|
নয়া প্রকল্প এপ্রিলেই |
সাপের কামড়ে মৃত্যু এড়াতে প্রচার, প্রশিক্ষণ
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
রাজ্যে ফি-বছর বহু মানুষকে সাপে কামড়ায় এবং তাঁদের একটা বড় অংশ মারাও যান। সচেতনতার অভাবই এই মৃত্যুর একটা বড় কারণ বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। এই পরিস্থিতিতে সাপের কামড়ের চিকিৎসার ব্যাপারে চিকিৎসক এবং সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য ৩০ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে এপ্রিলে ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে।
সরকারি হিসেব বলছে, প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গে অন্তত ২০ হাজার মানুষকে সাপে কামড়ায়। তাঁদের মধ্যে ২৭৫-৩০০ জনের মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, সাপে কামড়ালে কী করতে হবে, সেই বিষয়ে বেশির ভাগ মানুষই সচেতন নন। এমনকী চিকিৎসকদের একটি অংশও জানেন না, সাপে কামড়ালে কী ভাবে চিকিৎসা করতে হবে; কাকে কতটা ‘অ্যান্টি-ভেনাম সিরাম’ দিতে হবে বা কখন রোগীকে ‘রেফার’ করতে হবে। সাধারণ মানুষ না-হয় ততটা সচেতন নন। কিন্তু চিকিৎসকেরা সর্পদংশনের যথাযথ চিকিৎসার পদ্ধতি জানবেন না কেন? স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, এমবিবিএস পাঠ্যক্রমে সাপের কামড়ের চিকিৎসা সম্পর্কে বিশেষ পড়ানো হয় না। সেই জন্যই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, একাধিক সরকারি চিকিৎসক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ওই দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছিলেন। অবশেষে এই ব্যাপারে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। কী ভাবে কাজ হবে ওই প্রকল্পে? স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাস বলেন, “কাজ হবে দু’ভাবে। প্রথমে তিন জেলায় ব্লকে ব্লকে সাপে কামড়ানোর চিকিৎসা সম্পর্কে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আর দ্বিতীয় ব্যবস্থাটি হল, সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য স্থানীয় স্তরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির সাহায্য নেওয়া হবে। এর জন্য তাদের অর্থসাহায্যও দেবে স্বাস্থ্য দফতর।” তবে এই খাতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে একটা টাকাও নেওয়া হচ্ছে না বলে জানান ওই স্বাস্থ্যকর্তা।
শুক্রবার কলকাতার প্রেস ক্লাবে দেশের সাপ সংক্রান্ত মানচিত্র প্রকাশ করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এ ব্যাপারে ওই সংস্থাকে সাহায্য করেছেন সরীসৃপবিদ রমুলাস হুইটকেয়ার। মানচিত্রটির নাম ‘কমন স্নেক অফ ইন্ডিয়া, এ গাইড ম্যাপ’। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, ওই মানচিত্র থেকে বিষধর ও নির্বিষ সাপের কামড়ের পার্থক্য এবং সাপের কামড়ের চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে পারবেন সাধারণ মানুষ।
|
কী করবেন |
রোগীর আত্মীয়দের করণীয় |
চিকিৎসকের দায়িত্ব |
• রোগীকে শুইয়ে রাখা।
হাত-পা নাড়তে বারণ করা। |
• স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে
এভিএস মজুত রাখা। |
• দিতে হবে হাল্কা বাঁধন। |
• এভিএস না দিয়ে রোগীকে রেফার নয়। |
• রোগীকে মানসিক জোর দেওয়া। |
• প্রথমেই স্যালাইন চালানো, টিটেনাস দেওয়া। |
• ওঝা নয়, যেতে হবে স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে। |
• রোগীকে মানসিক জোর দেওয়া। |
|