খুশিতে বাঁচুন
সুস্থ রাখুন কাঁধ
কাঁধের ব্যথায় অনেকেই ভোগেন। বিশেষ করে পুরুষরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর কারণ ‘মিরর মাস্ল সিনড্রোম’। এতে যে সব মাংসপেশি সামনে থেকে দেখা যায় সেগুলিরই বেশি ব্যবহার হয়। একই সঙ্গে পিছনের অনেক মাংসপেশির ব্যবহার কমে যায়। ফলে মাংসপেশির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে কাঁধে ব্যথা শুরু হয়।
জিমে আবার শরীরের উপরের অংশের মাংসপেশির চর্চার জন্য ‘পুশ’-জাতীয় ব্যায়াম করানো হয়। কিন্তু তা কাঁধের ব্যথা কমানোর জন্য যথেষ্ট নয়। তাই পুশের পাশাপাশি ‘পুল’-জাতীয় ব্যায়ামও করতে হবে। তবে আগে দেখে নিন আপনার কাঁধের মাংসপেশির ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে কি না? নিজেই সহজ একটি পরীক্ষা করতে পারেন।

প্রন রোস (পিঠের উপরের অংশ)

রিভার্স ফ্লাইস (পিছনের ত্রিকোণ পেশি, পিঠের উপরের অংশ)
এক্সটার্নাল অ্যান্ড ইন্টার্নাল রোটেশন অন বেঞ্চ

পেন্সিল টেস্ট

দুই হাতের মুঠোয় পেন্সিল বা কলম নিন। এ বার হাত দু’টি সোজা করে ঝুলিয়ে দিন। হাতের মুঠো যাতে শক্ত না হয়। এ বার দেখুন দু’হাতের পেন্সিল কি সোজা বাইরের দিকে মুখ করে আছে? যদি থাকে তবে কাঁধের মাংসপেশির ভারসাম্য বজায় আছে। যদিও দু’হাতের পেন্সিল কিছুটা ভিতরে দিকে বেঁকে থাকে তবে কাঁধের মাংসপেশি ভারসাম্য কিছুটা নষ্ট হয়েছে। পেন্সিল যদি একে অপরের দিকে মুখ করে থাকে তবে ভারসাম্যে যথেষ্ট সমস্যা রয়েছে। কাঁধের ব্যথা শুরু হতে পারে। যদি আপনি ওজন তোলা বা কাঁধের মাংসপেশি বেশি ব্যবহৃত হয় এমন কাজ করেন তবে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
কাঁধের মাংসপেশির ভারসাম্য ঠিক থাকলে দু’হাত ঝুলিয়ে দিলে তালু পরস্পরের দিকে মুখ করে থাকার কথা। কিন্তু, বুকের মাংসপেশির অত্যাধিক ব্যবহার এবং বসার ভুল অভ্যাসের জন্য হাতের উপরের অংশ কিছুটা ভিতরের দিকে ঢুকে যায়। ফলে কাঁধ সামনের দিকে ঝুঁকে যায়। কাঁধ বাইরের দিকে ও ভিতরের দিকে ঘোরানোর জন্য দায়ী মাংসপেশির মধ্যেও ভারসাম্য নষ্ট হয়। অনেকটা শিম্পাঞ্জি বা গরিলাদের মতো অবস্থা হয়। এতে কাঁধের যন্ত্রণা শুরু হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সমস্যা কোন স্তরে রয়েছে তার উপরে ব্যায়াম নির্ভর করে। যদি পেন্সিল অল্প ভিতরের দিকে মুখ করে থাকে তবে বুকের মাংসপেশি (pecs), সামনের ত্রিকোণ পেশি (front deltoids) এবং দ্বিমুখী পেশি (biceps)-এর সম্প্রসারণ (stretch) করার দরকার। যদি পেন্সিল অনেকটা ভিতরের দিকে মুখ করে থাকে তবে প্রগণ্ডাস্থিকে (hemerus) বাইরের দিকে নিজে যাওয়ার পেশি এবং অসংফলকে (scapula) ভিতরের দিকে ফিরিয়ে আনার পেশির ব্যায়াম করতে হবে।
সমস্যা কম থাকলে বুকের পেশির ব্যায়ামের সঙ্গেই কাঁধের পেশির (বাইরের দিকে নিয়ে যাওয়ার এবং ঘোরানোর) ব্যায়াম করা যেতে পারে। কিন্তু সমস্যা বেশি হলে চার থেকে ছয় সপ্তাহ শুধু নীচের ব্যায়ামগুলি করতে হবে।

পেন্সিল টেস্ট (ওপরে)
কেব্ল ইন্টার্নাল অ্যান্ড এক্সটার্নাল রোটেশন (নীচে)

প্রন রোস (উপরের পিঠ)
৪৫ ডিগ্রি কোণে আনত বেঞ্চের উপরে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। দু’হাতে ডাম্বেল নিয়ে শরীর পর্যন্ত তুলে আনুন। এই অবস্থায় কনুই ৯০ ডিগ্রি কোণে বেঁকে থাকবে। এক সেকেন্ড এই অবস্থায় রাখুন। আবার হাত সোজা করে নামিয়ে দিন।

রিভার্স ফ্লাইস (পিছনের ত্রিকোণ পেশি, উপরের পিঠ)
৪৫ ডিগ্রি কোণে আনত বেঞ্চের উপরে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। আবার দু’হাতে ডাম্বেল নিন। এ বার দু’হাত সোজা করে তুলুন। এই অবস্থায় কনুই অল্প কোণে বেঁকে থাকবে। ধীরে ধীরে সোজা অবস্থায় ফিরে আসুন।

কেব্ল ইন্টার্নাল অ্যান্ড এক্সটার্নাল রোটেশন
কেব্ল মেশিনের সামনে বা পাশে দাঁড়ান বা হাঁটু গেড়ে বসুন। হাত দু’পাশে ঝুলে থাকবে। এ বার হাত কনুই থেকে ৯০ ডিগ্রি কোণে বাঁকিয়ে কেব্ল ধরে বাইরের দিকে টানুন। এ ক্ষেত্রে কনুই অনেকটা কপাটের মতো কাজ করবে। কিছু ক্ষণ এই অবস্থায় রেখে আগের অবস্থায় ফিরে আসুন।

এক্সটার্নাল অ্যান্ড ইন্টার্নাল রোটেশন অন বেঞ্চ
৪৫ ডিগ্রি কোণে আনত বেঞ্চের উপরে উপুড় হয়ে শুয়ে দু’হাতে ডাম্বেল নিয়ে হাত তুলুন। উপরে হাত কনুই থেকে ভাঁজ হয়ে থাকবে। আবার নামিয়ে নিয়ে আসুন।

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য

 



অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.