দলের সব বিধায়ক গেলেন না শপথে
প্রথম দিনেই সঙ্কটে উত্তরাখণ্ডের কংগ্রেস সরকার
পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল প্রকাশের পর দিনই ২৪ আকবর রোডের উঠোনে দাঁড়িয়ে সনিয়া গাঁধী বলেছিলেন, “উত্তরাখণ্ডে আমরাই সরকার গড়ব। সংখ্যাগরিষ্ঠ দল যখন হয়েছে কংগ্রেস তখন সেই দাবি তো সঙ্গতই!” কংগ্রেস সভানেত্রীর সেই প্রত্যয় সরকার গঠনের তোড়জোড়ে দলকে মনোবল জুগিয়েছিল। যদিও আজ উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের দিন সকালেই দলে বিদ্রোহ শুরু হয়ে গেল।
মুখ্যমন্ত্রী পদে বিজয় বহুগুণাকে মনোনীত করেছিল হাইকম্যান্ড। সেই সিদ্ধান্তে অনাস্থা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদের অন্যতম দাবিদার তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরিশ রাওয়াত মনমোহন মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফাই দিতে চাইলেন না, এই হুমকিও দেন যে তিনি কংগ্রেস ভেঙে আলাদা দল গড়তে পারেন। জাতীয় রাজনীতিতে চাপে থাকা কংগ্রেস আরও অস্বস্তিতে পড়ে যায়।
দিনভর বোঝানোর পরে হরিশ সুর নরম করলেও সেটা যে সাময়িক নয় সেই নিশ্চয়তা কোথায়? ফলে দিনের শেষে কংগ্রেস পরিস্থিতি মোটামুটি সামলে নিয়েছে বলে মনে হলেও উত্তরাখণ্ডে তাদের সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিল প্রথম দিন থেকেই। কংগ্রেসে এই বিদ্রোহকে ‘সনিয়ার কর্তৃত্বে আঘাত’ আখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে নেমে পড়ছে বিজেপি। কংগ্রেসের থেকে মাত্র এক জন বিধায়ক কম রয়েছে তাদের। ফলে ভবিষ্যতে সরকারে যাওয়ার আশাও তৈরি হচ্ছে বিজেপিতে। কারণ, বিজয় বহুগুণা আজ মাহেন্দ্রক্ষণ দেখে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেও সেই অনুষ্ঠানে কংগ্রেসের ৩২ জন বিধায়কের মধ্যে গরহাজির ছিলেন ১৫ জন।
ক্ষুব্ধ হরিশ বাড়িতেই। মুখ্যমন্ত্রী হিজয় বহুগুণা।
কংগ্রেস সাধারণত ভোটের আগে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরে না প্রচারে। কিন্তু উত্তরাখণ্ডে এ বারের প্রচার থেকে শুরু করে গোটা ভোট পর্বেই এমন একটা ধারণাই ফুটে উঠছিল যে, জিতলে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন কেন্দ্রীয় কৃষি ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হরিশই রাওয়াতই। প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তিনি এবং গত ত্রিশ বছর ধরে সংসদীয় রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। কিন্তু ভোটের পর যখন সরকার গঠনের তৎপরতা শুরু করল হাইকম্যান্ড, তখন থেকেই ছবিটা একটু একটু করে বদলাতে শুরু করে। মুখ্যমন্ত্রী পদে একাধিক দাবিদারের নাম উঠে আসে। শেষ পর্যন্ত লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে বিজেপিকে মোকাবিলা করতে ব্রাহ্মণ নেতা বিজয় বহুগুণাকে মুখ্যমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নেন কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
কাল দশ নম্বর জনপথ থেকে সেই ঘোষণার পর থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেন হরিশ রাওয়াতের ঘনিষ্ঠ বিধায়করা। হরিশের বক্তব্য, তাঁর অনুগামীদেরই দাবি ছিল, “এই অপমান আর সহ্য করার মানে নেই”। তাই তিনি মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছেন। হরিশ শিবিরের দাবি, কাল রাতে বিজেপি সভাপতি গডকড়ীর সঙ্গেও কথা বলেছেন এই ক্ষত্রিয় নেতা। বিজেপি সূত্র থেকেও সে কথা জানানো হচ্ছে।
তবে এই সঙ্কটের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি আজ বলেন, “রাজনীতিতে কখনও কখনও সাময়িক ভাবে হতাশ হতে হয়। দেখা যায় পরে তারও সুদিন আসে। হরিশ রাওয়াত কংগ্রেসের দীর্ঘ দিনের নেতা। দল তাঁর আবেগ ও হতাশা অনুভব করতে পারছে।” আজ সকাল থেকেই হরিশকে বোঝাতে নেমে পড়েন কংগ্রেস শীর্ষ নেতারা। প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি কোনও ইস্তফাপত্র পাননি। কংগ্রেস সূত্রে এ-ও বলা হয় যে, হরিশকে কেন্দ্রে পূর্ণমন্ত্রী করা হতে পারে। হরিশ কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত দমেননি। তাঁর অনুগামীরা কেউই বিজয় বহুগুণার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যাননি। তা দেখে হরিশ বলেন, “আমার সঙ্গে যে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে তা এখন স্পষ্ট।” বাস্তবে সংখ্যার হিসেব দলে গরিষ্ঠ না হলেও হরিশ অনুগামীরা সংখ্যায় কমও নয়। এতেই আশা বাড়ছে বিজেপির। সরকার গড়তে দরকার ৩৬ জন বিধায়ক। কংগ্রেসের আছে ৩২। বিজেপির ৩১। কংগ্রেস সরকার গড়েছে ৩ জন নির্দল ও আঞ্চলিক দল ইউকেডি-র এক বিধায়কের সমর্থন নিয়ে। বিএসপি-র ৩ বিধায়কও কংগ্রেস সরকারকে সমর্থনের কথা জানিয়েছে। তবে, হরিশ অনুগামীদের নিয়ে শিবির বদলালে সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে।

ছবি: পিটিআই


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.