল না। এই জমানায় ‘ইনক্লুসিভ গ্রোথ’, অর্থাৎ আয়বৃদ্ধির সুফল অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, সরকারি ব্যয় বেড়েছে, বিশেষ করে বেড়েছে ভর্তুকি, আর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্দেশ্যে আর্থিক নীতি কঠোর করা হয়েছে, অর্থাৎ প্রধানত সুদের হার বাড়ানো হয়েছে।
ভারতে যে মূল্যস্ফীতি দেখা গেছে, তার তিনটি প্রধান অঙ্গ: কৃষিপণ্যের মূল্যস্ফীতি ঘটেছে, শিল্পজাত পণ্যের দাম বেড়েছে এবং অন্য দেশ থেকে আমদানি করা কিছু পণ্যের, বিশেষ করে পেট্রোলিয়মজাত জ্বালানির দাম বেড়েছে। আর্থিক নীতির সাহায্যে, অর্থাৎ বাজারে ঋণের জোগান কমিয়ে কিংবা সুদের হার বাড়িয়ে এই ধরনের মূল্যস্ফীতির মোকাবিলায় খুব একটা সুবিধে হয় না। সাম্প্রতিক কালে মূল্যস্ফীতির হার অনেকটা নেমেছে প্রধানত দুটো কারণে।
প্রথমত, মূল্যস্ফীতির হিসেব ‘সময়সাপেক্ষ’, অর্থাৎ কোন সময়ের সঙ্গে কোন সময়ের মূল্যস্তরের তুলনা করা হচ্ছে, স্ফীতির হার তার উপর নির্ভর করে। মূল্যস্ফীতির যে হারগুলি আমরা দেখি, সেগুলি প্রায় সবই পাইকারি বাজারে একটা সময়ের মূল্যস্তরের সঙ্গে আর একটা সময়ের মূল্যস্তরের তুলনা, যেমন গত বছর মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিনের তুলনায় এ বছর মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিনের মূল্য সূচক কত শতাংশ বেড়েছে, সেটাই এই দুই সময়-বিন্দুর মধ্যে মূল্যস্ফীতি হিসেবে গণ্য হয়। একেই বলা হয় ‘পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট’ ইনফ্লেশন। এ বার, আগের বছরের যে সময়ের সঙ্গে এ বছরের মূল্য স্তর তুলনা করা হচ্ছে, তখন যদি বাজার দর খুব চড়া হয়ে থাকে, তা হলে মূল্যস্ফীতি তুলনায় কম দেখাবে। ২০১০-১১’র শেষের দিকে মূল্য স্তর খুব চড়া ছিল, তাই গত কয়েক মাসে (সেই তুলনায়) চলতি বছরে মূলস্ফীতির হার কিছুটা কম দেখাচ্ছে। জুন মাসের পর থেকে এই সুবিধেটা তুলনায় কম পাওয়া যাবে, তখন আপেক্ষিক ভাবে মূল্যস্ফীতির হার আবার বেশি দেখাবে। অবশ্যই মূল্যস্ফীতি অনেক কিছুর উপরেই নির্ভর করে, কিন্তু সময়সাপেক্ষতার ব্যাপারটা এ ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয়ত, ভোগ্যপণ্যের মূল্য সূচকের নতুন অঙ্কগুলি আগেকার অঙ্কের সঙ্গে করা মুশকিল, কারণ সেগুলি পরিমাপের পদ্ধতিটা পালটেছে।
আর একটা ব্যাপার বোঝা দরকার। সরকারি ব্যয়বাহুল্য মূল্যস্ফীতিতে বড় রকমের ইন্ধন জুগিয়েছে। এই ব্যয়বৃদ্ধি কিন্তু ২০০৮ সালের বিশ্ব আর্থিক বিপর্যয়কে সামাল দিতে গিয়েই শুরু হয়নি, সরকার ব্যয় বাড়িয়েছে সেই ২০০৪ থেকেই। সুতরাং, দেশে মূল্যস্ফীতির পিছনে রাজকোষ সংক্রান্ত নীতির একটা বড় ভূমিকা আছে। এবং রাজকোষের হাল ফেরানোর সব উদ্যোগে জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে। ২০১১-১২’র বাজেটে ধরা হয়েছিল, রাজকোষ ঘাটতি (ফিসকাল ডেফিসিট) হবে জি ডি পি’র ৪.