বিশরপাড়া-কাণ্ডে ধৃত ৩
আইন সত্ত্বেও দায় এড়াল কেন থানা, ব্যাখ্যা অমিল
ইনে পরিষ্কার বলা রয়েছে, মানুষ বিপদে পড়ে যে কোনও থানায় সাহায্য চাইতে যেতে পারেন। ঘটনাস্থল ওই থানার আওতায় না-পড়লেও তাঁকে ফেরানোর অধিকার পুলিশের নেই। কিন্তু আইনের সেই বিধান পুলিশকর্মীরা সব সময়ে মেনে চলছেন কি?
চলছেন যে না, বিশরপাড়ায় কনস্টেবল খুনের ঘটনার পরে তা ফের সামনে এল। গত বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ দোলের দুপুরে উত্তর ২৪ পরগনার বিশরপাড়া নবজীবন কলোনির বাড়িতে মদ্যপ এক দল যুবকের হামলায় গুরুতর জখম হন কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল অসীম দাম। ভাগ্নির শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় দুষ্কৃতীরা তাঁকে বেধড়ক পেটায়-কোপায় বলে অভিযোগ। পরিজনেরা প্রথমে নালিশ জানাতে ছুটেছিলেন ‘বাড়ির কাছে’ নিমতা থানায়। কিন্তু অভিযোগ, ঘটনাটি তাদের ‘এলাকার নয়’ বলে নিমতা থানার পুলিশ ওঁদের ‘বার করে’ দেয়। পরে অসীমবাবুর আত্মীয়রা যান বিমানবন্দর থানায়। অভিযোগ, সেখান থেকেও তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
অসীমবাবুর আত্মীয়-বন্ধুদের দাবি, শেষে পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার স্থানীয় ক্লাবের ছেলেদের ‘চাপে পড়ে’ অভিযোগ নেয় এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ। ইতিমধ্যে রবিবার কলকাতার এক হাসপাতালে অসীমবাবু মারা যান। আর ঘটনার ছ’দিনের মাথায় তিন অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও বাকিরা এখনও অধরা।
এয়ারপোর্ট থানায় ধৃত দুই অভিযুক্ত। ছবি: দেবাশিস রায়।
অথচ পুলিশ-কর্তারা পরিষ্কার জানাচ্ছেন, ভারতীয় ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি) মোতাবেক, যে কোনও ব্যক্তি নিজের সুবিধাজনক থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। ঘটনাস্থল অন্য থানার আওতায় পড়লে সেখানে অভিযোগটি পৌঁছে দেওয়া প্রথম থানারই ‘কর্তব্য।’ তাই প্রশ্ন উঠেছে, এ ক্ষেত্রে থানার বিরুদ্ধে নিয়মবিরুদ্ধ আচরণের অভিযোগ কেন? উপরন্তু স্থানীয় মানুষের প্রশ্ন, অভিযোগ নিতে টালবাহানা করে পুলিশ কেন অধিকাংশ অভিযুক্তকে গা-ঢাকা দেওয়ার সুযোগ করে দিল?
পুলিশ-কর্তারা কী বলছেন?
বস্তুত এ ক্ষেত্রেও দায়িত্ব ও এলাকা ‘বিভাজন’ দেখিয়ে উত্তর দেওয়ার দায় কার্যত অন্যের উপরে চাপাচ্ছেন তাঁরা। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (বিমানবন্দর) তরুণ হালদারের যুক্তি, “নিমতা থানা তো ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের অধীনে! এ ব্যাপারে আমরা কিছু বলতে পারব না। ওরা পারবে।”
অন্য দিকে ব্যারাকপুরের কমিশনার সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ওই পরিবারের প্রতি আমাদের সহানুভুতি রয়েছে। থানার বিরুদ্ধে আমাদের কাছে অভিযোগ এলেই তদন্ত করব।”
এ দিকে মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছে, অসীমবাবুর বাড়িতে হামলায় মূল অভিযুক্ত অভিজিৎ ঘোষ ধরা পড়েছে। দেবু মুখোপাধ্যায় ও তপন চন্দ নামে আরও দুই অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বিশরপাড়া-কোদালিয়া স্টেশনের কাছে। আপাতত তাদের বিমানবন্দর থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা করা হচ্ছে। আজ, বুধবার তিন জনকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হবে। কিন্তু অন্য অভিযুক্তদের কী হল? তরুণবাবু বলেন, “বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ-সূত্রের খবর: জমিজমা নিয়ে অভিজিতের সঙ্গে অসীমবাবুর ভাই শেখর দামের বিবাদের জেরেই ঘটনাটির সূত্রপাত বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি: অভিযুক্তেরা জেরায় জানিয়েছে, তাদের হত্যা বা শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্য ছিল না। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, হামলা, খুন-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। কোনও আগ্নেয়াস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.