দক্ষিণ কলকাতা
নজরুল মঞ্চ
বদলে যাবে চেহারা
বীন্দ্র সরোবরের মধ্যে অবস্থিত নজরুল মঞ্চ ঢেলে সাজার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। এই মুক্ত মঞ্চটির সংস্কার করে আধুনিকমানের একটি প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ করা হবে।
রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “রবীন্দ্র সরোবরের এই মুক্ত মঞ্চটিকে সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই মঞ্চটির আমূল সংস্কার করে আধুনিকমানের একটি প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ করা হবে। এ জন্য রাজ্য সরকারের খরচ হবে প্রায় চার কোটি টাকা।”
কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র (কেএমডিএ) মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক বিবেক ভরদ্বাজও বলেন, “সম্প্রতি আধিকারিকেরা নজরুল মঞ্চ পরিদর্শন করেছেন। এই প্রকল্প কী ভাবে হবে তার পরিকল্পনা চলছে। এর পর দরপত্র করা হবে। প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণে বিশেষজ্ঞদেরও সাহায্য নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। কেএমডিএ-র এই পরিকল্পনা পাওয়ার পর কলকাতা উন্নয়ন সংস্থা (কেআইটি) এই প্রকল্প রূপায়িত করবে।”
১৯৮৬ সালে রবীন্দ্র সরোবরে এই মুক্ত মঞ্চ তৈরি করা হয়। নানা রকমের অনুষ্ঠানের জন্য কেআইটি বিভিন্ন সংগঠনকে এই মুক্ত মঞ্চ ভাড়া দিয়ে থাকে। ১৯৯০ সালে মুক্ত মঞ্চটি ঘেরা হয়। কিন্তু তার পরেও মঞ্চটি রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা ছিল। এখানকার বসার জায়গা, শৌচাগারের অবস্থা খুবই খারাপ। নানা অভিযোগ পাওয়ার পরে এই মঞ্চ নতুন করে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই নজরুল মঞ্চের ভেতরের রাস্তা সারানোর পাশাপাশি অন্যান্য কাজও শুরু হয়েছে।
এই মুক্ত মঞ্চকে নতুন করে গড়ে তুলতে হলে বৈদ্যুতিন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে প্রেক্ষাগৃহের আসন, শীতাতপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র স্থাপন, শৌচাগারের সংস্কার, মঞ্চের নতুন সাজসজ্জা সব কিছুই নতুন করে করতে হবে। বর্তমানে এই মুক্তমঞ্চটি প্রায় দুই একর জায়গা জুড়ে রয়েছে। এই মঞ্চটির আসন সংখ্যা তিন হাজার।
রবীন্দ্র সরোবর সংস্কারের সঙ্গেই নজরুল মঞ্চও সংস্কার করলে এলাকার সর্বাঙ্গীন সৌন্দর্য আরও বাড়বে বলে আধিকারিকদের বক্তব্য।
পাশাপাশি, সমগ্র রবীন্দ্র সরোবরে সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে এখানে দুই লক্ষ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে বাগান তৈরির কাজ চলছে। সমগ্র রবীন্দ্র সরোবর জুড়ে নিরাপত্তারক্ষীও নিয়োগ করা হয়েছে। রবীন্দ্র সরোবরের মধ্যে যে ৪৭ হাজার বর্গমিটার রাস্তা রয়েছে সেখানেও বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। রবীন্দ্র সরোবরের বাকি কাজের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করে কেন্দ্রীয় সরকারকে জমা দেওয়া হবে।
অন্য দিকে, সরোবরের জলের মান উন্নত করা এবং আনুষঙ্গিক কিছু কাজের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় ছয় কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। সেই অর্থে সরোবরের পাড় বাঁধানো ছাড়াও পদ্মপুকুর নির্মাণ এবং রাস্তার একাংশে পিচ দেওয়া হয়েছে। তবে সেই সময়ে জলের মান পরীক্ষা করে দেখা যায়, সরোবরের জলের মান ঠিকই আছে। ফলে, সেই টাকা খরচ করা যায়নি। কেআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জলের পরীক্ষা এবং প্রয়োজনে তার মানোন্নয়নের জন্য দেড় কোটি টাকা এখনও খরচ করা হয়নি। এই প্রসঙ্গে বিবেক ভরদ্বাজ বলেন, “এই টাকা অন্য কোনও খাতে খরচ করা যাবে না। সরোবর সংস্কারে সব থেকে বেশি প্রয়োজন পলি সংস্কারের। সেই প্রকল্প রূপায়ণের ব্যাপারে চেষ্টা করছি।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.