গাড়ি তৈরির লগ্নি আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গে আসবে কি না, তা বলবে সময়ই। তবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ রাজ্য থেকে গাড়ি শিল্পের জন্য দক্ষ কর্মী তুলে আনতে চায় ভলভো-আইশার। এই লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের আধুনিক পরিকাঠামো গড়তে এমসিকেভি ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হাত ধরছে তারা। পূর্বাঞ্চলে এই প্রথম।
সিঙ্গুরে প্রস্তাবিত প্রকল্পের সময় এই কলেজে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়তে চেয়েছিল টাটা মোটরসও। এ বার এক কোটি টাকা লগ্নি করে সেখানে প্রশিক্ষণ-পরিকাঠামো গড়ছে ভলভো-আইশার। যেখানে পড়ুয়ারা ট্রাক ও বাসের আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সড়গড় হওয়ার প্রশিক্ষণ পাবেন। সংস্থার অন্যতম কর্তা এ নন্দকুমার বলেন, “প্রতিষ্ঠানটি পূর্বাঞ্চলের প্রথম অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠ্যক্রমের কলেজ। এখানে ক্যাম্পাস ইন্টারভিউয়ে আসি। তাই ওদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছি।” সম্প্রতি এ নিয়ে চুক্তি করেছে দু’পক্ষ। এ মাসেই কেন্দ্রটি চালু হওয়ার কথা।
নন্দকুমারের দাবি, পূর্বাঞ্চলে গাড়ির বাজার বাড়ছে। বিপুল সংখ্যক কর্মী প্রয়োজন ডিলার-শোরুম, সার্ভিস সেন্টার ও বিমা সংস্থায়। কারখানার কর্মীদের মতো তাঁদেরও প্রশিক্ষণ জরুরি।
এক দিকে দক্ষ কর্মীর অভাব। অন্য দিকে আধুনিক ও পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তির সঙ্গে সড়গড় হতে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ঘাটতি। এই দুই সমস্যা মেটাতেই নিজেদের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মী তুলে আনতে এগিয়ে আসছে টাটা মোটরস, টয়োটা কির্লোস্কার মোটর বা ভলভো-আইশারের মতো বিভিন্ন সংস্থা। নন্দকুমারের কথায়, ‘‘এখন অধিকাংশ গাড়ির ব্রেক কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু বেশির ভাগ গবেষণাগারে পুরানো আমলের ইঞ্জিন দেখানো হয়। যে সব প্রযুক্তির অধিকাংশই এখন অচল।” এমসিকেভি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ পরাশর বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এ ধরনের পরিকাঠামো তৈরির সামর্থ কলেজের থাকে না। শিল্পমহল এগিয়ে এল বলেই সম্ভব হল।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্পের এই মেলবন্ধন যে একান্ত জরুরি, তা মানছেন জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান ভাস্কর গুপ্ত এবং বেসু-র উপাচার্য অজয় রায়ও। ভাস্করবাবুর বক্তব্য, শিল্পকে সার্বিক উন্নয়নের অংশীদার হতে হবে। আর অজয়বাবুর মতে, প্রশিক্ষণে শিল্প সামিল হলে পাঠ্যক্রম ও বাস্তবের চাহিদার ফারাক এতে অনেকটাই মুছে যায়।
গুজরাত, কর্ণাটক ও চণ্ডীগড়ে আগেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জোট বেঁধেছে ভলভো-আইশার। তাদের ‘আইশার টেকনিক্যাল ট্রেনিং প্রোগ্রাম’-এও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন গাড়ি শিল্পের পেশাদাররা। এ ধরনের প্রশিক্ষিত কর্মী পেলে সংস্থাও লাভবান হয় বলে নন্দকুমারের দাবি। |