|
|
|
|
পরিবহণের হাল ফেরাতে ‘তামিল-দাওয়াই’ খুঁজছে রাজ্য |
অশোক সেনগুপ্ত • কলকাতা |
রাজ্যের সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করতে জয়ললিতার পথে হাঁটতে চায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, এ রাজ্যের পরিবহণ নিগমের সমস্যা কাটাতে এপ্রিল মাসের গোড়ায় তামিলনাড়ু যাচ্ছে সরকারি অফিসারদের একটি দল। ওই রাজ্যের পরিবহণ নিগম থেকে টিপস নিয়ে এসে এ রাজ্যের পরিবহণ নিগমগুলির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হবে।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, মাস কয়েক আগে আগে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এনবিএসটিসি) এমডি হয়েছেন সি মুরুগান। তিনিই কর্তৃপক্ষকে তালিমনাডুর পরিবহণের হাল-হকিকৎ সম্পর্কে জানান। পরিবহণ দফতরের এক পদস্থ অফিসার বলেন, “তামিলনাড়ুর ইতিবাচক দিকগুলি এ রাজ্যের নানা নিগমে রূপায়িত করা হবে।” এনবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “আমাদের এমডি ওখানকার একজন অভিজ্ঞ পরিবহণ-অফিসারকে এখানে নিয়ে এসে সবিস্তার কথা বলেছেন। সরেজমিনে সব দেখতে মাসখানেকের মধ্যে আমাদের ইঞ্জিনিয়ার-অফিসাররা তামিলনাডুতে যাবে।” তাঁর প্রশ্ন, তামিলনাড়ু যদি সরকারি বাস চালিয়ে লাভ করতে পারে, তা হলে পশ্চিমবঙ্গ পারবে না কেন?
পরিবহণ নিগমের কর্তারা জানিয়েছেন, অর্থাভাবে পরিবহণ নিগমের বাস সারাই করা যাচ্ছে না। কমছে টিকিট-বিক্রির আয়। তার উপরে প্রায় তিন মাস ধরে নতুন বাস কেনার কেন্দ্রের বরাদ্দ প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যাঙ্কে পড়ে আছে। নিগমের এক পদস্থ অফিসার বলেন, “আমাদের ১২টি বাস কেনার কথা। পুরনো দরে, বাসপিছু বরাদ্দ হয় ১৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা করে। কিন্তু বাস কিনতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে এক-একটার দাম পড়ছে ২২ লক্ষ টাকা।” এই অবস্থায় কর্তৃপক্ষ মহাকরণের মাধ্যমে দিল্লিতে বাড়তি টাকার আর্জি জানিয়েছেন।
পরিবহণ কর্তারা বলছেন, এই সমস্যার সমাধানেও আশার আলো দেখাচ্ছে তামিলনাডু। নিগমের চেয়ারম্যান বলেন, “ওই রাজ্যের নির্ভরযোগ্য বাস-নির্মাতারা কম খরচে বাস তৈরি করে দিচ্ছেন। ওঁদের সামিল করতে আমরা ফের টেন্ডার ডাকব।”
সম্প্রতি রাজ্য সরকার জানিয়েছে, নিগমগুলির নিজেদের খরচের সংস্থান করতে হবে নিজেদের আয়ে। সেই কথা মাথায় রেখে আর্থিক দুরবস্থা কাটাতে পরিবহণ নিগমগুলি অবশ্য ইতিমধ্যেই কয়েকটি ব্যবস্থা নিয়েছে। যেমন, এসবিএসটিসি ইতিমধ্যে তাদের বেশ কিছু বাস বিভিন্ন সংস্থাকে ভাড়া দিয়েছে। তাদের এই ব্যবস্থা নিয়ে বৈঠক করেছেন এনবিএসটিসি-র কর্তারাও।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, বিভিন্ন পরিবহণ নিগম ডিপো-র ফাঁকা জায়গায় হোর্ডিং এবং টিকিটের পিছনে-বাসের গায়ে বিজ্ঞাপন, দেওয়ার জন্য টেন্ডার ডাকছে। এসবিএসটিসি-র এক অফিসার বলেন, “দিঘা, শিলিগুড়ি, বেলঘরিয়া প্রভৃতি নানা স্থানে আমাদের ফাঁকা জায়গায় হোটেল বা বাণিজ্যিক প্রকল্প করতে অনেকে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। পরিচালকমন্ডলীর সাম্প্রতিক বৈঠকে বাসের বাইরে পিছনের দিকে এবং ভিতরে সামনের দিকে ইলেকট্রনিক বোর্ড বসিয়ে তাতে বিজ্ঞাপন নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ওই অফিসার জানান, বেসরকারি আবেদনকারীদের বিভিন্ন রুটে বাস চালানোর অনুমতি দিয়ে গত কয়েক বছরে এক কোটি টাকার উপর আয় করেছে এসবিএসটিসি। এই পথ দেখে নিগমের কয়েকটি ভবন ব্যাঙ্ক বা বাণিজ্যিক সংস্থাকে ভাড়া দিয়ে আয়বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন এনবিএসটিসি কর্তৃপক্ষ। |
|
|
|
|
|