নির্মীয়মাণ বাড়ির একটি বন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে এক বধূ ও তাঁর চার বছরের শিশুপুত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। সোমবার সকালে ভদ্রেশ্বরের চণ্ডীতলা এলাকার ঘটনা। নিহতদের নাম লক্ষ্মী সিংহ (২৫) ও শুভঙ্কর। পুলিশের অনুমান, লক্ষ্মীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। যা মানতে পারেননি স্বামী পিন্টু সিংহ। সেই কারণে তিনি স্ত্রী ও ছেলেকে বিষ খাইয়ে খুন করেন। খুনের লিখিত অভিযোগ করেছেন লক্ষ্মীর মা প্রীতি তাঁতি।
এসডিপিও (চন্দননগর) তথাগত বসু বলেন, “দেহ দু’টিতে পচন ধরা শুরু হয়েছিল। মনে হয়, বিষ খাইয়ে দিন তিনেক আগে ওঁদের খুন করা হয়। মহিলার স্বামীর খোঁজ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক জনকে আটক করা হয়েছে।” |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিক্টোরিয়া জুটমিলের বেল্টিং ডিভিশনের ঠিকাকর্মী পিন্টুর সঙ্গে বছর আটেক আগে তেলেনিপাড়ার বাসিন্দা লক্ষ্মীর বিয়ে হয়। তাঁদের দুই সন্তান। বড় ছেলে ৬ বছরের সুমিত প্রীতিদেবীর কাছে থাকে। আগে চণ্ডীতলারই অন্য বাড়িতে ভাড়া থাকতেন পিন্টুরা। নির্মীয়মাণ বাড়িটির মালিক দীনেশ সাহা। ওই বাড়ির একটি ঘরে পিন্টুরা ভাড়া আসেন গত ২ মার্চ। এ দিন বাড়ি রং করানোর জন্য দীনেশবাবুর ছেলে শিবু মিস্ত্রিকে নিয়ে আসেন। তাঁরা পিন্টুদের ঘর লাগোয়া নর্দমায় রক্তের দাগ দেখতে পান। এর পরে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে তাঁরা দেখেন পিন্টুর ঘর তালাবন্ধ। জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখেন, ভিতরে মেঝের উপরে লক্ষ্মী ও শুভঙ্করের দেহ পাশাপাশি পড়ে রয়েছে।
দরজা ভেঙে ঢুকে পুলিশ দেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠায়। পিন্টুর প্রতিবেশী বুলা দাস বলেন, “২ মার্চ ওঁরা ভাড়া আসেন। পর দিন থেকেই আর কাউকে দেখতে পাচ্ছিলাম না।” প্রীতিদেবী বলেন, “কিছু দিন আগে পর্যন্ত জামাই আমাকে বলত, পরিবারে অশান্তি হবে, এমন সব কাজ করছে আপনার মেয়ে। বারণ করুন। মেয়েকে বারণ করতাম। কিন্তু নতুন বাড়িতে যাওয়ার পর থেকে ওরা কেউই আর আসছিল না। রবিবার সকালে আমি গিয়ে দেখি ওই ঘর তালাবন্ধ। ভাবতেও পারছি না পিন্টু এমন কাজ করতে পারে।” ২ মার্চ থেকে কাজে পিন্টু কাজে আসছে না বলে জুটমিল সূত্রে জানা গিয়েছে। |