‘ভোঁতা অস্ত্র’ কোথায়
পুলিশের কাছে না গিয়ে সোজা দেওয়ানদিঘিতে হাজির সিআইডি
হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল, শুধু দু’টো বাঁশ আর গাছের ডাল দিয়ে মারলে কী করে মৃতদেহে এত ক্ষত থাকতে পারে।
কিন্তু সিপিএম নেতা প্রদীপ তা ও কমল গায়েন খুনের তদন্তে নেমে সেই প্রশ্নের উত্তর বর্ধমান থানায় খুঁজতে গেল না পুলিশ। পা রাখল না পুলিশ সুপারের অফিসেও। বরং নিজেদের মতো করে তথ্য সংগ্রহের জন্য জেলা সেংশাধনাগারে গিয়ে সরাসরি ধৃতদের জেরা করলেন অফিসারেরা। প্রথম দিনেই ঘুরে এলেন দেওয়ানদিঘিতে ঘটনাস্থল ও নিহত নেতার বাড়িতে। রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্রের খবর, লোহার রড বা বোল্ডারের মতো ‘ভোঁতা অস্ত্র’ কোথায় গেল, তা খুঁজে বের করাই তাঁদের অনুসন্ধানের প্রধান বিষয় হতে চলেছে।
শুক্রবার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্য হোমিসাইড সেলের ইন্সপেক্টর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল শনিবার তদন্তে নামে। বর্ধমানের ডিডি (সিআইডি) দফতরের দু’জন অফিসারও ওই দলে রয়েছেন।
ঘটনাস্থলে সিআইডি অফিসাররা ।
বেলা ১১টা নাগাদ বর্ধমানে পৌঁছেই দলটি প্রথমে সিজেএম আদালতে গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ধৃত চার জনকে জেরা করার অনুমতি চায়। ভারপ্রাপ্ত সিজেএম ভাস্কর মজুমদার আবেদন মঞ্জুর করেন। দুপুর আড়াইটে নাগাদ জেলা সংশোধানাগারে গিয়ে জেল সুপারের ঘরে অভিযুক্তদের জেরা করতে শুরু করেন দলের সদস্যেরা। তৃণমূল নেতা পতিতপাবন তা-সহ চার জনকে টানা আড়াই ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয়। সিআইডি অফিসারেরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলবেন, এটা ধরে নিয়ে সারা দিনই কার্যত হাপিত্যেশ করে বসে ছিল বর্ধমান থানা। আইসি থেকে শুরু করে সাব-ইনস্পেক্টরেরা হাজির ছিলেন দিনভর। কিন্তু থানা তো নয়ই, পুলিশ সুপারের অফিসেও পা রাখেনি তদন্তকারী দল। সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে বিকেল ৫টা নাগাদ তারা সোজা চলে যায় দেওয়ানদিঘিতে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে ওই এলাকাতেই সিপিএমের বর্ধমান সদর জোনাল অফিস থেকে সামান্য দূরে প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ তা এবং সত্তরোর্ধ্ব জেলা নেতা কমল গায়েনকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল। যেখানে এখনও মাটিতে লেগে রয়েছে শুকনো রক্তের দাগ।
এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন সিআইডি অফিসার।
ঘটনাস্থল খুঁটিয়ে দেখে তিন ভাগে ভাগ হয়ে লাগোয়া বাড়িগুলিতে ঢুকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন সিআইডি অফিসারেরা। পরে ওই সব বাড়ির বাসিন্দা পার্থ গুপ্ত, শুক্লা কর্মকার বা তাঁর স্বামী সুবোধ কর্মকার বলেন, “আমরা প্রায় কিছুই বলতে পারিনি। কারণ ঘটনার সময় আমরা কেউই বাড়িতে ছিলাম না।” যেমন, ওই জোড়া খুনের পরে এলাকায় ‘প্রত্যক্ষদর্শী’ প্রায় পাওয়াই যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছিল। যদিও এ দিন তাঁদের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, তা কাউকে জানাতে বাসিন্দাদের নিষেধ করেছেন সিআইডি অফিসারেরা।
সন্ধ্যার মুখে প্রদীপ তা-র বাড়িতে ঢোকে সিআইডি দল। রুদ্ধদ্বার ঘরে টানা প্রায় ৪৫ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় নিহতের স্ত্রী চিত্রলেখা তা-কে। শুক্রবার হাইকোর্টের নির্দেশ শোনার পরেই চিত্রলেখাদেবী জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকায় পুলিশের মতো সিআইডি তদন্তেও তাঁর ‘আস্থা’ নেই। এ দিন আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে সিআইডি দল চলে যাওয়ার পরে তাঁর মেয়ে পৃথা বলেন, “ওঁরা যা কথা বলেছেন, প্রায় সবটাই মায়ের সঙ্গে। বন্ধ ঘরে মাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে আমাকেও সেখানে থাকতে দেওয়া হয়নি। তবে মায়ের আর আমার মনে হয়েছে, এই তদন্তকারী দলটির মনোভাব ইতিবাচক।”
ছবি: উদিত সিংহ



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.