র্যাগিংয়ের অভিযোগে দুর্গাপুরের একটি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দুই ছাত্রকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানায়, তাঁদের নাম প্রশান্ত ছেত্রী ও রাজীব মুপিড্ডি। তাঁরা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এনআইটি)-র বি-টেক, চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। বাড়ি যথাক্রমে মধ্যপ্রদেশের জামালপুরে ও অন্ধ্রের হায়দরাবাদে। শুক্রবার ওই দুই ছাত্র প্রতিষ্ঠানেরই প্রথম বর্ষের দুই ছাত্রকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ। তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এনআইটির ইলেকট্রনিক্স কমিউনিকেশনের ছাত্র প্রমিত দাঁ ও তাঁর দুই সহপাঠী সইফুল ইসলাম এবং রাকেশ কর্মকার এনআইটির হল-৯ হস্টেলে একই ঘরে থাকতেন। প্রমিতের বাবা-মা, পেশায় চিকিৎসক সমিত দাঁ ও নীপা দাঁ দুর্গাপুরেরই ‘এ’ জোনের বাসিন্দা। সইফুলের বাবা কাজি সফিকুল ইসলাম ডিভিসিতে কাজ করেন। অভিযোগ, ওই দুই চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শুক্রবার পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে তাঁদের রাস্তায় আটকে মারধর করেন।
শনিবার দুর্গাপুর থানায় লিখিত অভিযোগে প্রমিত জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধে সাড়ে ৭ টা নাগাদ পরীক্ষা শেষে তিনি, সইফুল ও রাকেশ হস্টেলে ফিরছিলেন। হঠাৎ দুই পড়ুয়া তাঁদের জিজ্ঞাসা করেন, তাঁরা প্রথম বর্ষের পড়ুয়া কি না। তা জেনে ওই দু’জন বলতে থাকেন, প্রথম বর্ষের পড়ুয়া হয়ে এত ঘোরাঘুরি কীসের! এর পরেই প্রমিতকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন তাঁরা। প্রমিত বলেন, “আমার শরীরের বাঁদিকে একটা সমস্যা আছে। সেটা বলায় আমার বাঁ গালে ও গলায় ব্যাপক মারধর করা হয়। আমি মাটিতে পড়ে গেলে লাথি মারা হয়। পকেট থেকে মোবাইল, মানি ব্যাগ ও পরিচয়পত্র বের করে নষ্ট করে দেওয়া হয়।” প্রমিত জানান, সেই সময় সইফুল বাধা দিতে গেলে সইফুলকে ঘুসি মারা হয়। ওর চশমাও ভেঙে দেওয়া হয়। মোবাইলটিও নষ্ট করে দেওয়া হয়। ঘটনার সময় ওই দু’জন তাঁদের, তাঁদের অভিভাবকদের এবং কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে অশ্রাব্য গালিগালাজ করেন। এমনকী অভিযোগ জানালে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকিও দেন তাঁরা। প্রমিতের আর এক সঙ্গী মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া রাকেশও মার খান ওই দু’জনের হাতে। সমিতবাবু বলেন, “আমার ছেলের শারীরিক সমস্যা রয়েছে। নিয়মিত চড়া মাত্রার ওষুধ খেতে হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় যা ঘটেছে তাতে বড় বিপদ ঘটে যেতে পারত।” সইফুলের বাবা সফিকুল ইসলামও বলেন, “যা হয়েছে তা জঘন্য।” এনআইটি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। এই ধরনের ঘটনা হামেশাই ছাত্রাবাসে হয়ে থাকে বলে অভিযোগ প্রথম বর্ষের ছাত্রদেরও। শনিবার দুপুরে অভিযোগকারীদের সঙ্গে নিয়ে এনআইটি ছাত্রাবাসে যায় পুলিশ। সেখানেই অভিযুক্তদের শনাক্ত করেন প্রমিত ও সইফুল। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শুভঙ্কর সিংহ বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে দুই ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” প্রতিষ্ঠানের ডিন গৌতমকুমার সান্যাল বলেন, “এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। কলেজের অ্যান্টির্যাগিং কমিটি তদন্ত করছে। অভিযুক্ত দু’জনের বাড়িতে খবর দেওয়া হয়েছে।” |
বালিকাকে ‘ধর্ষণ’, ধৃত
নিজস্ব সংবাদদাতা • পূর্বস্থলী |
দশ বছরের এক বালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে শনিবার দুপুরে গ্রেফতার করা হল এক যুবককে। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম আশাদুল শেখ। সে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের সমুদ্রগড় আদর্শপল্লীর বাসিন্দা। অভিযোগ, ওই এলাকারই বাসিন্দা এক বালিকাকে বাড়িতে ঢুকে ধর্ষণ করে সে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বালিকা কাগজ কুড়নোর কাজ করে। তার বাবা-মা বাংলাদেশে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাই পিসির বাড়িতেই থাকছিল সে। ওই বালিকার কাকা সইদুল শেখ পূর্বস্থলী থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, এ দিন দুপুরে বাড়িতে কেউ ছিল না। সেই সুযোগে বছর আঠাশের ওই যুবক ঢুকে পড়ে ওই বাড়িতে। মেয়েটি সেই সময়ে উঠোন ঝাড় দিচ্ছিল। জোর করে ওই বালিকাকে ঘরে নিয়ে যায় সে। মুখে কাপড় বেঁধে তাকে ধর্ষণ করে। সেই সময়ে তার গোঙানি শুনতে পেয়ে ছুটে আসেন এলাকার বাসিন্দারা। ওই যুবককে হাতেনাতে ধরে ফেলেন তাঁরা। এরপরেই তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। শনিবার বিকেলে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ওই বালিকার শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। |