করলা নদী সংস্কারের জন্য ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল জলপাইগুড়ি পুরসভা। সোমবার পাশ হওয়া বাজেটে করলা নদীর জন্য পৃথক ভাবে বরাদ্দ করা হয়। গত বছরের নভেম্বর মাসে জলপাইগুড়ি শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া করলা নদীতে বিষকাণ্ড হয়। তার জেরেই আগামী আর্থিক বছরে পুরসভার বাজেটে করলা নদী সংস্কারের জন্য পৃথক বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে। বিষকাণ্ডের পরে রাজ্য সরকারও নদী সংস্কারের জন্য করলা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করেছে। সেই পরিকল্পনার সহায়ক হিসেবেই পুরসভা নিজস্ব খাতে বরাদ্দ রেখেছে। ২০১২-১৩ সালের জন্য জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রায় ১১৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব এদিন পেশ করা হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলারের সমর্থন নিয়ে কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভার বাজেট প্রস্তাব হয়েছে। বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পরেই বিরোধী বাম কাউন্সিলাররা বাজেটের বিরোধিতা করে বাজেট অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন। |
পুরসভার বাজেট বৈঠক। নিজস্ব চিত্র। |
পুরসভার চেয়ারম্যান তথা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোহন বসু বলেন, “জলপাইগুড়ি শহরকে উন্নয়নের নয়া দিশা দেখানোর জন্য বাজেট হয়েছে। বিরোধীরা রাজনীতি করার জন্যই মিথ্যে প্রচার চালাচ্ছে। নতুন রাজ্য সরকারকে হেয় করার চেষ্টা করছে সিপিএম। রাজ্য সরকারের তরফে পুরসভার সব প্রকল্পকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। শহরের নিকাশি প্রকল্প রাজ্য সরকারের অনুমোদন পেয়েছে। কেন্দ্রের রাজীব গাঁধী আরবান মিশন প্রকল্পেও জলপাইগুড়িকে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য রাজ্য সরকার প্রস্তাব দিয়েছে। আসলে পার্টি অফিস থেকে শিখে আসা বুলিই বলছে সিপিএম কাউন্সিলাররা।” রাজ্যে তৃণমূল সরকার আসার পরে কংগ্রেস পরিচালিত জলপাইগুড়ি পুরসভাকে আর্থিক ভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে তা বাজেটে উল্লেখ করার দাবি জানায় বিরোধী বাম কাউন্সিলাররা। পাশাপাশি গত বছরের বাজেট প্রস্তাবে বিরোধীদের আনা সংশোধনীগুলি গ্রাহ্য করা হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে। বিরোধী নেতা সিপিএম কাউন্সিলার প্রমোদ মন্ডল বলেন, “নতুন রাজ্য সরকার জলপাইগুড়ি পুরসভাকে আর্থিক ভাবে বঞ্চিত করেছে। সে কথা বাজেট প্রস্তাবে উল্লেখ করা বা নোট দেওয়ার মতো দৃঢ়তা পুর কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারলেন না। এই বাজেট অসম্পূর্ন। তা ছাড়া প্রতিবার বাজেট প্রস্তাবে বিরোধীরা যা বলেন তার কোনওটাই লিপিবদ্ধ হয় না। একই খাতে প্রতিবার বাজেট বরাদ্দ করা হয়। বাজেটে ঘোষণা করা প্রকল্পগুলি নিয়ে কোনও আলোচনাও হয় না। সে কারনেই প্রতিবাদ জানাতে ওয়াকাউট করেছি।” বিরোধীদের আনা কোনও দাবিই পুর কর্তৃপক্ষই মানতে চাননি। পুরসভার একমাত্র তৃণমূল কাউন্সিলারও বাজেটকে সমর্থন জানিয়েছেন। এবারের বাজেটে স্টেশন বাজার এলাকায় নতুন বাজারের ভবন তৈরি করা, মশা মারার জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্র কেনা, বস্তি এলাকা উন্নয়নে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ এবং শহরের বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্পে প্রায় ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পুরসভার একমাত্র তৃণমূল কাউন্সিলার পাপিয়া পাল বলেন, “এই বাজেট জনকল্যাণকর। আশা করব ভবিষ্যতে পুর কর্তৃপক্ষ বাজেটের সফল রূপায়ণ করবেন। বাজেটকে সমর্থন করেছি।” |