|
|
|
|
ধর্মঘটে গরহাজিরায় বেতনে কোপ স্কুল-কলেজেও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, “ধর্মঘটের দিন কর্মক্ষেত্রে আসার এবং না-আসার অধিকার মানুষের আছে।”
সরকারি কলেজ শিক্ষকদের এক অনুষ্ঠানে তাঁর এই মত প্রকাশের পাঁচ দিন পরে, শুক্রবার তাঁর অধীন দফতরের দুই সচিবই জানিয়ে দিলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারির ধর্মঘটে অনুপস্থিত স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের এক দিনের বেতন কাটবে রাজ্য সরকার। তবে তার আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শিক্ষক বা শিক্ষিকার কাছে ওই দিনের গরহাজিরার কারণ জানতে চাওয়া হবে। কোন কোন ক্ষেত্রে ছুটি মঞ্জুর হবে, বিজ্ঞপ্তি জারি করে আগেই তা জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
মন্ত্রী ও সরকারের এই দু’রকম অবস্থানের মধ্যেই কয়েকটি শিক্ষক সংগঠন হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ওই ধর্মঘটের দিন অনুপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন কাটলে তারাও ‘উপযুক্ত’ ব্যবস্থা নেবে। কোনও কোনও শিক্ষক সংগঠন একটি এগিয়ে বলেছে, এটা ‘কালা সার্কুলার’।
গরহাজিরায় ব্যবস্থার ব্যাপারে শিক্ষাসচিবেরা ঠিক কী জানিয়েছেন? স্কুলশিক্ষা সচিব বিক্রম সেন শুক্রবার সাংবাদিকদের পরিষ্কার জানিয়ে দেন, “শুধু সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রেই যে বেতন কাটার সরকারি নির্দেশ কার্যকর হবে, তা নয়। সরকার অনুমোদিত স্কুলগুলিতে যে-হেতু সরকারি কোষাগার থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন দেওয়া হয়, তাই তাঁদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম খাটবে।” পরে উচ্চশিক্ষা সচিব সতীশ তিওয়ারিও জানান, সরকারি-বেসরকারি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়েও একই নির্দেশ কার্যকর হবে। বিক্রমবাবু জানান, ধর্মঘটের দিন গরহাজির কর্মীদের বেতন কাটার ব্যাপারে অর্থ দফতর আগেই নির্দেশিকা জারি করেছে। সেই নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছেও। তাঁরা বিভিন্ন স্কুল থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের নামের তালিকা নেবেন। তার পরে সেগুলি পাঠিয়ে দেবেন স্কুলশিক্ষা অধিকর্তার দফতরে।
স্কুল ও কলেজের শিক্ষক সমিতিগুলির অনেকেই এই ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রীর পাশে। ওয়েবকুটা-র সম্পাদক তরুণ পাত্র, সরকারি স্কুল শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিষ্ণু রায় মন্ত্রীর মত সমর্থন করে বলেছেন, অন্যদের মতো শিক্ষকদেরও ধর্মঘট করা বা না-করার অধিকার আছে। তরুণবাবুর বক্তব্য, বেসরকারি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সরকারি কর্মী নন। তাই তাঁদের উপরে এই ধরনের নির্দেশিকা চাপিয়ে দেওয়ার অধিকারই নেই সরকারের। এর পরেও সরকার যদি বেতন কাটে, তা হলে তাঁরাও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওয়েবকুটা-র সম্পাদক। এবিটিএ-র সম্পাদক উৎপল রায় বলেন, “আমরা তো সচিবকে নোটিস দিয়েই ধর্মঘট ডেকেছি।” মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বেতন কাটার সরকারি নির্দেশিককে ‘কালা সার্কুলার’ বলে অভিহিত করেছেন।
প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নীহারেন্দু চৌধুরীর মতে, রাজ্যে বন্ধের রাজনীতি বন্ধ করা দরকার। তার জন্য রাজ্য সরকার যে-ব্যবস্থা নিয়েছে, তাতে সমিতির পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। |
|
|
|
|
|