কন্ডাক্টর বাস দাঁড় করাতে রাজি না-হওয়ায় চলন্ত বাস থেকে লাফ দিয়ে নামতে গিয়ে জখম হল দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে ইসলামপুর মহকুমার কানকি ফাঁড়ির মনোরায়। বেলন হাই স্কুলের ওই দুই ছাত্রের পরীক্ষা কেন্দ্র মনোরা হাই স্কুলে। তাড়াতাড়ি স্কুলে পৌঁছবে ভেবে রামপুর গ্রাম থেকে দূরপাল্লার ওই বাসে চড়েছিলেন ওই দুই ছাত্র রাজকুমার দাস ও আনন্দ দাস। চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে নামতে গিয়ে মাথায় ও হাতে পায়ে চোট পাওয়া জখম দুই ছাত্রকে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর পরে তারা পরীক্ষা দেয়। রাজকুমারের জন্য লেখকের ব্যবস্থা করতে হয়। জখম ছাত্র রাজকুমারের অভিযোগ, সে কয়েক বার বাস দাঁড় করানোর জন্য বললেও কন্ডাক্টর রাজি হয়নি। তখন বন্ধু আনন্দকে সঙ্গে নিয়ে সে লাফ দেয়। ঘটনার কথা জানার পরে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন স্কুলের সামনে সমস্ত ধরনের বাস স্টপ এবং কন্ডাক্টরের শাস্তির দাবিতে দু’ঘণ্টা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে। তবে এই ব্যাপারে ওই দুই ছাত্রের পরিবার পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন সে জন্য গোটা রাজ্য জুড়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যানবাহনের ব্যবস্থা হয়েছে। সেখানে দূরপাল্লার ওই বাসের কন্ডাক্টর কেন দুই পরীক্ষার্থীকে নামানোর জন্য বাস দাঁড় করালেন না সেই প্রশ্নে বিব্রত উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম কর্তৃপক্ষও। নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সি মুরুগন জানান, ঘটনা সম্পর্কে তাঁকে কেউই জানায়নি। তিনি নিগমের রায়গঞ্জের বিভাগীয় ম্যানেজারের কাছে রিপোর্ট চাইবেন। নিগমের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেছেন, “এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অভিযুক্ত কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এলাকার বাসিন্দারা জানান, ওই হাই স্কুলটি মনোরা বাজারের সামনেই। বাজারে অন্যান্য বাস দাঁড়ালেও দূরপাল্লার বাস দাঁড়ায় না। তা নিয়ে বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষুব্ধ। এদিন দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী জখম হওয়ায় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাস্তা অবরোধ শুরু হয়। মনোরা এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ জাফর বলেন, “বাজারেই বসেছিলাম। হঠাৎ দুই ছাত্রকে চলন্ত বাস থেকে লাফ দিয়ে নামতে দেখি। পরে জানতে পারি তাঁরা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। কেন বাস দাঁড় করানো হল না, সেটা আমারও প্রশ্ন।” |