সূত্র দিল ধৃত মাওবাদীরা
ছত্তীসগঢ়ে উদ্ধার রকেট লঞ্চার, মর্টারের যন্ত্রাংশ
লকাতা থেকে রকেট লঞ্চারের যন্ত্রাংশ তৈরি করে মাওবাদী নেতারা তা ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে পাঠাতেন। এই দাবি কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ)।
রবিবার রাতে ও সোমবার সকালে রায়পুরের কয়েকটি গুদাম এবং পরিবহণ সংস্থায় হানা দেয় এসটিএফ। রায়পুর ছাড়াও ছত্তীসগঢ়ের আরও কয়েকটি জায়গায় পুলিশি অভিযান চলছে। তাদের সঙ্গে ছিল ছত্তীসগঢ় ও অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের দল। রায়পুর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়পুরের সরস্বতী নগর এবং খামতারাই থানা এলাকার দু’টি জায়গায় হানা দেয় পুলিশের দলটি। সেখান থেকে অন্তত ৭৫ বাক্স নাট-বোল্ট ও লোহার পাইপ এবং বেশ কিছু যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কয়েকটি ‘কন্টেনার’। পুলিশের অনুমান, ওই সব সরঞ্জাম দিয়ে বিস্ফোরক ছাড়াও দেশি প্রথায় অন্তত পাঁচশো রকেট লঞ্চার তৈরি করা যেত। প্রচুর মর্টার ও গ্রেনেডও তৈরি হতে পারত। ছত্তীসগঢ় পুলিশ নতুন করে কাউকে গ্রেফতার না করলেও জানা গিয়েছে, রবি ত্রিপাঠী নামে এক ব্যক্তিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এসটিএফ কলকাতায় নিয়ে আসছে। মাওবাদী দমন অভিযানের ভারপ্রাপ্ত ছত্তীসগঢ় পুলিশের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল রাম নিবাস জানিয়েছেন, বাজেয়াপ্ত ‘কন্টেনার’-এর জিনিসপত্র ফরেন্সিক ও ধাতব নানা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
পুলিশ জানায়, যে দু’টি গুদাম থেকে ওই সব জিনিসপত্র উদ্ধার হয়েছে, জানা গিয়েছে, সেই দু’টিরই প্রধান দফতর কলকাতায়। কলকাতায় ধৃত মাওবাদীদের জেরা করেই এসটিএফ এর সন্ধান পায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়পুরের পাশাপাশিই অভিযান চালানো হয় ধৃত মাওবাদী নেতা দীপক পারগানিহা-র স্ত্রীর ভিলাইয়ের বসুন্ধরা নগরের বাড়িতেও। তাঁর স্ত্রী পেশায় আইনজীবী। তবে বেশ কয়েক ঘণ্টা তল্লাশি অভিযান চালালেও পুলিশ সেখান থেকে আপত্তিকর কোনও কিছু পায়নি। কিছু কাগজপত্র পুলিশ অবশ্য নিয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, পুলিশের কাছে দীপকের স্ত্রী দাবি করেন, ২০০৯ সাল থেকে দীপকের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি, যোগাযোগও হয়নি। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, ওই দু’টি গুদামে অভিযান চালানোর পরে পুলিশ জানতে পারে, বাজেয়াপ্ত ‘কন্টেনার’গুলি গত অক্টোবর মাস থেকে সেখানেই পড়ে রয়েছে। ছত্তীসগঢ় পুলিশের একটি সূত্র বলছে, কলকাতায় পাঁচ মাওবাদী ধরা না পড়লে এই গুদামগুলির আলাদা অস্তিত্বই টের পাওয়া যেত না। কলকাতা পুলিশের এসটিএফ যদি ওই মাওবাদীদের ধরতে না পারত তা হলে কি ওই ‘কন্টেনার’গুলি ‘যথাস্থানে’ পৌঁছে যেত না? এটা কি ছত্তীসগঢ় পুলিশের তরফে গাফিলতি নয়? এই প্রশ্নের জবাব রায়পুরের সিনিয়র পুলিশ সুপার দীপাংশু কাবরা আনন্দবাজারকে বলেন, “আসলে গোয়েন্দা সূত্রে নির্দিষ্ট তথ্য না পেলে পুলিশের পক্ষে প্রায় ১৫ লক্ষ জনসংখ্যার রায়পুর শহরে এ ভাবে নিয়মিত নজরদারি করা সম্ভব নয়। থানা ছাড়াও মাওবাদী দমনে ছত্তীসগঢ় পুলিশের বিশেষ সেল আলাদা ভাবে তদন্ত চালাচ্ছে।” তবে দীপাংশু স্বীকার করেন, বিস্ফোরক বা যন্ত্রাংশ পাচার করতে মাওবাদীরা এ ধরনের পরিবহণ সংস্থার সাহায্য নেয়। ছত্তীসগঢ় পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলঘরিয়া ও কামারহাটি থেকেও অস্ত্র তৈরির যন্ত্রাংশ ওই রাজ্যে পাঠানো হয়েছে।
এসটিএফ জানায়, গত ২৯ মার্চ কলকাতা থেকে গ্রেফতার করা হয় মাওবাদী সংগঠনের টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান সুধানালা রামাকৃষ্ণ ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সঙ্গী মাওবাদী নেতা দীপক কুমারকে। এসটিএফ-এর দাবি, ওই দুই নেতাকে জেরা করে জানা যায়, বেলঘরিয়ার কয়েকটি লেদ কারখানা থেকে রকেট লঞ্চার তৈরির যন্ত্রাংশ তৈরি করিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সরবরাহ করা হত। সেই সব কারখানা থেকে বেশ কিছু যন্ত্রাংশও আটক করে এসটিএফ। ২৯ মার্চ রাতেই বেলঘরিয়া থেকে ধরা পড়ে আরও তিন মাওবাদী। ধৃত পাঁচ জনই এখন আদালতের নির্দেশে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।
সহ প্রতিবেদন: শমীক ঘোষ


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.