রাস্তা দখলমুক্ত করার কাজে নেমে প্রথম দিনেই হোঁচট খেতে হল কংগ্রেস পরিচালিত কোচবিহার পুরসভাকে। শুক্রবার বিকেলে কোচবিহারের স্টেশন মোড় এলাকায় জেলা যুব কংগ্রেসের একটি বাঁশের তৈরি শেড পুরকর্মীরা সরাতে গেলে উত্তেজনা ছড়ায়। জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের নেতৃত্বে একদল যুব কর্মী ও সমর্থক স্টেশন রোডে কোচবিহার-তুফানগঞ্জ সড়ক আটকে প্রায় আধ ঘন্টা বিক্ষোভ দেখান। পরে অবশ্য ওই যুব কর্মীরাই সেটি সরিয়ে দেন। তবে জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি ওই ঘটনার পিছনে পুর চেয়ারম্যান কংগ্রেসের বীরেন কুণ্ডুর ‘ষড়যন্ত্র’ খুঁজে পেয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, “আমরা দলে পুর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গোষ্ঠী বলেই র্যাফ, বুলডোজার নামিয়ে জোর করে ওই ছাউনি সরিয়ে নিতে বাধ্য করা হল। অথচ ওই ছাউনির সামনে বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় যান চলাচলে কোন সমস্যা ছিল না। সে কথা এদিন বার বার প্রশাসনের কর্তাদের জানানোর পরেও তাঁরা কোনও কথাই শুনতে চাননি।” বিষয়টি তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন অভিজিৎবাবু। এই ব্যাপারে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস নেতা বীরেন কুন্ডুর বক্তব্য, “প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত মেনে এদিন সপ্তাহব্যাপী অভিযান শুরু হয়েছে। ওই ছাউনি যুব কংগ্রেস অফিসের কিছু কর্মী নিজেরাই সরিয়ে নেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।” |
এ দিন দুপুরে কোচবিহার পুরসভার কংগ্রেস চেয়ারম্যান বীরেন কুন্ডু, কোচবিহার সদরের মহকুমাশাসক সুপর্ণ কুমার রায়চৌধুরি বিশাল পুলিশ, র্যাফ-সহ শহরের রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অভিযানে নামেন। বিকেলে স্টেশন মোড়ে বীরেন কুন্ডুর বিরোধী গোষ্ঠী বলে পরিচিত যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের সাংগঠনিক অফিসের সামনে বাঁশের খুঁটি পুঁতে তৈরি করা ছাউনি ভাঙতে বুলডোজার চালানোর তৎপরতা দেখেই তা নিয়ে অভিযানের অন্যতম নেতৃত্বে থাকা মহকুমাশাসকের সঙ্গে অভিজিৎবাবুর বাদানুবাদ শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবারই পুর চেয়ারম্যান বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি জানান, শনিবার স্টেশন মোড় এলাকায় অভিযান চালানো হবে। তার পরে এদিন আচমকা অভিযান হওয়ায় গরিব ব্যবসায়ীরা দোকান সরাতে না পেরে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেন অভিজিৎবাবু। তিনি দাবি করেন, প্রদেশ সভাপতি ফের ওই ছাউনি তৈরি করতে বলেছেন। সদর মহকুমাশাসক এদিনের বিরোধ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শহরের কাছারি মোড় এলাকায় ওই অভিযান শুরু করে সুনীতি রোড, হাসপাতাল মোড়, ট্রান্সপোর্ট মোড় হয়ে স্টেশন মোড়, রেলগুমটি এলাকায় অভিযান চালানো হয়। পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে কোচবিহার শহরকে যানজট মুক্ত করতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পুরসভা, পুলিশ, পূর্ত দফতর, বাস মালিক সমিতি, ব্যবসায়ী সমিতি-সহ বিভিন্ন অফিস ও সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানেই শহরে নয়া যান চলাচল বিধি চালুর পাশাপাশি বেআইনি ভাবে রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মহানন্দ সাহা বলেন, “গরিব ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে এমন অভিযান সমর্থন করছি না।” জেলাশাসক মোহন গাঁধী অবশ্য বলেন, “সবমহলের সঙ্গে আলোচনা করেই রাস্তা, ফুটপাত দখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।” |