মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ
বাজেট নিয়ে উদ্যোগী কংগ্রেস-বাম
চলাবস্থা কাটাতে অবশেষে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদে বাজেট প্রস্তাব পাশ করাতে উদ্যোগী হয়েছে সিপিএম-কংগ্রেস। দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতা সূত্র মতো কংগ্রেসের প্রস্তাব মেনে ১৩ মার্চ, মঙ্গলবার ২০১২-১৩ অর্থ বছরের জন্য বাজেট পাশ করাতে সভা ডেকেছে বামফ্রন্ট নিয়ন্ত্রিত জেলা পরিষদ। বুধবার জেলার কংগ্রেস ও সিপিএম নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা হয়। তারপরেই ঠিক হয় জেলার উন্নয়নের স্বার্থেই এই দুই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বাজেট পাশ করাতে উদ্যোগী হবে। বামফ্রন্টের দাবি, কংগ্রেস বাজেট পাশ করানোর জন্য তাঁদের সমর্থন করবে। কংগ্রেস সেই দাবি স্বীকার করে নিয়েছে।
জেলা পরিষদে মোট আসন ৬৩। বামফ্রন্ট ৩১টি আসন পেয়ে ক্ষমতায় রয়েছে। কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ২৮। ৪টি আসন শূন্য। কিন্তু বামফ্রন্ট জেলা পরিষদে ক্ষমতায় থাকলেও বার্ষিক বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করাতে পারেনি। কারণ, এই প্রস্তাব পাশ করাতে হয় সাধারণ সভা ডেকে। এবং সাধারণ সভায় বিধায়ক, সাংসদ ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাধিপতিদেরও ভোটাধিকার রয়েছে। তাই সাধারণ সভার মোট ভোটার ১০৯ জন। তার মধ্যে কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ৫৮। বামেদের ৫১। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় ২০১১-১২ আর্থিক বছরে বাজেট প্রস্তাব পাশই করাতে পারেনি ক্ষমতাসীন বামফ্রন্ট।

পূর্ণিমা দাস,

হুমায়ুন কবীর,
তাই গত এক বছর ধরে জেলা পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম এক রকম বন্ধ। জেলা পরিষদের বাজেট প্রস্তাব পাশ না হওয়ায় মুর্শিদাবাদের নবাগত জেলাশাসকও লিখিত ভাবে জেলা পরিষদকে জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও রকম আর্থিক লেনদেন করতে তিনি রাজি নন। এরপরেই বুধবার কংগ্রেস ও সিপিএম নেতারা পরস্পরের সঙ্গে কথা বলেন। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ সিংহ রায় বলেন, “জেলা পরিষদে অচলাবস্থা কাটাতে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। জেলার উন্নয়নের স্বার্থে দু’টি দলের নেতারাই বাজেট পাশ করানোর ব্যাপারে এক মত হয়েছেন। ১৪ মার্চ বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিতে কংগ্রেস বিধায়কেরা কলকাতা যাবেন। তাই হুমায়ুন কবীরের প্রস্তাব মেনেই ১৩ মার্চ মঙ্গলবার বাজেট সভা ডাকা হয়েছে।” এই ব্যাপারে নোটিসও জারি করা হয়ে গিয়েছে।
এখনকার পরিস্থিতিতে বাজেট সভায় প্রস্তাব পাশ করানোর জন্য ৫৫ জনের সমর্থন দরকার। তাই কংগ্রেসের সমর্থন ছাড়া বাজেট পাশ করানো যাবে না। বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য, “সোমনাথবাবু বাজেট পাশ করানোর ব্যাপারে আমাদের সমর্থন চেয়েছেন। সেই মতো কথাবার্তার পরে ১৩ মার্চ আমরা বাজেট সভা ডাকতে বলেছি।” তিনি জানান, বামফ্রন্ট নিয়ন্ত্রিত জেলা পরিষদ ২০১১-১২ আর্থিক বছরের বাজেট পেশ করাতে পারেনি বলে জেলার সমস্ত উন্নয়ন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এতে ক্ষতি হচ্ছে জেলার।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি সিপিএমের পূর্ণিমা দাস বলেন, “দু’টি দলই যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জেলা পরিষদের অচলাবস্থা কাটাতে উদ্যোগী হয়েছে, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। কংগ্রেসের সমর্থন ছাড়া বাজেট পাশ করানো যাবে না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধী দলের সঙ্গে সহযোগিতা রেখেই কাজ করা উচিত। তাই কংগ্রেসের সঙ্গে কথা বলেই ২০১২-১৩ সালের আর্থিক বছরের বাজেট পেশ করা করা হবে ওই দিন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “মুর্শিদাবাদ এমনিতেই পিছিয়ে পড়া জেলা। সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কাজিয়ায় জেলা পরিষদ কার্যত অচল। সব উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ থমকে রয়েছে। সেই জন্যই দু’টি দলের নেতাদের মধ্যে আলোচনা করে বাজেট সভার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।” জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা বাণী ইস্রাইলের কথায়, “আশা করব জেলার উন্নয়নের সব ক্ষেত্রেই সিপিএম এ বার থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করবে। আমরা চাই এক তরফা দলতন্ত্র বন্ধ করে দু’টি দলের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ হোক। সেই জন্যই কংগ্রেস বাজেট সভায় সমর্থন করবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.