|
|
|
|
বয়কট তুলে নিয়ে চিদম্বরমকে নিশানা বিজেপির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
মাঝে মাস চারেকের ব্যবধান। বয়কট তুলে নেওয়ার পরে আজ ফের সুষমা স্বরাজদের আক্রমণের নিশানায় পি চিদম্বরম।
গত শীতকালীন অধিবেশনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন এনডিএ নেতৃত্ব। বিজেপি নেতৃত্বের যুক্তি ছিল, টু-জি দুর্নীতিতে অভিযোগ ওঠার পরে যত দিন না তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন বা প্রধানমন্ত্রী তাঁকে অপসারণ করছেন, তত দিন চিদম্বরমকে বয়কট করা হবে। কিন্তু এ বারে সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে এনডিএ নেতারা বয়কট তুলে নিয়ে তার বদলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাতের মতো বিষয়গুলি নিয়ে প্রশ্ন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কোণঠাসা করার কৌশল নেন।
সেই সূত্র ধরে গত কাল রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার পর আজ সংসদ শুরু হতেই চিদম্বরমকে জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র (এনসিটিসি)-র প্রসঙ্গে একহাত নিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ। সুষমা বলেন, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, গুজরাত, ত্রিপুরা, বিহার, হিমাচলপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড ও কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী একযোগে বিরোধিতা করা সত্ত্বেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি জিইয়ে রেখেছেন। এখানেই না থেমে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবকেও শাস্তি দেওয়ার দাবি তোলেন সুষমা। সংবাদমাধ্যমের খবর উল্লেখ করে সুষমা অভিযোগ করেন, সচিবদের বৈঠকে রাজ্যগুলির আমলাদের ‘মুখ্যমন্ত্রীর স্টেনোগ্রাফার’ না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব। জবাবে চিদম্বরম অবশ্য বলেন, স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আজ সকালেও তাঁর কথা হয়েছে। এমন কোনও মন্তব্য তিনি করেননি বলে জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, অধিকাংশ রাজ্য সরকারই এনসিটিসি-র প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে। বিজেপির বক্তব্য, কৌশলগত কারণেই মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক না ডেকে আমলাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন চিদম্বরম। কারণ, তিনি জানেন আমলারা রাজনৈতিক বিরোধিতা করবেন না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচিত ছিল মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করা। চিদম্বরমের উপরে চাপ বাড়াতে লোকসভায় আজ এই প্রসঙ্গটি ফের উত্থাপন করেন রাজনাথ সিংহ। রাজ্যসভাতেও বিষয়টি তুলে চিদম্বরমকে কোণঠাসা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলের নেতারা। এনডিএ-র বাইরে থাকা তৃণমূলের মতো দলগুলিও এনসিটিসি-র বিরোধিতা করায় সকলের সঙ্গে সমন্বয় করেই চিদম্বরমকে একঘরে করার নতুন কৌশল নিচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
তবে কৌশল বদলানো ছাড়া উপায়ও ছিল না বিজেপির। গত অধিবেশনে পরিস্থিতি অন্য ছিল। সদ্য এনডিএ-তে সামিল হওয়া সুব্রহ্ম্যণম স্বামী তখন টু-জি মামলা নিয়ে চিদম্বরমের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছিলেন। বিজেপি নেতৃত্ব ভেবেছিলেন, আইনি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক ভাবে চিদম্বরম ও মনমোহন সরকারের উপরে চাপ দিয়ে ফায়দা তোলা যাবে। কারণ, এর আগে পর্যম্ত কংগ্রেসের শরিক দলের নেতারাই মূলত দুর্নীতির মামলায় জেলে গিয়েছেন। সেই অবস্থায় কংগ্রেসের এক জন শীর্ষ স্তরের মন্ত্রীরও সেই পরিণতি হলে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদের নিশানায় চলে আসতেন। কিন্তু আদালত চিদম্বরমকে রেহাই দিয়েছে। বিজেপির সেই কৌশলও তাই ভেস্তে গিয়েছে। সে কারণে একরকম বাধ্য হয়েই চিদম্বরমকে বয়কটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হয়েছে বিজেপিকে। |
|
|
|
|
|