২০০৯ সালে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে চার লেনের রাস্তা তৈরির জন্য সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ২০১০ সালে রাজ্য সরকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক তুলে দেয় জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের হাতে। তার পরে জাতীয় সড়কের দু’পাশের অধিগৃহীত জমির ক্ষতিপূরণের হিসাব মালদহ জেলা ভূমি সংস্কার দফতর তুলে না-দেওয়ায় কাজে নামতে পারছে না জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রীয় সরকার ফরাক্কা থেকে রায়গঞ্জ পর্যন্ত ১০৩ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের সড়ক তৈরির জন্য ত্রিশ মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। ইতিমধ্যে ১২ মাস কেটে গেলেও ভূমি সংস্কার দফতরের ঢিলেমিতে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ। এমন চলতে থাকতে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন প্রকল্প-৪ অধিকর্তা মহম্মহ সাইফুল্লা। প্রকল্প অধিকর্তা বলেন, “রাস্তার জন্য জমি নিয়ে যেরকম ঢিলেমি চলছে তাতে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হব। বারবার জমির ক্ষতিপূরণের তালিকা চেয়েও মিলছে না। ৩০ মাসের মধ্যে ১২ মাস কেটে গিয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটারের বেশি জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণের কাজ করতে পারিনি। বাকি ১৮ মাসে মালদহ থেকে রায়গঞ্জ ১০৩ কিলোমিটারের কাজ শেষ করা অসম্ভব।” জেলা ভূমি রাজস্ব আধিকারিক খগেন্দ্রনাথ দিউ বলেন, “জমির ক্ষতিপূরণের তালিকা জাতীয় সড়ক কতৃপর্ক্ষকে পাঠাতে শুরু করেছি। দ্রুত সমস্যা মিটবে বলে আশা করছি।” কেবল ক্ষতিপূরণের তালিকাই নয়, মালদহ শহরে ঢোকার বাইপাস রাস্তা নিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়েছে জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষকে। দু’বার জমি বাছাই করার পরে এলাকার বাসিন্দাদের আপত্তিতে বাতিল করতে হয়। পরে জেলা প্রশাসন থেকে যে জমি দেওয়া হয় কাজ শুরুর আগে জানা যায় ওই জমি আগেই দেওয়া হয়েছে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরকে। সেই জমি ফিরিয়ে নেওয়ার পরে এখনও বিকল্প জমি দেওয়া হয়নি বলে জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। জেলা ভূমি সংস্কার আধিকারিকের বক্তব্য, বাইপাসের জন্য যে জমি নেওয়া হয়েছিল সরকারি ভাবে সেই জমি খাস করার পর জানা যায় তার ১৩.৪১০ একর রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের। ওই জমি ইতিমধ্যে পূর্বাঞ্চলের আম, জাম, লিচু-সহ বিভিন্ন ফলের গবেষণাগার তৈরির জন্য লখনউয়ের সেন্ট্রাল ইন্সস্টিটিউট সাব ট্রপিক্যাল হর্টিকালচারের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই জন্য সেই জমিকে বাদ দিয়ে জাতীয় সড়কের বাইপাস করার জন্য জাতীয় সড়ক কতৃপর্ক্ষকে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, “জমি অধিগ্রহণ করার সময় ভূমি রাজস্ব দফতর ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কেউই জানত না জমিটি রাজ্যের প্রক্রিয়াকরণ দফতরের। ভুল বোঝাবুঝির জন্য এই ঘটনাটি ঘটেছে।” |