যোধপুর গার্ডেন্সের এক বহুতলের একটি ফ্ল্যাটে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ লেক থানার পুলিশ ওই ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে মহিলার দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, বৈশাখী বিশ্বাস ওরফে সুজান বেগম (২৫) নামে ওই গৃহবধূর মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে, এ দিন রাত পর্যন্ত তা নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। ময়না-তদন্তের পরেই তা জানা যাবে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে বৈশাখীর স্বামী রেজাউল হক শেখের খোঁজ মিলছে না। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। এ দিন সন্ধ্যায় ওই মহিলার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সওয়া সাতটা নাগাদ লেক থানায় ফোন করে এক যুবক বলেন, তাঁর নাম রেজাউল হক শেখ। তিনি ৬৫ যোধপুর গার্ডেন্সে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। ওই ফ্ল্যাটে তাঁর স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ওই যুবক আরও জানান, স্ত্রীর দেহ সিলিং থেকে নামিয়ে তিনি তাঁর তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে বারুইপুরের একটি বাড়িতে রয়েছেন।
তদন্তকারীরা জানান, সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ লেক থানার পুলিশ ফ্ল্যাটে পৌঁছয়। ফ্ল্যাটের দরজায় তালা লাগানো ছিল। কিছু ক্ষণ পর উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে, তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকা হয়। |
দেহটি চিৎ হয়ে পড়েছিল শোওয়ার ঘরের মেঝেয়। তাঁর পরনে ছিল রাতের পোশাক। পুলিশ জানিয়েছে, আপাতদৃষ্টিতে দেহে আঘাতের কোনও চিহ্ন মেলেনি। আবার, প্রাথমিক তল্লাশিতেও ওই ফ্ল্যাট থেকে সুইসাইড নোট-ও পায়নি পুলিশ। মহিলার গলায় ফাঁস বা শ্বাসরোধের চিহ্নও আপাতদৃষ্টিতে মেলেনি বলে পুলিশের দাবি।
পুলিশ জানায়, বৈশাখীর বাপের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজপুরে। রেজাউলের সঙ্গে বছর চারেক আগে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বৈশাখী অন্য ধর্ম গ্রহণ করেন। রেজাউল বছর দেড়েক আগে চারতলার ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন। কয়েক বছর আগে রেজাউল একটি পানশালায় করতেন। তবে এখন তিনি কী কাজ করেন তা প্রতিবেশীরা কেউই জানাতে পারেননি। কিন্তু প্রতি মাসে তিনি ফ্ল্যাট মালিককে ভাড়া মেটাতেন। ওই ফ্ল্যাটের মালিক অনন্ত দাস ওই বহুতলেরই অন্য একটি ফ্ল্যাটে থাকেন।
অনন্তবাবুর জামাই বাসুদেব দাস এবং ওই বহুতলের বাসিন্দারা জানান, রেজাউল বা বৈশাখী, কেউই প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। তবে দিন কয়েক আগে, রেজাউল নেশা করে বাড়ি ফেরায় বৈশাখীর সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়েছিল। রেজাউলকে শুক্রবার বিকেল চারটে নাগাদ শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিল বলে বাসুদেববাবু জানান।
পুলিশের সন্দেহ, বৈশাখী কী ভাবে মারা গিয়েছেন, তা রেজাউল জানেন। তাই রেজাউলের খোঁজ পাওয়া জরুরি। রেজাউল পালিয়ে যাওয়ায় বৈশাখীর মৃত্যু নিয়ে পুলিশের সন্দেহ বাড়ছে। |