|
|
|
|
‘বনমানুষের হাড়’ বিক্রির চক্র, ধৃত ২ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে মিলল সাপ। কামাখ্যা মন্দির এলাকায় এক হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে অসম পুলিশ জানতে পারল, ‘বনমানুষের হাড়’ বিক্রির একটি চক্র রীতিমতো সক্রিয় অসম ও মেঘালয়ে। ‘বনমানুষ’ বলতে বড় বাঁদর বা কখনও খোদ মানুষের হাড়ও বেচে দেওয়া হচ্ছে। আর কুসংস্কারগ্রস্ত মানুষজন তা-ই কিনে নিচ্ছে চড়া দামে। মেঘালয়ে খালি সম্প্রদায়ের মধ্যে তন্ত্রসাধনার চল রয়েছে। সেখানে ওই কাজে বিপুল চাহিদা ‘বনমানুষের হাড়’-এর। আর এই চাহিদার সুযোগ নিয়েই কিছু লোক ফেঁদে বসেছে হাড় পাচারের কারবার। এই কারবারে লেনদেন হচ্ছে কোটি টাকারও বেশি।
কী ভাবে জানা গেল এই কারবারের কথা? কামরূপ মেট্রোর এসএসপি অপূর্বজীবন বরুয়া জানান, কামাখ্যা মন্দিরে যাওয়ার রাস্তায় ২ মার্চ পড়ে থাকতে দেখা যায় ধড়হীন একটি মুণ্ড। মুণ্ডের কাছেই রাখা ছিল মন্ত্র লেখা কিছু কাগজ। এ সব দেখে পুলিশ গোড়ায় ভেবেছিল, তন্ত্রসাধনায় বা তুকতাকে বিশ্বাসী কোনও দলের কাজ এটি। কিন্তু গড়চুক থেকে দিন কয়েক পরে ধড় উদ্ধার ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারে উদ্ঘাটিত হল তথাকথিত ‘বনমানুষের হাড়’ নিয়ে ব্যবসার কথা।
যার কাটা মুণ্ড পাওয়া যায়, সেই ব্যক্তির নাম মুজিবর রহমান। পুলিশ জানতে পারে, খুন হওয়া মুজিবর আদতে ‘বনমানুষের হাড়’ বিক্রি চক্রেরই অন্যতম সদস্য। ওই চক্রেরই তিনজন টাকা-পয়সা নিয়ে বিরোধের জেরে খুন করে মুজিবরকে। পুলিশ ও মানুষজনকে বিভ্রান্ত করতে কাটা মুণ্ডটি ফেলে রাখা হয় কামাখ্যা মন্দিরের রাস্তায়। মুজিবর হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে দীনেশ্বর দেউড়ি ও সিরেন বড়ো নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাকিমুদ্দিন নামে অপর অভিযুক্ত এখনও পলাতক।
জেরায় দীনেশ্বর ও সিরেন কবুল করেছে, অসম থেকে ‘বনমানুষের হাড়’ রফতানির কাজ করে একটি চক্র। মেঘালয়ের খাসিদের মধ্যে ‘বনমানুষের হাড়ের’ দারুণ চাহিদা। মুজিবর সম্প্রতি একটি খাসি দলের সঙ্গে যোগাযোগ করে বনমানুষের হাড় সরবরাহের বরাত নেয়। ঠিক হয়েছিল, মোট দেড় কোটি টাকায় হাড় বিক্রি করা হবে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু টাকা মুজিবর অগ্রিমও নেয়। কিন্তু হাড় যোগাড় করতে পারেনি সে। দলের অন্যদের সঙ্গে টাকা নিয়ে বিবাদের জেরেই তাকে হত্যা করা হয়েছিল। মাথা ও ধড়টি ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। খাসি দলটির সন্ধানে মেঘালয় পুলিশের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। |
|
|
|
|
|