|
|
|
|
কংগ্রেসকে কোণঠাসা করতে বিজেপির অস্ত্র তিন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার পর সংসদের অধিবেশন গড়াতেই পদে পদে কংগ্রেসকে নাস্তানাবুদ করতে উঠেপড়ে লাগল বিজেপি।
কংগ্রেসকে একঘরে করার জন্য বিজেপি নেতৃত্ব এমন বিষয়কে চিহ্নিত করছেন, যেখানে সরকারের শরিক-সমর্থক-সহ অ-কংগ্রেসি দলগুলিকে পাশে পাওয়া যাবে বলে তাঁরা মনে করছেন। আপাতত তিনটি বিষয়কে তারা চিহ্নিত করেছে। প্রথমটি দুর্নীতি। যে বিষয়ে সব দলই সমান মনোভাব পোষণ করে। দ্বিতীয়টি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত, জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্রের বিষয়ে রাজ্যের অধিকার খর্ব করার প্রচেষ্টার অভিযোগ। তৃতীয় বিষয়টি হল আম-আদমির উপরে আর্থিক বোঝা চাপার সম্ভাবনা। বাজেটে অর্থমন্ত্রী কী ঘোষণা করবেন, তা এখনও কারও জানা নেই।
কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে বাজেটে বাড়তি বোঝা চাপানো ছাড়া সরকারের আর কোনও গতি নেই। সে ক্ষেত্রে সব অ-কংগ্রেসি দলকে নিয়ে ছাঁটাই প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। সন্ত্রাস ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাতের বিষয়েও ভোটাভুটির প্রস্তুতি নিচ্ছে দল। যাতে সরকারকে ভোটে হারানো যায় এবং তাতে সরকার না পড়লেও তার মুখ পোড়ে। রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি বলেন, “নানান বিষয়ে কংগ্রেসকে ধারাবাহিক আক্রমণ করা হবে। যে বিষয়গুলিতে সব দলকে পাশে পাওয়া যাবে, সকলের সঙ্গে আলোচনা করে যৌথ আক্রমণ করা হবে।”
অরুণ জেটলি-সুষমা স্বরাজরা মনে করছেন, তৃণমূল বা ডিএমকের মতো সরকারের শরিক দলগুলির পক্ষেও এই সব বিষয়ে কেন্দ্রকে সমর্থন করা সম্ভব নয়। আজ লোকসভায় তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্রের কড়া বিরোধিতা করেন। তৃণমূলের তরফে এ ব্যাপারে সংশোধনীও পেশ করা হয়েছে।
বিজেডি, এডিএমকেও একই পথ ধরেছে। সুষমা স্বরাজ থেকে রাজনাথ সিংহের মতো বিজেপি নেতারাও আজ থেকেই সংসদে সরব হতে শুরু করেছেন। তবে কংগ্রেস তাদের বিরুদ্ধে এই সম্মিলিত আক্রমণকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করছে। দলের এক নেতা বলেন, এর আগেও রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় সংশোধনী দেওয়া হয়েছে। ফলে এর মধ্যে অভিনবত্ব কিছু নেই। এবং সাধারণ ভাবে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার উপর ধন্যবাদসূচক প্রস্তাব নিয়ে বিতর্কে ভোটাভুটি করার রীতি নেই।
সংসদের গত অধিবেশনে লোকপাল বিল বিতর্কে রাজ্যসভায় বিরোধী এবং সরকারের শরিক দলগুলি এককাট্টা হয়ে যাওয়ায় কেন্দ্র পিছু হঠেছিল। মধ্যরাতে আচমকা সংসদ মুলতুবি করে দেওয়া হয়। আজ লোকপাল বিলের বিষয়টি ফের রাজ্যসভায় উত্থাপন করতে চেয়েছিলেন জেটলি।
কিন্তু দিনভর শ্রীলঙ্কার বিষয়ে ডিএমকে এবং এডিএমকে সরব হওয়ায় সেই সুযোগ পাননি রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা। জেটলি বলেন, “উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি যে ধারায় গত অধিবেশন মুলতুবি করেছেন, তাতেই বলা হয়েছে যে নির্দিষ্ট সময়ের পরে সেই শেষ-না-হওয়া আলোচনা আবার শুরু করতে হবে।
সে দিন আনসারি তা বলেননি। যদি তিনি ভুলবশতও তা না বলে থাকেন, তা-ও এই অধিবেশনে লোকপাল এবং দুর্নীতির বিষয়ে ফের আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন। আগামি কাল সুযোগ পেলেই এই বিষয়ে সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাব আমি।” বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করার জন্য আগামিকাল পঞ্জাবে বাদল সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যাওয়ার কর্মসূচিও বাতিল করছেন জেটলি। |
|
|
|
|
|