চাঁদার ‘জুলুম’ তৃণমূলের, কলেজে প্রহৃত নেতারা
লীয় সম্মেলনের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৃণমূলের ‘চাঁদার জুলুম’ রুখলেন গ্রামবাসীরা।
‘মোটা টাকা’ চাওয়ার জেরে দল বেঁধে কলেজে ঢুকে গ্রামবাসীরা উপস্থিত তৃণমূল বিধায়কের সামনেই তাঁর দলের স্থানীয় নেতাদের উত্তম-মধ্যম দিলেন। পুলিশ গিয়ে আক্রান্ত নেতাদের উদ্ধার করে। দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, ‘জুলুম’ বা ‘তোলাবাজি’ করে অশান্তি তৈরির চেষ্টা হলে তা বরদাস্ত করা হবে না।
বৃহস্পতিবার রাতে হুগলির গুপ্তিপাড়ার বাঁধাগাছির বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ঘটনা। যার জেরে আপাতত স্থগিত হয়ে গিয়েছে ১১ মার্চ জিরাট পঞ্চায়েতের কোবরো গ্রামে বলাগড় ব্লক তৃণমূলের সম্মেলন। ‘চাঁদার জুলুমের’ অভিযোগ মানেননি বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক অসীম মাঝি। তাঁর দাবি, “আদৌ চাঁদা নিয়ে কোনও জুলুম করা হয়নি। দলের তরফে কলেজের কর্ণধারকে বলা হয়েছিল, সম্মেলনের জন্য আপনার যা ইচ্ছে, সেইমতো অনুদান দিন। কিন্তু আমাদের নামে মিথ্যা রটানো হচ্ছিল।” কিন্তু এ ভাবে সম্মেলনের জন্য কলেজ থেকে টাকা চাওয়া যে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব ভাল চোখে দেখছেন না, তা তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্তের কথাতেই স্পষ্ট। তিনি বলেন, “সম্মেলনে চাঁদা তুলতে কোনও নির্দেশ দলের রাজ্য নেতৃত্ব দেননি। যা ঘটেছে তা নিন্দনীয়।” তপনবাবু জানিয়েছেন, এর পিছনে কোনও চক্রান্ত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে দুই সদস্যের কমিটি গড়ে তদন্ত করা হবে দলের তরফে। চক্রান্তে দলের কেউ যুক্ত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চুঁচুড়া ইমামবড়া হাসপাতালে প্রহৃত তৃণমূল নেতা নবীন গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: তাপস ঘোষ।
দলীয় সম্মেলনের জন্য ‘চাঁদা’ হিসেবে কলেজের কর্ণধার প্রদীপকুমার চৌধুরীর কাছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব প্রথমে ১ লক্ষ এবং পরে কমিয়ে ৮৫ হাজার টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ। প্রদীপবাবু রাজি হননি। দাবিমতো টাকা না-পেলে কলেজ চলতে দেওয়া হবে না বলে দিন কয়েক ধরে তাঁকে ফোনে ‘হুমকি’ দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেন প্রদীপবাবু। এ নিয়ে দু’পক্ষের টানাপোড়েন চলছিল। ঘটনার কথা জানতেন বাঁধাগাছির সাধারণ মানুষ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ প্রদীপবাবু কলেজে একাই ছিলেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান বিধায়ক অসীম মাঝি, গুপ্তিপাড়া ১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান বিভা ভড়, দলের বলাগড় ব্লকের কার্যকরী সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায়, অরুণ দেবনাথ প্রমুখ। দু’পক্ষের মধ্যে কথাবার্তা থেকে বচসা বেধে যায়। চেঁচামেচি শুনে জনা কুড়ি গ্রামবাসী কলেজে ঢুকে বিধায়কের সামনেই ওই নেতাদের উপরে চড়াও হন। এলোপাথাড়ি কিল-চড়-ঘুষি পড়তে থাকে। নবীনবাবুকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতেই তৃণমূলের তরফে বলাগড় থানায় লিখিত অভিযোগে জানানো হয়, প্রদীপবাবুর নেতৃত্বেই ওই হামলা হয়েছে। প্রদীপবাবুও তৃণমূল নেতা অরুণ দেবনাথ এবং নবীনবাবুর বিরুদ্ধে ‘টাকা চেয়ে হুমকি’র অভিযোগ দায়ের করেছেন। দু’টি অভিযোগের ভিত্তিতে নবীনবাবু এবং প্রদীপবাবুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রদীপবাবুকেও ওই হাসপাতালের পুলিশ সেলে রাখা হয়েছে।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রদীপবাবু। তিনি বলেন, “আমি ১০ হাজার টাকা দিতে রাজি ছিলাম। কিন্তু নবীনবাবুরা ৮৫ হাজার টাকার জন্য জোর-জুলুম করছিলেন। বৃহস্পতিবার আলোচনার সময়েও ওঁরা হুমকি দেন। তখনই গ্রামবাসীরা এসে জুলুমের প্রতিবাদ করেন। আমি কাউকে ডাকিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে।” বিধায়কের পাল্টা দাবি, “প্রদীপবাবু স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতীকে দিয়ে আমাদের নেতাদের মার খাওয়ালেন। অত্যন্ত অনুচিত কাজ করেছেন তিনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.