৬ শতাংশ। বাস্তবে হতে চলেছে অনেক বেশি। সমস্যাটা নিছক রাজকোষ ঘাটতির মাত্রা বা অনুপাত নিয়ে নয়। আসল সমস্যা হল, এই ঘাটতি বাড়ছে সরকারি রাজস্ব খাতে ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়ে চলার ফলে, যে ব্যয় বিনিয়োগের মতো উৎপাদনশীল নয়। ঘাটতি কম দেখানোর জন্য কিছু কৌশলের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে, যেমন কিছু সরকারি সংস্থায় এক ধরনের লোকঠকানো বিলগ্নিকরণ সরকারের বাঁ হাত তার ডান হাতের কাছ থেকে শেয়ার কিনছে! এই চালাকি যদি গণ্য না করি, তা হলে ২০১১-১২’র সংশোধিত হিসেবে রাজকোষ ঘাটতি দাঁড়ানোর কথা জি ডি পি’র প্রায় ৫.৬ শতাংশ। মনে রাখা দরকার, এক সময় স্থির করা হয়েছিল, ২০১৪-১৫ সালে রাজকোষ ঘাটতি জি ডি পি’র ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। সেই লক্ষ্যে পৌঁছনো অসম্ভব। ২০১২-১৩’র বাজেটে হিসেবের নানা কেরামতি, আরও অনেক লোকদেখানো বিলগ্নিকরণ, স্পেকট্রাম বণ্টন থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব, খাদ্য নিরাপত্তা খাতে প্রথমে প্রয়োজনের তুলনায় কম বরাদ্দ দেখানো (পরে যা অতিরিক্ত বরাদ্দের পথে পরিপূরণ করা হবে) ইত্যাদি নানা কৌশল করেও রাজকোষ ঘাটতির অনুপাত ৪.৫ শতাংশে নামানো যাবে বলে আমার মনে হয় না। যদি এই অনুপাত ৫ শতাংশেও রাখা যায়, আমি তো বলব অর্থমন্ত্রী রাজকোষের কাঠামো সংস্কারের পথে আবার ফিরে আসতে পেরেছেন। এই সংস্কার এ বারের বাজেটের একটা বড় পরীক্ষা।
ঘাটতি হল সরকারের আয় (কর এবং অন্যান্য খাতে) এবং ব্যয়ের পরিণাম। ২০০৭-০৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের কর আদায় ছিল জি ডি পি’র ১২ শতাংশ। সেটা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশ। আয়বৃদ্ধির গতিভঙ্গ এর একটা কারণ। কিন্তু আরও বড় কারণ হল নানা ধরনের কর ছাড় এবং রেহাই। ছাড় এবং রেহাইয়ের ফলে কর আদায় কতটা কম হয়েছে, ২০০৬ সাল থেকে বাজেটে তার একটা হিসেব দেওয়া হয়। যদি সব ছাড় ও রেহাই বাতিল করা হয়, তা হলে সরকার জি ডি পি’র আরও প্রায় ৫.৫ শতাংশ বাড়তি রাজস্ব কোষাগারে তুলতে পারবে। আয়বৃদ্ধির হার বাড়ানোর জন্য এবং সেই বৃদ্ধির সুফল অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সরকারি ব্যয় বাড়ানো যদি জরুরি হয়, তবে ঘাটতি না বাড়িয়ে সেই ব্যয় সংস্থানের জন্য কর রেহাই এবং ছাড়ের ব্যবস্থাগুলি রদ করাই বিধেয়। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর সংস্কারের আদি কর্মসূচিতে এমনটাই ভাবা হয়েছিল। কিন্তু যে নতুন প্রত্যক্ষ কর বিধি (ডিরেক্ট ট্যাক্স কোড বা ডি টি সি) এবং পণ্য ও পরিষেবা কর (গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স বা জি এস টি) বলবৎ করার চেষ্টা চলছে, তাতে ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে অনেকটাই আপস করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী কর ছাড় এবং রেহাই রদ করার আদি লক্ষ্যের অভিমুখে কতটা এগোতে পারবেন, বাজেটে তারও একটা পরীক্ষা হবে।
সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে কয়েকটা খাতে খরচ কমানোর কোনও উপায় নেই। যেমন সুদ এবং ঋণ শোধ, বেতন, ভাতা ও পেনশন, কার্যত প্রতিরক্ষা ব্যয় এগুলি পূর্বনির্ধারিত, চট করে কমানো সম্ভব নয়। কিন্তু ভর্তুকি কমানো সম্ভব। সব ধরনের ভর্তুকি মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে জি ডি পি’র প্রায় ১৪ শতাংশ। এই টাকাটা অন্য খাতে খরচ করা যেত। যে সব খাতে কেন্দ্রীয় সরকার ভর্তুকি দেয়, তার মধ্যে প্রধান তিনটি হল সার, খাদ্য এবং পেট্রোলিয়মজাত পণ্য, বিশেষ করে শেষোক্ত দুটি। ভর্তুকির সংস্কার কতটা হয়, সেটা এই বাজেটের আর একটা পরীক্ষা।
ফিরে আসি আয়বৃদ্ধির গতিভঙ্গের প্রশ্নে। সরকারি ভোগব্যয় কমিয়ে বেসরকারি ভোগব্যয় এবং বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার। একটা ভয়ের ব্যাপার হল, ২০০৭-০৮ সালের তুলনায় বিনিয়োগের হার ৪ শতাংশ কমে গিয়েছে। এর একটা কারণ হল, সরকার খরচের জন্য অতিমাত্রায় টাকা তুলে নেওয়ার ফলে ঋণের বাজারে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা যথেষ্ট অর্থ পাচ্ছেন না অর্থনীতিতে এই সমস্যা ‘ক্রাউডিং আউট’ নামে পরিচিত। সরকারি সঞ্চয়ও কমেছে, ঘাটতি তথা ঋণ বেড়েছে। অনেকের ধারণা, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আর্থিক নীতি কিছুটা শিথিল করার ফলে এ বার বেসরকারি ভোগব্যয় ও বিনিয়োগ বাড়বে। এটা ঠিকই যে, আর্থিক নীতি শিথিল হলে অর্থাৎ সুদের হার কমলে বাড়ি, গাড়ি এবং রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন গোছের স্থায়ী ভোগ্যপণ্য কেনার মাত্রা বাড়ে, সুতরাং বেসরকারি ভোগব্যয় বাড়ে, কিন্তু বেসরকারি বিনিয়োগের গতিপ্রকৃতির বিশ্লেষণে সুদের হারকে সচরাচর যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়, আসলে বোধহয় তা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
শেষে একটা কথা। ইউ পি এ-র দ্বিতীয় দফায়, অর্থাৎ ২০০৯ থেকে আর্থিক সংস্কারের চাকা মাটিতে বসে গিয়েছে, এমন একটা সমালোচনা প্রবল। বাজেটের আগেও সেই সমালোচনা জোরদার হয়েছে। এখানে যে সব বিষয়ে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলি হল অরণ্য সংক্রান্ত আইন, পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র, জমি অধিগ্রহণ ও খনি সংক্রান্ত সমস্যা (পরিকাঠামোয় যেগুলি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ) এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমলাদের অক্ষমতা (এ জন্য তথ্য অধিকার আইনকে ভুল ভাবে দায়ী করা হচ্ছে)। এগুলি গুরুত্বপূর্ণ, সন্দেহ নেই। কিন্তু বাজেটের সঙ্গে এদের কী সম্পর্ক, জানি না। এ সবই বৃহত্তর সুশাসনের প্রশ্ন।
|
দিল্লিতে সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ-এ অর্থনীতিবিদ |