|
|
|
|
মনমোহনকে চিঠি ত্রিপুরা কংগ্রেসের |
শহিদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্ত দাবি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আগরতলা |
ত্রিপুরা মন্ত্রিসভায় ফিরিয়ে আনা ‘বিতর্কিত’ শহিদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের রতনলাল নাথ সম্প্রতি শহিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে চিঠি লেখেন। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সেই চিঠিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
এই তথ্য জানিয়ে রতনবাবু বলেন, “আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত মামুন মিয়াঁর সঙ্গে শহিদের যোগসাজশ রয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের তদন্তকারীরা তা খতিয়েই দেখেননি। সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্যই আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলাম। তার প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মামুন-শহিদ যোগসূত্রটি খতিয়ে দেখবে।”
২০০৮ সালে ষষ্ঠ বামফ্রন্ট মন্ত্রিসভায় কয়েক সপ্তাহের জন্য স্থান পেয়েছিলেন শহিদ চৌধুরী। কিন্তু মামুন কাণ্ড সামনে আসার পর সিপিএম রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণেই শহিদকে মন্ত্রিসভা থেকে সরাতে বাধ্য হয়। মাস কয়েক আগে, মামুনের ঘটনায় শহিদের কোনও ভূমিকা নেই, এই কারণ দেখিয়ে তাঁকে মন্ত্রিসভায় ফিরিয়ে আনে সিপিএম। তারপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জলঘোলা হতে শুরু করেছে।
২০০৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি আগরতলায় থেকে মামুন মিয়াঁকে গ্রেফতার করে। সে দিন থেকেই শহিদ চৌধুরীর সঙ্গে মামুন মিয়াঁ তথা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের যোগাযোগের বিষয়টি ‘বহু আলোচিত বিষয়’ হয়ে ওঠে ত্রিপুরার রাজনীতিতে। অভিযোগ ওঠে, আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সদস্য মামুন মিয়াঁকে ভারতীয় পাসপোর্ট, পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট সার্টিফিকেট জোগাড় করে দেন শহিদ চৌধুরী। এমনকী নাম পরিবর্তন করে ‘সুমন মজুমদার’ হিসেবে রাজ্যে বসবাস করতেও মামুনকে সাহায্য করেছিলেন তৎকালীন রাজ্য মন্ত্রিসভার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একমাত্র প্রতিনিধি, শহিদ চৌধুরী। মামুন থাকতও শহিদের এক নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে।
আদালত বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত মামুন মিয়াঁকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে। কিন্তু তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারের ‘সিআইডি’ মামুন মিয়াঁর বিষয়ে অনুসন্ধান চালালেও দলীয় কমরেড শহিদ চৌধুরীর বিষয়ে কোনও তদন্ত চালায়নি। এমনকী ত্রিপুরা সরকারও শহিদের প্রসঙ্গে কোনও তদন্ত করেনি।
সম্প্রতি শহিদকে আবার মানিক মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেওয়ায় ‘বিতর্কিত’ শহিদকে নিয়ে সিপিএম-কংগ্রেসের মধ্যে নতুন করে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। মন্ত্রিসভায় নতুন করে তাঁকে ফিরিয়ে আনার পরেই, ‘জাতীয় নিরাপত্তার’ স্বার্থে মামুন মিঞার সঙ্গে শহিদ চৌধুরীর যোগাযোগের বিষয়টিকে কেন্দ্রীয় কোনও তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে তদন্ত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে আবার অনুরোধ করেন ‘ক্ষুব্ধ’ বিরোধী দলনেতা। এ বিষয়ে রতনলাল ১৫ ফেব্রুয়ারি চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে। তার প্রেক্ষিতেই মামুন মিয়াঁ কাণ্ডে শহিদ চৌধুরীর যোগসাজসের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বলে রতনলালের দাবি। |
|
|
|
|
|