নন্দরাম
অগ্নিসুরক্ষা নিয়ে মন্ত্রী ও মেয়র ভিন্নমত, জট জটিল
মেয়র বলছেন, অগ্নি-নিরাপত্তা যথাযথই রয়েছে। দমকলমন্ত্রীর বক্তব্য, আগুন রোখার ব্যবস্থা এখনও অসম্পূর্ণ। আর মতের এই ফারাকেই জট কাটছে না নন্দরাম মার্কেটের। দমকলের ছাড়পত্র না-মেলায় আটকে আছে পুর-লাইসেন্স নবীকরণ। সমস্যা মেটাতে অগত্যা দু’জনকে একসঙ্গে বসার আবেদন জানিয়ে মেয়রকে চিঠি পাঠিয়েছেন ওই বাজারের ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, পুরসভার নির্দেশ মতোই অগ্নি-সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু দমকল তাতে খুশি না-হওয়ায় লাইসেন্স পেতে দেরি হচ্ছে। এই দাবি যে সঙ্গত, তা বলছেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, “আগুন রোখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ওঁরা করেছেন। আমি নিজেও দেখেছি।” কিন্তু রাজ্যের দমকলমন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান বলেন, “ওই মার্কেটে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থার কাজ এখনও বাকি। ওই কাজ সম্পূর্ণ হলে তবেই দমকলের ছাড়পত্র মিলবে।”
চার বছর আগে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় নন্দরাম মার্কেট। তার পরে ছ’তলা পর্যন্ত অংশে ব্যবসা চললেও লাইসেন্স নবীকরণ বন্ধ করে দেয় পুর-প্রশাসন। ব্যবসায়ীদের ওই বাজারের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা সুরক্ষিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এখন সে কাজ সম্পূর্ণ বলে দাবি ওই ব্যবসায়ীদের।
এক মাস আগে দমকল, পুলিশ, সিইএসসি-কে নিয়ে বৈঠক হয়েছিল পুরসভায়। তখনই মেয়র জানিয়েছিলেন, শীঘ্রই ওই ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স দেওয়ার কাজ শুরু করা হবে। ওই বৈঠকেই ঠিক হয়, অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা যাচাই করবে দমকলের একটি দল। ওই দলটিই পরে রিপোর্ট দেয় মার্কেটের কাজে তারা সন্তুষ্ট নয়।
নন্দরাম মার্কেট কমিটির সম্পাদক সমরকান্তি চৌধুরী জানান, দিন কয়েক আগে মহাকরণে দমকল দফতরে একটি বৈঠক হয়। তখন বলা হয়, আরও একটি জলাধার (দু’টি করা আছে), পিছনের দিকে একটি সিঁড়ি ও আলাদা একটি একটি ট্রান্সফর্মার বসাতে হবে। সমরকান্তিবাবু বলেন, “দমকলকে বলেছি, ও সব করার জায়গা মার্কেটে নেই। সামনের রাস্তায় তা করার অনুমতি দিলে করে দেব। দমকল-কর্তৃপক্ষকে বলেছি পুরসভার অনুমতি এনে দিন।” কিন্তু কোনও আশা মেলেনি বলে সমরবাবু জানান।
ওই বৈঠকের পরে গত ১ মার্চ ফের মার্কেটে যান দমকলের এক ডেপুটি ডিরেক্টর। দমকল সূত্রের খবর, ছাড়পত্র দেওয়ার মতো অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা এখনও হয়নি। সমরকান্তিবাবুর দাবি, “কলকাতায় এমন বহু পুরনো বাজার আছে, যেখানে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা আমাদের থেকেও খারাপ।”
পুরসভার এক পদস্থ অফিসারের বক্তব্য, দমকলের ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে অহেতুক টালবাহানা চলছে। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে। ওই মার্কেটে প্রায় ৫০০ দোকান চার বছর ধরে বিনা লাইসেন্সে ব্যবসা করছে। মেয়র শোভনবাবু বলেন, “অগ্নিবিধি মেনে ওঁদের কাজ করার প্রবণতা আছে। তা দেখে পুরসভা ওঁদের লাইসেন্স দিতেই পারত। কিন্তু দমকলকে প্রাধান্য দিয়ে বিষয়টির দ্রুত সমাধান করতে চেয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “দমকল কর্তৃপক্ষ একা কোনও সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারেন না। লাইসেন্স দেওয়াটা একটা কমিটির সিদ্ধান্ত। ব্যবসায়ীদের কথাও ভাবা উচিত।” দমকল অবশ্য তাড়াহুড়ো করে কিছু করতে নারাজ। দমকলমন্ত্রীর কথায়, “বাকি কাজগুলো করার জন্য ওঁদের বলা হয়েছে। মার্কেটে কোনও ঝুঁকি রাখতে চাই না।”
পুরসভা ও দমকলের এই ‘ঠান্ডা লড়াইয়ে’ দিশাহারা ব্যবসায়ীরা। সমস্যা মেটাতে তাই মেয়র ও মন্ত্রীকে বৈঠকে বসতে অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, এলাকার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ক স্মিতা বক্সীকেও সেখানে ডাকা হোক।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.