|
|
|
|
শিশুবিভাগের হালে ক্ষোভ, স্মারকলিপি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
একটি শয্যায় তিনজন এক সঙ্গে শুয়ে। জ্বর, বমি, কাশি নিয়ে ভর্তি হওয়া শিশু রোগীদের সঙ্গে রয়েছে ডায়েরিয়া আক্রান্ত। পর্যাপ্ত শয্যা না-থাকায় কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালের শিশু বিভাগে এখন ওই দৃশ্য নিত্যদিনের। যারা পারছেন অসুস্থ শিশুকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে, একাধিকবার প্রস্তাব পাঠানো হলেও শিশু বিভাগের শয্যা সমস্যা মেটাতে স্বাস্থ্য কর্তারা উদ্যোগী হয়নি। ওই ঘটনায় রোগীর বাড়ির লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ রোগী কল্যাণ ও সুরক্ষা সমিতিও। সোমবার সমিতির তরফে হাসপাতাল সুপারকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “দ্রুত সমিতির বৈঠক ডাকা হবে। সেখানে স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে। এর পরে সমস্যা সমাধানের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের পুরনো ভবনের দোতলায় শিশু বিভাগ। সরকারি হিসাবে ৩০টি শয্যা থাকার কথা হলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে ৮৫টি শয্যা বসানো আছে। এর পরেও সমস্যা মিটছে না। মাঝেমধ্যে রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হচ্ছে। প্রায় একমাস ধরে ওই সমস্যা চলছে। হাসপাতালের এক আধিকারিক জানান, কিছুদিন ধরে গড়ে দেড়শো জনের বেশি রোগী থাকছে। ফলে একটি শয্যায় একাধিক রোগীকে রাখতে হচ্ছে। |
|
ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব। |
মহকুমা হাসপাতালগুলি থেকে রেফার বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামলানো দায় হয়ে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে পরিকাঠামোর উন্নতি করে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো না হলে সমস্যা মিটবে না। কিন্তু কয়েকবার শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ। কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানিকলাল দাস ওই বিষয়ে মুখ খোলেননি। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত দাস বলেন, শয্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে রাজ্য সরকার পরিকল্পনা নিয়েছে। সুফল পেতে একটু সময় লাগবে।” যদিও স্বাস্থ্য কর্তার ওই আশ্বাসে রোগীর বাড়ির লোকজন সন্তুষ্ট নয়। কোচবিহারের ঘুঘুমারির বাসিন্দা আজিমুদ্দিন মিয়াঁ বলেন, “রবিবার বমির সমস্যা নিয়ে দেড় বছরের নাতনিকে হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি করানো হয়। আরও ৪ জনের সঙ্গে ওকে একই শয্যায় রাখা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ডায়েরিয়া আক্রান্ত শিশুও ছিল। বাধ্য হয়ে সোমবার ছুটি করিয়ে নাতনিকে নার্সিংহোমে নিয়েছি।” ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্য শিশুর অভিভাবক জহিরুল হকের কথায়, “আমার ১১ বছরের ছেলেকে রবিবার ভর্তি করানো হয়েছে। প্রথমে এক শয্যায় তিনজন রাখা হয়। অনেক অনুরোধ করায় সোমবার ওই শয্যায় দু’জন রাখা হয়। সামর্থ্য থাকলে এখানে ছেলেকে রাখতাম না।” এমন অভিজ্ঞতা কয়েকদিন আগে ওই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া হাওয়ারগাড়ি গ্রামের এলেমা বিবিরও। ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন কোচবিহার রোগী কল্যাণ ও সুরক্ষা সমিতির সভাপতি নারায়ণ মোদক বলেন, “জেলা হাসপাতালের শিশু বিভাগে পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যেভাবে গাদাগাদি করে ডায়েরিয়া সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের একই শয্যায় রাখা হচ্ছে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে শয্যা বাড়ানো না হলে সমস্যা বাড়বে।” |
|
|
|
|
|