জলপাইগুড়ির দুই ‘নিখোঁজ’ যুবককে পূর্বস্থলী থেকে উদ্ধার করল পুলিশ। তাঁদের অপহরণ করা হয়েছিল বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন ওই দুই যুবক। সোমবার তাঁদের কালনা মহকুমা আদালতে তোলে পুলিশ। আদালত ওই দুই যুবককে নিজেদের এলাকায় ফিরে যেতে দেওয়ার নির্দেশ দেয় পুলিশকে। এর পরেই তাঁদের জলপাইগুড়ির মাদারিহাট থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া দুই যুবকের নাম সনি লামা এবং মনজিৎ ইয়নজো। ওই যুবকেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, শুক্রবার তাঁরা অনিল লামা নামে আর এক বন্ধুর সঙ্গে ট্রেনে করে দুর্গাপুরে বেড়াতে আসছিলেন। দুর্গাপুরে কর্মরত এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার জন্য শনিবার সকালে অনিলবাবু সেখানে নেমে যান। এর পরে সনি ও মনজিৎ ইকবাল ইসলাম নামে এক যুবকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। বছর ছাব্বিশের সনি পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, কয়েক বছর আগে কেরলে তিনি একটি সংস্থায় গাড়িচালকের কাজ করতেন। সেই সময়ে সেখানেই তাঁর সঙ্গে পেশায় রাজমিস্ত্রি ইকবালের পরিচয় হয়েছিল। ইকবাল তাঁকে জানিয়েছিলেন, তাঁর বাড়ি বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে। সনির দাবি, ইকবাল তাঁকে বারবার ফোন করে পূর্বস্থলীতে বেড়াতে আসার জন্য অনুরোধ করছিলেন। সে কারণেই মনজিৎকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বর্ধমানে আসেন। |
দুই যুবকের দাবি, ট্রেন থেকে ইকবালকে ফোন করলে তিনি প্রথমে তাঁদের কাটোয়া স্টেশনে নামতে বলেন। পরে আবার জানান, বেলেরহল্ট স্টেশনে নামতে হবে। সেই মতো বেলেরহল্টে নামতেই ইকবাল ও তাঁর সঙ্গীরা তাঁদের দু’জনকে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে একটি ঘরে বন্দি করেন বলে অভিযোগ সনি ও মনজিতের। তাঁরা পুলিশকে জানান, অপহরণকারীদের হাতে ছিল ধারালো অস্ত্রশস্ত্র। চিৎকার করলে ভোজালি দিয়ে খুন করার হুমকিও দেয় তারা। এর পরে তাঁদের দু’জনকে বাড়িতে ফোন করতে বাধ্য করে দুষ্কৃতীরা। ফোনে অপহরণের কথা জানিয়ে বাড়ির লোকজনের কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পুলিশে খবর দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সনি ও মনজিতের বাড়ির লোকজন মাদারিহাট থানায় বিষয়টি জানান। পুলিশ মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে জানতে পারে, ওই দুই যুবক পূর্বস্থলী এলাকায় রয়েছেন। মাদারিহাট থানা পূর্বস্থলীর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। রবিবার সন্ধ্যায় বেলেরহল্ট এলাকার একটি ঘর থেকে ওই দু’জনকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে ইকবাল বা তাঁর সঙ্গীদের হদিস মেলেনি।
সোমবার কালনা আদালতে দাঁড়িয়ে সনি ও মনজিৎ বলেন, “পুলিশ উদ্ধার না করলে হয়তো আমাদের খুন হতে হত। এখন তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে চাই।” পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। |