সংশয় কাটিয়ে সেনাপ্রধান হলেন বিক্রম সিংহ |
অবশেষে সেনাপ্রধান বিজয়কুমার সিংহের উত্তরসূরির নাম ঘোষণা করল কেন্দ্র। ৩১ মে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেবেন বিক্রম সিংহ। এখন সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কম্যান্ডের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। ২০১৪ সালের অগস্ট মাস পর্যন্ত সেনাপ্রধানের দায়িত্বে থাকবেন বিক্রম সিংহ।
সেনা কম্যান্ডারদের মধ্যে বয়সের হিসেবে এগিয়ে ছিলেন বিক্রম। ফলে, তাঁর সেনাপ্রধান হওয়া প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু, জন্ম সাল নিয়ে বিতর্কের জেরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন বিজয়কুমার সিংহ। বিজয়কুমারের বক্তব্য আদালত মেনে নিলে তাঁর অবসর নেওয়ার সময়ও পিছিয়ে যেত। অবসরের সময়ের হিসেবে আর সেনাপ্রধান হওয়ার সুযোগ পেতেন না বিক্রম। সে ক্ষেত্রে সেনাপ্রধান হতেন নর্দার্ন কম্যান্ডের প্রধান কে টি পরনায়েক।
|
বিক্রম সিংহ |
শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিজয়কুমারের বক্তব্য মানতে রাজি হয়নি সুপ্রিম কোর্ট। ফলে, ৩১ মে-ই অবসর নিতে হবে তাঁকে। সাধারণত দায়িত্ব নেওয়ার ৬০ দিন আগে ভাবী সেনাপ্রধানের নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ৯০ দিন আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। বিজয়কুমারের বয়স নিয়ে আইনি লড়াইয়ের পরে কেন্দ্র বিষয়টি নিয়ে আর দেরি করতে চায়নি বলেই মনে করা হচ্ছে। বিক্রম বলেছেন, “সরকার আমার উপরে আস্থা রাখায় আমি কৃতজ্ঞ।”
১৯৭২ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন বিক্রম সিংহ। কর্ম জীবনের শুরুতে ‘শিখ লাইট ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের’ অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। জম্মু-কাশ্মীরে প্রবল সন্ত্রাসের সময়ে শ্রীনগরে সেনার ১৫ নং কোরের প্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষী বাহিনীতেও তিন বার যোগ দিয়েছিলেন বিক্রম সিংহ। মধ্য আমেরিকার এল সালভাদোর ও নিকারাগুয়ায় রাষ্ট্রপুঞ্জের পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করেছিলেন। পরে কঙ্গোয় রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি বহুজাতিক বাহিনীর ডেপুটি কম্যান্ডার পদে ছিলেন।
‘ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ’ ও ‘আর্মি ওয়ার কলেজের’ প্রাক্তন ছাত্র বিক্রম সিংহ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন আমেরিকাতেও। ২০১০ সালের ১ এপ্রিল ইস্টার্ন কম্যান্ডের দায়িত্ব নেন তিনি।
কর্ম জীবনে প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে বিক্রম সিংহকে। ২০০১ সালে জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস্ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক সন্দেহভাজন জঙ্গির মৃত্যু হয়। সে সময়ে ওই এলাকায় রাষ্ট্রীয় রাইফেলস্ বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন বিক্রম সিংহ। পরে ভুয়ো সংঘর্ষের অভিযোগে জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই সন্দেহভাজন জঙ্গির মা। ফলে বিক্রম সিংহের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এক উচ্চপদস্থ অফিসারকে নিয়োগ করেছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তবে শেষ পর্যন্ত এই বিতর্ক বিক্রম সিংহের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারল না। |