গ্রাহক-স্বার্থেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ে টেলিফোন বা মোবাইল নম্বর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে জানালেন মেদিনীপুরের বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষ। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যাঙ্ক নিখরচায় মোবাইল-ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দেয়। কোন গ্রাহকের কত টাকা জমা পড়ল, তিনি কত টাকা তুললেন, কোনও চেক ভাঙানোর পর তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ল কি না--তা এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। বাড়িতে বসেই সেই বার্তা পেয়ে যান গ্রাহক। সব সময়ে ব্যাঙ্কে আসতে হয় না। যে কারণেই অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ে মোবাইল বা ফোন নম্বর নেওয়া হচ্ছে বলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি।
মেদিনীপুরের এই বেসরকারি ব্যাঙ্কটি টেলিফোন বা মোবাইল নম্বর ছাড়া অ্যাকাউন্ট খুলছে না বলে অভিযোগ ওঠে। তাতে চাষিরা সমস্যায় পড়ছেন বলেও অভিযোগ। এমনিতেই পশ্চিম মেদিনীপুরে সহায়কমূল্যে ধান কেনা চলছিল ধীর গতিতে। বাধ্য হয়েই চাষিদের কম দামে ধান বিক্রি করে দিতে হচ্ছিল খোলাবাজারে। এই অবস্থায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চাষিদের আত্মহত্যার খবর ছড়িয়ে পড়তে জেলায় জেলায় ধান কেনার গতি বাড়াতে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই ধান কেনার পর্বেই নতুন সমস্যায় পড়েন চাষিরা। বিপাকের হেতু ব্যাঙ্ক-অ্যাকাউন্ট। অ্যাকাউন্ট খুলতে টেলিফোন বা মোবাইল নম্বর বাধ্যতামূলক করে বেসরকারি ব্যাঙ্কটি। কিন্তু নিজস্ব ফোন নম্বর না থাকায় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেনি অনেক চাষি। চেক পেয়েও তাই ভাঙাতে পারছেন না। অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের সিনিয়র ম্যানেজার স্বরূপ গঙ্গোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, “গ্রাহক-স্বার্থেই ফোন নম্বর জরুরি। গ্রাহককে মোবাইলেই এসএমএসে জানিয়ে দেওয়া হয় অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত নানা তথ্য। এ জন্য খরচও লাগে না। ফলে প্রতি মুহূর্তেই গ্রাহক তাঁর অ্যাকাউন্ট সম্বন্ধে সজাগ থাকতে পারেন।” শুধু তাই নয়, কোনও ক্ষেত্রে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হলেও ফোন নম্বর জরুরি। যেহেতু ধান কেনার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ গ্রাহকই গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দা, চিঠি পাঠালেও দেরি হতে পারে। ফোন নম্বর থাকলে জরুরি তথ্য তৎক্ষণাৎ গ্রাহক জানতে পারেন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেও অবশ্য অ্যাকাউন্ট খুলতে এখন ফোন নম্বর চাওয়া হচ্ছে। এক ব্যাঙ্ক আধিকারিক বলেন, “পরিষেবায় স্বচ্ছতার খাতিরেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশে গ্রাহকের ফোন নম্বর রাখা হচ্ছে।” কিন্তু যাঁদের ফোন নেই, তাঁদের কি তা হলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টই থাকবে না? ব্যাঙ্কের মানেজারেরা জানিয়েছেন, যত মানুষের ফোন নম্বর সংগ্রহ করা যায়, তা করা হয়। যাঁদের নিতান্তই ফোন নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে অন্যান্য নথি নিয়েই অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়। |