বছর কয়েক আগেও পার্কের ধুলোয় এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠতেন। বর্ষায় পার্কের কাদা আশপাশের রাস্তায় চলে আসত। ঢুকে যেত বাড়ির ভিতরেও। এখন উত্তর কলকাতার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সেই সুভাষ উদ্যানের (শ্যাম পার্ক) খেলার মাঠ অংশের সংস্কার শুরু হয়েছে। অভিযোগ, তাতে বাদ সেধেছে সিপিএমের একটি অফিস। টিনের চালের ওই অফিসটি পার্কের রেলিং ভেদ করে ভিতরে চলে এসেছে বেশ কয়েক ফুট। অভিযোগ, ফুটপাথ থেকে পার্কে বসার বেঞ্চ তৈরিতে তা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বহু পুরনো এই পার্কে এক সময়ে মোহনবাগান ক্লাবের ফুটবলারেরা অনুশীলন করতেন। টেনিস বলে বহু নামী ক্রিকেট টুর্নামেন্টও হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, বিগত বেশ কিছু বছর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পার্কটির অবস্থা করুণ হয়ে যায়। তার মধ্যে আবার পার্কে ঢুকে পড়ে সিপিএমের বস্তি ফেডারেশনের একটি অফিস। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পার্কটি ধীরে ধীরে খেলার অযোগ্য হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা অলক পাত্র বলেন, “ঝড় উঠলে পার্কের ধুলো আমাদের খাবারে পড়ত। বর্ষাকালে পার্কের কাদা সংলগ্ন রামকান্ত বসু স্ট্রিটে চলে আসত। মাঝেমধ্যে বাড়ির ভিতরেও ঢুকে যেত।” |
বর্তমান পুরসভা এই পার্কটি সংস্কারে হাত দিয়েছে। নতুন করে মাটি ফেলা হচ্ছে। স্থানীয় কাউন্সিলর পার্থ মিত্র বলেন, “মাটি ফেলে ঘাস পোঁতা হবে। তৈরি হবে বসার ছাউনিও। প্রাতর্ভ্রমণকারীদের জন্য হবে রেলিং লাগোয়া একটি বড় জগিং পাথ। কিন্তু সিপিএমের অফিসটি ভিতরে চলে আসায় জগিং পাথটি ছোট করতে হচ্ছে। ফুটপাথ তৈরিতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। উত্তর কলকাতার বরো অফিসের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছি। মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারকেও জানানো হয়েছে।”
যে অফিস নিয়ে অভিযোগ, সেটি রীতিমতো সাইন বোর্ড-সহ রয়েছে রামকান্ত বসু স্ট্রিটে। বোর্ডে লেখা আছে অফিসের নাম, ঠিকানা। পাশে দলীয় পতাকা। ওই রাস্তা দিয়ে যেমন অফিসে ঢোকা যায়, তেমনই পার্কের ভিতর দিয়েও ঢোকা যায়। দুপুরে পার্টি অফিসটি বন্ধ থাকলেও বিকেলে জমে ওঠে বলে জানালেন স্থানীয়েরা। পার্থবাবুর অভিযোগ, বছর ৮-১০ আগে বাম পুরসভার তৎকালীন কাউন্সিলর কল্যাণী মিত্রের সময়ে পার্ক ভেদ করে বেআইনি ভাবে ওই অফিস তৈরি হয়। যদিও কল্যাণীদেবীর দাবি, “বেআইনি ভাবে পার্কের জায়গা নিয়ে ওই অফিস হয়নি। তদন্তেই পুরো বিষয় পরিষ্কার হবে।”
মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “ওই পার্কের সংস্কার চলছে। তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সিপিএমের ওই অফিস। পার্কে এ ভাবে অফিস তৈরি বেআইনি। অবৈধ কিছুর বিরুদ্ধে যা ব্যবস্থা নেওয়া হয়, এ ক্ষেত্রেও তা-ই হবে।” |