|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর |
আমতলা |
দুর্ভোগের মোড়ে |
দেবাশিস দাস |
পাইপ ফেটে রাস্তার একাংশ জলমগ্ন। আর এক অংশে চলছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। ফলে বারুইপুর-আমতলা রোডের উপর আমতলা মোড়টি কার্যত অগম্য হয়ে উঠেছে বলে বাসিন্দা এবং পথচারীদের অভিযোগ। এক দিকে বারুইপুর-আমতলা রোড, অন্য দিকে ডায়মন্ড হারবার রোড এই আমতলা মোড়ে মিশেছে। দুই রাস্তার এই মোড় দিয়েই আলিপুর, ডায়মন্ড হারবার, নামখানার সঙ্গে বারুইপুর, জয়নগর, ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, ঝড়খালি-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত এলাকার যোগাযোগ রক্ষা করছে।
অথচ, এই সংযোগস্থল এবং বারুইপুর-আমতলা রোডের কিছু অংশের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। সম্প্রতি পূর্ত দফতরের আলিপুর ডিভিশন এই মোড় থেকে বারুইপুর-আমতলা রোডের ২০০ মিটার অংশ কংক্রিট করার কাজ শুরু করেছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়ের এক দিক দিয়েই দু’দিকের যানবাহনের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, এর মধ্যেই ভূগর্ভস্থ পরিশোধিত জলের পাইপলাইন ফেটে গিয়ে আমতলা মোড়ের কাছে এই রাস্তার বেশ কিছুটা অংশ জল-কাদায় ভরে গিয়েছে।
|
|
বাসিন্দা ও পথচারীদের অভিযোগ, রাস্তার দু’ধার দোকানপাটে এমন ভাবে দখল হয়ে রয়েছে যে চলাচলের কোনও উপায় নেই। তাঁদের কথায়: ভূগর্ভস্থ জলের পাইপলাইন ফুটো হয়ে আমতলা মোড়ে মাঝেমধ্যেই এই ধরনের বিপত্তি হয়। রাস্তার দু’ধারের ঢাকা নর্দমাও নিয়মিত পরিষ্কার হয় না বলে বাসিন্দারা অভিযোগ করেন। এলাকার পরেশ মাইতি বলেন, ‘‘নর্দমা পরিষ্কার করে লাভ নেই। কারণ জল সরার কোনও পথ নেই।’’ পূর্ত দফতরের বাস্তুকারদের কথায়: দীর্ঘ কাল পরিষ্কার না হওয়ায় নর্দমা দিয়ে জল বেরনোর কোনও পথ নেই। বেশির ভাগ জায়গায় কংক্রিটের স্ল্যাব দিয়ে নর্দমা ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ফলে, বহু জায়গায় নর্দমা পরিষ্কার করা যাচ্ছে না। বর্ষায় নর্দমার জল উপচে আসে রাস্তায়। |
|
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আর্থিক অভাবের জন্য তাপ্পি মেরেই বারুইপুর-আমতলা রোডের রক্ষণাবেক্ষণ চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। তবে রাস্তা সংস্কারের বিষয়টি পূর্ত দফতরের বিবেচনার মধ্যে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বারুইপুর-আমতলা রোডের দু’ধারে অনেক স্কুল রয়েছে। তাই এলাকার পড়ুয়াদেরও নিয়মিত বিপজ্জনক ভাবে স্কুলে যাতায়াত করতে হয় বলে বাসিন্দারা জানান। পূর্ত দফতর সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, চলতি মার্চ মাসের মধ্যেই আমতলা মোড়ের কাজ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু পূর্ত দফতরের কাজ শেষ হলেও বারুইপুর-আমতলা মোড়টি এতই সঙ্কীর্ণ যে তাতে সমস্যার কোনও সুরাহা হওয়া খুব কঠিন বলেই এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা মনে করেন। তাঁদের কথায়: দখলদারি সরিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়টিকে সম্প্রসারিত না করলে দুর্ভোগের অবসান হবে না। রাস্তার দু’ধারের নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কারের ব্যবস্থা না করলে এবং ভূগর্ভস্থ জলের পাইপ ঠিকমতো মেরামতি না করলে রাস্তায় জল দাঁড়ানোর সমস্যাও মিটবে না। এ ছাড়া, এই মোড়ে গাড়ি পার্কিংয়ের একটি বিকল্প ব্যবস্থা করা না হলে মিটবে না যানজটের সমস্যাও। |
|
পূর্ত দফতরের আলিপুর ডিভিশনের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সৌমিত্র সেন বলেন, ‘‘২০০ মিটারের মধ্যে ৬৭ মিটারের কাজ আমরা সেরে ফেলেছি। কিন্তু জায়গার অভাবে বাকি কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।” জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তরুণ দাসের কথায়: ‘‘আমি কয়েক দিন হল এই বিভাগের দায়িত্ব নিয়েছি। বিষয়টি সর্ম্পকে খোঁজ নেব।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি শমিমা শেখ বলেন, “আমতলা মোড়ের সমস্যা নিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট বাস্তুকারদের সঙ্গে কথা বলেছি। মানুষের যাতে অসুবিধা না হয় তার জন্য তাঁদের ভাগে ভাগে কাজ শেষ করতে অনুরোধ করেছি।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|