গোন্দলপাড়া মিলে ফের কাজ বন্ধের নোটিস
ফের ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জুটমিলে। সোমবার সকালে কাজে এসে শ্রমিকেরা ওই বিজ্ঞপ্তি দেখতে পান মিলের গেটের পাশের দেওয়ালে। বিজ্ঞপ্তি জারির পিছনে মিল কর্তৃপক্ষ ‘শ্রমিক অসন্তোষ’কে কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন। এর ফলে, শ্রমিকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। কর্তৃপক্ষ এক তরফা ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন শ্রমিকেরা। মিলে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। ওই বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার ফলে তাঁরা সমস্যায় পড়লেন।
মিলের জেনারেল ম্যানেজার অতনু চক্রবর্তী বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় মিলের এক শ্রমিককে আপাতত কাজে আসতে বারণ করা হয়। এর প্রতিবাদে শ্রমিকেরা রবিবার কাজ বন্ধ রেখেছিলেন। আমাদের অনুরোধ শোনেননি। শ্রমিকদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যবহার এবং কাজে অনীহার ফলেই মিল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” তা ছাড়াও, ‘বাইরের কিছু লোকের মদত’-এ শ্রমিকেরা শৃঙ্খলা মানছেন না বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। যদিও সেই ‘বাইরের লোক’ কারা, সে ব্যাপারে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।
চিন্তিত শ্রমিক। ছবি: তাপস ঘোষ।
ওই মিল এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে ২০১০ সালের ১১ সেপ্টেম্বরও মিলটি বন্ধ হয়েছিল। গত বছর ১৫ মার্চ কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক সংগঠন এবং প্রশাসনের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির পরে মিল খোলে। তার পর থেকে উৎপাদন স্বাভাবিক গতিতেই চলছিল। শনিবার মিলের গুদামে একটি ছোট লরির ধাক্কায় জখম হন স্পিনিং বিভাগের এক শ্রমিক। তাঁকে নিয়ে গিয়ে সহকর্মীরা মিল কর্তৃপক্ষের কাছে চিকিৎসার খরচ এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। কিন্তু ওই শ্রমিককে ইএসআই সুবিধা দেওয়া হয়, এই কারণ দেখিয়ে মিল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার খরচ দিতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে দু’পক্ষের বচসা হয়। সেই সময়ে ওই শ্রমিক মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। রাতে ভদ্রেশ্বরের ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। কর্তৃপক্ষের ‘আচরণ’-এর প্রতিবাদে রবিবার সকাল থেকে কাজ বন্ধ করে দেয় মিলের ৯টি শ্রমিক সংগঠন। একই সঙ্গে তারা বিভিন্ন বকেয়া মেটানোরও দাবি তোলে। পরে সংগঠনের প্রতিনিধিরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। কিন্তু সেই আলোচনা ব্যর্থ হয়। এর পরেই সোমবারের ওই বিজ্ঞপ্তি।
সিটু সমর্থিত মিলের চটকল মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পরিমল সিংহরায় বলেন, “সম্পূর্ণ বেআইনি এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কর্তৃপক্ষ মিল বন্ধ করে দিলেন। এক শ্রমিককে কর্তৃপক্ষ কাজে আসতে বারণ করেছেন। অথচ, ওঁর কোনও দোষ ছিল না। কর্তৃপক্ষ গ্র্যাচুইটি-সহ নানা বকেয়া মেটাচ্ছেন না।”
একই সুরে এআইইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক লাড্ডু চৌধুরী বলেন, “শ্রমিকদের সমস্যা দূর করতে মিল কর্তৃপক্ষ কোনও আলোচনাই করছেন না। শ্রমিক-আইন মেনেও কাজ করানো হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ বারবার মিল বন্ধের হুমকি দিচ্ছিলেন। এ সবেরই প্রতিবাদে আমরা কাজ বন্ধ করি।” বকেয়া মেটানোর ব্যাপারে শ্রমিকদের অভিযোগ নিয়ে মিল কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। চন্দননগরের মহকুমাশাসক ভি ললিতালক্ষ্মী জানিয়েছেন, মিল বন্ধ করার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ প্রশাসনকে কিছু জানাননি। শ্রমিকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে প্রশাসনিক ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.