সুলতান-বিমানকে এক মঞ্চে আনছেন অখিলেশ
তাঁকে নিয়ে দড়ি টানাটানি। আবার তিনিই মেলালেন।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে যে দৃশ্য বিরল, তারই সাক্ষী হতে চলেছে লখনউ। অখিলেশ যাদবের আমন্ত্রণে তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এক সঙ্গে হাজির হতে চলেছেন সিপিএমের প্রকাশ কারাট ও বিমান বসু, সিপিআইয়ের এ বি বর্ধন ও তৃণমূল নেতা সুলতান আহমেদ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে না গেলেও সুলতানকে পাঠাচ্ছেন। আজ অখিলেশের আমন্ত্রণে কারাট ও বর্ধন লখনউ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কলকাতা থেকে যাচ্ছেন বিমান বসুও।
উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে সমাজবাদী পার্টির উত্থান জাতীয় রাজনীতিতে নতুন এক তৃতীয় ফ্রন্টের জল্পনা উসকে দিয়েছে। কেন্দ্রে অবশ্যই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিউনিস্ট নেতারাও তাই পিছিয়ে থাকতে চাইছেন না।
মুলায়ম-অখিলেশের সঙ্গে সাক্ষাৎ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটের। ছবি: পিটিআই
তাঁরাও মুলায়মের সঙ্গে ‘পুরনো সম্পর্ক’ ঝালিয়ে নিতে মাঠে নেমেছেন। মমতা নিজে উত্তরপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকার কথা ভেবেছিলেন। পরে নিজে না গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুলতানকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। কাল গুরুদাস দাশগুপ্তর সঙ্গে অখিলেশ সংসদ থেকেই সিপিআই দফতরে পৌঁছে যান। সেখানেই তাঁদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে আনুষ্ঠানিক ভাবে আমন্ত্রণ জানান তিনি। আজ সকালে মুলায়ম-অখিলেশ যান সিপিএমের সদর দফতর এ কে গোপালন ভবনে। প্রকাশ কারাট ফুলের স্তবক দিয়ে সপা-নেতাদের অভিনন্দন জানান। হাজির ছিলেন পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাটও। সিপিএম নেতাদেরও লখনউয়ে আসার আমন্ত্রণ জানান তিনি। এর পরেই দুই কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে লখনউ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কারাট বলেন, “ওঁরা আমাদের আমন্ত্রণ জানান। আমরা সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছি।” আজ কলকাতায় বিমানবাবু জানান, মুলায়ম সিংহ যাদব তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফোন করেছিলেন। উত্তরপ্রদেশের রাজভবন থেকে তাঁকে ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। বুদ্ধবাবু যেতে পারছেন না। কিন্তু মুলায়মের আবেদনে সাড়া দিয়ে বিমানবাবু লখনউ যাচ্ছেন।
কারাট-বর্ধনের এই লখনউ-যাত্রা নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে তথা দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। তৃতীয় ফ্রন্টের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক থাকার চেষ্টায় সিপিএম-সিপিআই নেতৃত্ব সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে হাত মেলাতে চাইছে কি না, সে প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। পরমাণু চুক্তিতে সমর্থন প্রত্যাহারের পর প্রথম ইউপিএ-সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল সিপিএম। আস্থাভোটে মুলায়ম ও তাঁর দলবল কংগ্রেসের পক্ষে ভোট দিয়ে সরকারের পতন রুখে দেন। তার পরে লোকসভা নির্বাচনে কারাট-বর্ধন মুলায়মের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মায়াবতীকে সামনে রেখে তৃতীয় ফ্রন্ট খাড়া করেন। ভোটে সেই ফ্রন্টের ভরাডুবির পরে দলের মধ্যে ভুল স্বীকারও করতে হয়েছে কারাটকে। সিপিএমের দলিলেই বলা হয়েছে, বামেদের তরফে যে তৃতীয় বিকল্প খাড়া করার চেষ্টা হয়েছিল, তা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি।
এখন আবার ডিগবাজি খেয়ে সপা-র সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টাকে কী ভাবে ব্যাখ্যা করা হবে? সিপিএমের এক পলিটব্যুরো নেতার সহাস্য জবাব, “মানুষ তো পরে, সাধারণ সম্পাদক আগে তো দলের সামনে এর ব্যাখ্যা দিন!” সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির যুক্তি, এর মধ্যে ‘রাজনৈতিক সমীকরণ’ খুঁজতে যাওয়া ভুল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে সিপিএমের সম্পর্ক বহু পুরনো ও ঐতিহ্যপূর্ণ। নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়নি। আমরা খুশি যে ওঁরা আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করতে পেরেও আমরা খুশি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.