উত্তপ্ত অসম বিধানসভা
জমি বিতর্কে মেঘালয়ের দাবি খারিজ করল গগৈ সরকার
মেঘালয়-অসম জমি বিতর্কে রাজনীতি-নির্বিশেষে জোটবদ্ধ অসম বিধানসভা। অসমের মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে মেঘালয়ের বিধায়কের ‘বাড়ি ভাড়া’ চাওয়ার ঘটনাকে ঘিরে আজ বিধানসভায় সরব হলেন বিরোধীরা।
খানাপাড়া এলাকার কয়নাধারা পাহাড়ের মাথায় অসম সরকারের ১ নম্বর অতিথিশালা এখন ‘মুখ্যমন্ত্রী নিবাস’। গতমাসে মেঘালয়ের রাজস্বমন্ত্রী রোয়ত্রে সি লালু দাবি করেন, গগৈয়ের ওই আবাস মেঘালয়ের রি-ভয় জেলার অন্তর্গত, নেঘালয়ের এক্তিয়ারভুক্ত। গত কাল মেঘালয় বিধানসভায় শাসক জোটের বিধায়ক, পল লিংডো বিষয়টি নিয়ে এক দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাব এনে দাবি করেন, “হয় গগৈ জমি খালি করে অন্যত্র চলে যান, না হলে, মেঘালয় সরকারকে ভাড়া দিন।” আজ অসম বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে বিরোধীরা এই বিষয়ে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চান। বিজেপি বিধায়ক প্রশান্ত ফুকনের মতে, “পড়শি রাজ্যের বিধায়ক এই ভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করছেন, অথচ রাজ্য সরকার কোনও জবাব দিচ্ছে না! এটা গোটা রাজ্যের অপমান।” অগপ বিধায়ক পদ্ম হাজরিকার মতে, “মেঘালয় দিনের পর দিন অসমের জমিকে নিজের বলে দাবি করছে। এখন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নিবাস নিয়েই টানাটানি চলছে। এরপর সচিবালয়ের জমিও দাবি করতে পারে ওরা। অথচ অসম সরকার প্রামাণ্য নথি-সহ কেন মেঘালয়ের দাবিকে নস্যাৎ করে দিতে পারছে না?” রাজ্য সরকারের তরফে বনমন্ত্রী রকিবুল হুসেন বলেন, “কেউ দাবি করলেই রাজ্যের জমি কাড়া যায় না। মেঘালয়ের বিধায়কের কথার গুরুত্ব দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।” তবে সরকারের বক্তব্যে খুশি না হয়ে এআইইউডিএফ, অগপ, বিজেপির বিধায়করা ওয়াক আউট করেন।
পরে সরকার বিধানসভায় একটি বিবৃতি পেশ করে। বিবৃতি অনুযায়ী: “প্রতিবেশী রাজ্যের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই সীমা বিবাদ রয়েছে। সাংবিধানিক পরিসীমা সম্পর্কিত সরকারি বিভিন্ন নথি ও নির্দেশের ভিত্তিতে সেই বিবাদ নিষ্পত্তি করতে সরকার বদ্ধ পরিকর। প্রতিবেশি রাজ্যগুলির জমি দখল করার কোনও লালসা অসম সরকারের নেই। কিন্তু নিজের সাংবধানিক এলাকার মধ্যে থাকা জমি রক্ষা করতেও আমরা সংকল্পবদ্ধ।”
অসম-মেঘালয়ের মধ্যে ২৭০০ বর্গ কিলোমিটার বিতর্কিত এলাকা নিয়ে ১২ দফা সীমানা বিতর্কের স্থায়ী সমাধানের জন্য গতবছর ১৬ মার্চ মেঘালয় বিধানসভা, সর্বসম্মতভাবে একটি সীমানা কমিশন গড়ার প্রস্তাব নেয়। কিন্তু অসম বিধানসভা মেঘালয়ের সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। আজ অসম সরকার জানিয়েছে: অসম সীমানা কমিশনের পক্ষপাতী নয়। সংবিধান অনুযায়ী যা সিদ্ধান্ত হওয়ার সেটাই মেনে নেওয়া উচিত।
এ দিকে, মেঘালয় সীমাবর্তী ডিমোরিয়ার ১৪টি গ্রামের বাসিন্দারা একযোগে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা মেঘালয়ের অন্তর্ভূক্ত হবেন। এই এলাকায় মূলত আমরি-কার্বি জনগোষ্ঠীর বাস। তারা গত কাল এক মিলিত জনসভা করে। চোদ্দটি গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, এত বছরেও অসম সরকার তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য-সহ ন্যূনতম পরিষেবাগুলি দিয়ে উঠতে পারেনি। সেখানে কোনও পাকা সড়ক নেই। কলেজ নেই। হাসপাতাল নেই। নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। তাই সকলে একযোগে মেঘালয় সরকারের শরণাপন্ন হয়েছে। তাদের বক্তব্য, “আর অসমে থাকব না, আমরা মেঘালয়ের অন্তর্ভুক্ত হতে চাই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.