গত এক মাসের মধ্যে দু’টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র বকখালিতে বেড়াতে গিয়ে সুমদ্রে ডুবে মৃত্যু হয় ওই দুই যুবকের। এর আগেও এরকম দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের সতর্কীকরণে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের আরও অভিযোগ, বার বার দুর্ঘটনা ঘটলেও সমুদ্র সৈকতে কোনও পুলিশি নজরদারির ব্যবস্থা নেই।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র বকখালিতে বছরভর পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে। বিশেষ করে কলকাতা ও তার পাশ্ববর্তী জেলা থেকেই বেশি ভিড় করেন পর্যটকেরা। কিন্তু রাজ্যের আর এক বিখ্যাত সমুদ্র সৈকত দিঘার মতো বককালিতে পর্যটকদের জন্য কতেমন উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। দিঘায় সমুদ্রের কোনও অংশে নামা নিরাপদ, কোথায় স্মান করা বিপজ্জনক ইত্যাদি সম্পর্কে সতর্কীকরণের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া থাকলেও বকখালিতে সেই ব্যবস্থা নেই। ফলে সমুদ্রে কোনও অংশে নামা বিপজ্জনক, কোথায় স্নান করা নিরাপদ বা আদৌ সমুদ্রে নামা নিয়ে কোনও সতর্কীকরণ বা নিষেধাজ্ঞার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া নেই। ফলে পর্যটকেরা স্নান করতে নেমে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পর্যটকেরা যাতে সুমদ্রে না নামেন বা নামলে কী ধরনের বিপদ হতে পারে সে সম্পর্কে কোনও সতর্কবার্তাই সমুদ্রসৈকতে দেওয়া নেই। নেই নিয়মিত পুলিশি নজরদারি। যদিও সৈকতে রয়েছে একটি পুলিশ ফাঁড়ি। কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে তেমন সাহায্য পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা দেবেন মণ্ডল সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ছবি তোলার কাজ করেন। তাঁর কথায়, “এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা অনকেই সমুদ্রে নেমে স্নান করেন। মাঝেমধ্যে চোরাবালির স্রোতে জলে ডুবে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। গত একমাসে এই ভাবে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন কলকাতার এক কলেজের ছাত্র। আমরা পর্যটকদের স্নান করা নিয়ে সাবধান করি। কিন্তু পুলিশ বা প্রশাসনের তরফে তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই। তা ছাড়া অনেকে মদ্যপ অবস্থায় সমুদ্রে নামেন। সে সবে নজরদারির জন্যও নেই কোনও পুলিশি ব্যবস্থা। অথচ সৈকতের কাছেই রয়েছে ফ্রেজারগঞ্জ উপকুল থানার একটি পুলিশ ফাঁড়ি।’’
সমুদ্রে স্নান করতে গিয়ে দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে নজরদারির প্রশ্নে ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানার পুলিশের বক্তব্য পর্যটকদের সমুদ্রে নামা নিয়ে সৈকতে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া আছে। কিন্তু বহু পর্যটকই সেই নিষেধ অগ্রাহ্য করে সমুদ্রে নামেন, বিশেষত যুবকেরা। এ ক্ষেত্রে পর্যটকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। তবুও সম্প্রতি দু’টি দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। |