পদত্যাগ রীতা বহুগুনার
দলে রদবদলের ভাবনা সনিয়ার
ত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবে ভোটে বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলাতে দলের কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরের নেতৃত্বে বড় মাপের রদবদল করতে পারে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। আজ উত্তরপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রীতা বহুগুণা জোশী কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেওয়ার পরে সেই সম্ভাবনা অনেকখানি বেড়ে গিয়েছে বলে কংগ্রেস সূত্রের দাবি।
উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবে খারাপ ফল হওয়ার পরপরই প্রাথমিক ময়নাতদন্তে বসে সনিয়া গাঁধী জানিয়েছিলেন, সাংগঠনিক দুর্বলতাই দলের পরাজয়ের কারণ। সেই সঙ্গে পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল থেকে ভবিষ্যতে শিক্ষা নেওয়ার কথাও বলেছিলেন সনিয়া। সভানেত্রীর এই মন্তব্যের ভিত্তিতেই দলের শীর্ষ নেতাদের বড় অংশ মনে করছেন, সংসদের বাজেট অধিবেশন চলাকালীন বা তার পরপরই কংগ্রেসের সাংগঠনিক স্তরে রদবদল করতে পারে হাইকম্যান্ড।
সর্বভারতীয় কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, কংগ্রেস সভানেত্রী সে দিন ‘শিক্ষা নেওয়ার’ কথা বললেও তাকে বাস্তবে রূপায়ণ করতে গেলে শুধু ওই দুই রাজ্যে সাংগঠনিক দুর্বলতা দূর করতে পদক্ষেপ করলেই হবে না। ওই নেতার কথায়, “যে সব রাজ্যে দল বিরোধী আসনে রয়েছে, সেখানে তো বটেই, বহু কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যেও সাংগঠনিক দুর্বলতার বিষয়গুলি প্রকট হয়ে পড়েছে।”
রেষারেষিতে বিরক্ত ব্যর্থ দায়িত্ব পালনে
চলতি বছরের শেষ দিকে গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশে ভোট আসন্ন। তার পরেই ভোট হওয়ার কথা কর্নাটকে। গত পরশু সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সনিয়া বলেন, এই তিন রাজ্যে কংগ্রেস পূর্ণ শক্তি দিয়ে লড়বে। কংগ্রেসের ওই নেতার কথায়, “এই তিন রাজ্যে কংগ্রেস সংগঠনেরই বা কী অবস্থা? হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেসের সভাপতি কল সিংহ ঠাকুর গত চার বছরে রাজ্যস্তরে কী কর্মসূচি নিয়েছেন? কর্নাটকে জি পরমেশ্বরকে দলের সভাপতি করা হলেও তার কথা দলে কে শুনছেন? বিশেষ করে দুর্নীতির অভিযোগে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইয়েদুরাপ্পা ইস্তফা দেওয়ার পরও রাজ্য কংগ্রেস তার কোনও সুবিধাই নিতে পারছে না!”
কংগ্রেস কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতে, অন্ধ্রপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যেও সাংগঠনিক দুর্বলতার বিষয়গুলি এখন প্রকট হয়ে পড়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশে রাজশেখর রেড্ডির মৃত্যুর পরে দলের সংগঠনের অবস্থা সঙ্গীন। রাজশেখর রেড্ডির পুত্র জগন্মোহন দল থেকে বেরনোর সময় প্রায় কুড়ি জন কংগ্রেস বিধায়ক তাঁর সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন। জগনের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত শুরু হওয়ার পর তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাঁটা পড়লেও ওই কংগ্রেস বিধায়কদের সকলকে কিন্তু এখনও ফেরাতে পারেননি রাজ্য নেতৃত্ব। দলের মধ্যে ঐক্যও ফেরেনি। অথচ ২০০৯ সালে এই অন্ধ্রপ্রদেশ থেকেই কংগ্রেসের সব চেয়ে বেশি সংখ্যক সাংসদ জিতেছিল।
কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি বৃহন্মুম্বই পুরভোটে তাদের বিপর্যয় হয়েছে। এবং তা চোখে আঙুল দিয়ে দলের সংগঠনের হাল দেখিয়ে দিয়েছে। আবার ওড়িশা, বিহারের মতো যে সব রাজ্যে কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাইরে, সেখানে সংগঠনকে মজবুত করার বিষয়টি তো রীতিমতো উপেক্ষিত।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির ওই নেতার কথায়, “অথচ এই সব রাজ্যে কংগ্রেসের নেতার অভাব নেই!” দলে যে ‘অধিক সন্ন্যাসী’ রয়েছে, সে ব্যাপারে সনিয়া সে দিন কটাক্ষও করেছেন। কর্নাটকে যেমন এস এম কৃষ্ণ, মল্লিকার্জুন খার্গে, বি কে হরিপ্রসাদ, সীড্ডা রামাইয়ার মতো এক দল নেতা রয়েছেন, তেমনই মধ্যপ্রদেশে দিগ্বিজয় সিংহ, কমল নাথ, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ারা রয়েছেন। কিন্তু এঁদের মধ্যে পারস্পরিক রেষারেষি তুমুল। আর তাই সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধির চেয়ে ব্যক্তিগত উচ্চকাঙ্ক্ষা পূরণই অগ্রাধিকার পাচ্ছে।
এআইসিসি শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, সামগ্রিক এই পরিস্থিতিতে শীঘ্রই বিভিন্ন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকদের পৃথক ভাবে বৈঠকে ডেকে রাজ্যওয়াড়ি রিপোর্ট চাইবেন সনিয়া। সেই সঙ্গে প্রয়োজন মতো রাজ্যস্তরে রদবদলও ঘটাবেন তিনি। সম্প্রতি এ ব্যাপারে দলীয় এক বৈঠকে কেরলের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রমেশ চেন্নিথালার দৃষ্টান্তও দিয়েছেন সনিয়া। দলের কিছু কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠকে তিনি বলেন, “রাজ্যে রাজ্যে রমেশের মতো প্রদেশ সভাপতি প্রয়োজন কংগ্রেসের। যিনি বার বার দিল্লিতে দরবার না করে ধারাবাহিক ভাবে রাজ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন এবং প্রকৃত অর্থে আঞ্চলিক নেতা হয়ে উঠবেন। কেরলে সেই ফল কংগ্রেস পেয়েছে।”
তবে কংগ্রেসের আর এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, “রদবদল করে সংগঠনকে জোরদার করার চেষ্টা অতীতেও হয়েছে। তাতে যে খুব যে সাফল্য এসেছে, তা নয়। বরং রদবদলের পাশাপাশি রাজ্যস্তরে কোন্দল ও রেষারেষি ঠেকাতে তিনি কোনও ব্যবস্থা নেন কিনা এখন সেটাও দেখার।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.