এত দিন শুধু পেট্রোল গাড়ি তৈরি করলেও এ বার ভারতের বাজারে চাহিদার দিকে তাকিয়ে ডিজেল ইঞ্জিন তৈরি করছে হোন্ডা সিয়েল। জাপানে সংস্থার সদর দফতরে চলছে সেই ইঞ্জিন তৈরির কাজ। তবে তার দক্ষতা কতটা বা কোন ধরনের গাড়িতে তা ব্যবহৃত হবে, এ নিয়ে বিশদে এখনই মুখ খুলতে নারাজ সংস্থা।
ভারতে পেট্রোলের দাম নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়ায় ডিজেলের সঙ্গে তার ফারাক অনেকটাই বেড়েছে। ডিজেল গাড়ির চাহিদাও বেড়েছে। ফলে অনেক গাড়ি সংস্থাই প্রথম বার ডিজেল গাড়ি আনছে। আবার অন্যরা পেট্রোলের তুলনায় বেশি ডিজেল গাড়ি তৈরি করছে। এত দিন নিজেদের ব্যবসায়িক পরিচিতি ভেঙে ডিজেল গাড়ি তৈরির পথে হাঁটতে চায়নি হোন্ডা। কিন্তু এ বার তাঁরা আর বাজারের চাহিদাকে উপেক্ষা করতে পারছেন না, মানছেন সংস্থার সিনিয়র-ভাইস প্রেসিডেন্ট (বিপণন) জ্ঞানেশ্বর সেন। সম্প্রতি কলকাতায় তিনি বলেন, “আমরা একটি ডিজেল ইঞ্জিন তৈরি করছি। এখানকার চাহিদা ও সংশ্লিষ্ট তথ্য জাপানে পাঠানো হয়েছে। সেখানেই সেটি তৈরি হচ্ছে।” তিনি বিশদে মুখ না-খুললেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সংস্থার ব্রিও, জ্যাজ বা সিটি-র ক্ষেত্রেই তা ব্যবহার করা হতে পারে। উল্লেখ্য, ইউরোপে ডিজেল গাড়ি রয়েছে হোন্ডার। জ্ঞানেশ্বরবাবু জানান, এ ছাড়া সবর্ত্রই হোন্ডার পেট্রোল গাড়ি চলে।
এ দিকে, সম্প্রতি ফের গ্রেটার নয়ডার কারখানায় দু’টি শিফট-এ উৎপাদন শুরু করেছে সংস্থা। জাপানে সুনামির জন্য যন্ত্রাংশের অভাবে গত এপ্রিল-জুন পযর্ন্ত মাত্র ৫০% গাড়ি তৈরি করতে পেরেছিল তারা। অক্টোবর পর্যন্ত ব্যবসা ভাল চললেও তাইল্যান্ডের বন্যার জন্য ফের যন্ত্রাংশ আনতে সমস্যায় পড়ে তারা। জানুয়ারি পর্যন্ত নামমাত্র উৎপাদন হয়। ফলে নানা মডেলের গাড়ি পেতে অপেক্ষমাণ তালিকাও বাড়তে থাকে। সবচেয়ে সমস্যায় পড়ে সংস্থার নতুন ছোট গাড়ি ব্রিও। জ্ঞানেশ্বরবাবুর আশা, মার্চের মধ্যে ব্রিও-র প্রায় সব ক্রেতার হাতেই গাড়ির চাবি তুলে দিতে পারবেন।
অন্য দিকে, রাজস্থানের তাপুকারায় সংস্থার দ্বিতীয় কারখানাটিতে আপাতত গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরি হয়। সেখানে ইতিমধ্যেই গাড়ি তৈরির অনেকটা পরিকাঠামো গড়া হয়েছে। গ্রেটার নয়ডায় উৎপাদন ক্ষমতার (যা এখন বছরে ১.২০ লক্ষ) পুরোপুরি সদ্ব্যবহার হলে তাপুকারায় গাড়ি তৈরি শুরু হবে। সে ক্ষেত্রে ব্রিও বাজারে কেমন সাড়া ফেলে এবং আগামী অর্থবর্ষ গাড়ি শিল্পের পক্ষে কেমন যায়, তা নজরে রাখবে হোন্ডা। যত দ্রুত তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ে নিশ্চিত হতে পারবেন, তত তাড়াতাড়ি তাপুকারায় গাড়ি তৈরির জন্য লগ্নি পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে, জানান জ্ঞানেশ্বরবাবু। এ দিকে, ২০১২-’১৩-য় ১৮টি নতুন শহরে ২০টি ডিলার নিয়োগ করবে সংস্থা। এর মধ্যে হাওড়া ও আসানসোলও রয়েছে। |