দাবি দলেরই অন্দরে
সল্টলেকে জমি বিক্রির ‘হক’, প্রস্তাব পেশে সায় মমতার
ল্টলেকে জমির ‘লিজ হোল্ডার’-রা এ বার জমি ‘বিক্রির অধিকার’ পেতে পারেন। এই সংক্রান্ত প্রস্তাবটি রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পেশ করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিয়েছেন। মহাকরণ-সূত্রে খবর: সব ঠিকঠাক চললে মন্ত্রিসভার আগামী বৈঠকেই সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত করা হবে। প্রয়োজনে আগামী বাজেট অধিবেশনে ১৯৯৭ সালের ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্নমেন্ট ল্যান্ড ট্রান্সফার অ্যান্ড রেগুলেশন অ্যাক্ট’-এ সংশোধনীও আনা হতে পারে।
সল্টলেকে জমির মালিকানা সংক্রান্ত এই বিতর্ক দীর্ঘ দিনের। পূর্বতন বাম আমলেও বার বার সরকারের মধ্যে থেকে লিজ হোল্ডারকে জমি বিক্রির অধিকার দেওয়ার দাবি উঠেছে। আবার সরকারই তা খারিজ করে দিয়েছে। কিন্তু লিজ জমি অবাধেই হস্তান্তর হয়ে গিয়েছে। হস্তান্তরের জন্য ‘উইল’ করা হয়েছে, সরকার যার ‘প্রোবেট’ আদালতে গিয়ে আটকাতে পারেনি। লিজ-মালিকদের জমি বিক্রির অধিকারদানের দাবিতে প্রথম সরব হয়েছিলেন বাম জমানার মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী। তাঁর যুক্তি ছিল, “৯৯৯ বছর পরে পৃথিবী থাকবে কি না, তারই ঠিক নেই! এই লিজ কার্যত ছলনা।” বস্তুত মানুষ বিপদে-প্রয়োজনে স্থাবর সম্পত্তিকে নগদে পরিবর্তিত করতে না-পারলে তার মূল্য নেই বলে মনে করতেন সুভাষবাবু।
কিন্তু সুভাষবাবুদের দাবিকে খারিজ করে দিয়েছিলেন জ্যোতি বসু-বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-অসীম দাশগুপ্তেরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, বিধাননগর তথা সল্টলেক উপনগরী তৈরির মূল লক্ষ্য ছিল মধ্যবিত্ত বাঙালিকে কলকাতার চৌহদ্দিতে ধরে রাখা। জমি বিক্রির অবাধ অধিকার দিয়ে দিলে মধ্যবিত্ত বাঙালির পক্ষে আর সল্টলেকে টিকে থাকা সম্ভব হবে না। অর্থের কাছে তাদের হার অনিবার্য হবে।
বাম জমানায় এ ভাবেই পাল্টা যুক্তিতে এই দাবি বারবার খারিজ হয়ে গিয়েছে। রাজ্যে পালাবদলের পরে দাবিটি নিয়ে এ বার শাসকপক্ষেরই একটি অংশ সরব। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় এসে সল্টলেকের কিছু জমির অবৈধ হস্তান্তরের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের কমিটি গড়েছিল। যার চেয়ারপার্সন বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণা চক্রবর্তী। সদস্য হিসেবে আছেন বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু, মহকুমাশাসক প্রমুখ। কমিটির বৈঠকে জমি-মালিকদের ‘বিক্রির অধিকার’ দেওয়ার দাবিতে সুজিতবাবু সরব হন। কেন?
সুভাষবাবুর মতো তাঁরও একই যুক্তি বেআইনি হস্তান্তর বন্ধের একমাত্র উপায়, বিক্রির অধিকার লিজ-মালিকদের হাতে দেওয়া। তা হলেই সল্টলেকে জমি হস্তান্তর রাতারাতি ‘বেআইনি’ থেকে ‘আইনি’ হয়ে যাবে বলে বিধায়ক মনে করছেন। বৈঠকে সুজিতবাবুর বক্তব্য ছিল, এই অধিকার লিজ-মালিকদের দিলে সরকারের ঘরেও স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন বাবদ রাজস্ব আসবে।
সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি বিভিন্ন দিক থেকে খতিয়ে দেখেছেন। এমনকী, গত চৌত্রিশ বছরে সিপিএম কেন লিজ-জমিকে ‘ফ্রি হোল্ড’ করেনি, তা-ও খতিয়ে দেখেন তিনি। সমস্ত দিক বিচার করে তিনি নগরোন্নয়ন দফতরকে এই সংক্রান্ত প্রস্তাবটি তৈরি করে মন্ত্রিসভা বৈঠকে পেশ করার অনুমতি দিয়েছেন বলে সূত্রটির দাবি। যদিও সূত্রটির বক্তব্য, আপাতত মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রস্তাবটি পেশ করতে বললেও শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভায় মুখ্যমন্ত্রী কী সিদ্ধান্ত নেন, তার উপরেই নির্ভর করছে সল্টলেকের জমির ‘ভবিষ্যৎ।’
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.