ফের লুঠপাটের ঘটনা ঘটল বসিরহাটের একটি বাড়িতে।
বৃহস্পতিবার শেষ রাতে ভ্যাবলা-কালীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা, শিক্ষক বিন্দুবিহারী ঘোষের বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে সোনার গয়না-সহ নানা জিনিসপত্র লুঠপাট করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। এই নিয়ে গত কয়েক মাসে এই থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহের একটি হাই-মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন বিন্দুবিহারীবাবু। বছরের বেশির ভাগ সময়ে সেখানেই থাকেন। দুই সন্তান এবং আত্মীয়দের নিয়ে বসিরহাটের বাড়িতে থাকেন বিন্দুবিহারীবাবুর স্ত্রী যমুনাদেবী। বৃহস্পতিবার রাত ৩টে নাগাদ সদর দরজায় ধাক্কার শব্দে ঘুম ভেঙে যায় যমুনাদেবীদের। কী হচ্ছে তাঁরা বুঝে ওঠার আগেই দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়ে চার দুষ্কৃতী। তাদের এক জন রিভলভার উঁচিয়ে থাকে। বাকিরা যমুনাদেবীর আত্মীয় ঝন্টু ঘোষের হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। তার পরে শুরু হয় লুঠপাট। আলমারির চাবি কেড়ে নেওয়া হয়। মিনিট পঁচিশের মধ্যে সোনা-রুপোর গয়না, মোবাইল ফোন, ঘড়ি-সহ নানা জিনিসপত্র হাতায় দুষ্কৃতীরা। ঘটনার সময়ে শব্দ শুনে এক প্রতিবেশী জানলা খুলে কী হচ্ছে দেখার চেষ্টা করলে বাইরে দাঁড়ানো এক দুষ্কৃতী তাঁকে হুমকি দেয়। ভয়ে তিনি আর বেরোননি। দুষ্কৃতীরা ভ্যাবলা স্টেশনের দিকে পালায়।
শুক্রবার সকালে ওই বাড়িতে তদন্তে যায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা বাংলাদেশি। লুঠপাট চালিয়ে তারা লুকিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালায়। যমুনাদেবী বলেন, “দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকেই হাফপ্যান্ট পরে ছিল। মুখ গামছায় বাঁধা ছিল। একটি কংক্রিটের স্ল্যাব দিয়ে দরজা ভেঙে ওরা ঢোকে। ওদের হাতে রিভলভার এবং ভোজালি ছিল। আলমারি খুলে ওরা কয়েক ভরি অলঙ্কার, নগদ কয়েকশো টাকা হাতিয়ে নেয়। যাওয়ার সময়ে অন্যান্য কয়েকটি জিনিসও নেয়।” ফের এই লুঠপাটের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে ওই থানা এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে। তাঁরা এলাকায় পুলিশি টহলের দাবি তুলেছেন। কয়েক মাস আগে, ভ্যাবলার সল্টলেক পাড়ায় পর পর কয়েকটি বাড়িতে ডাকাতি হয়। সেই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উদ্ধার করা যায়নি খোয়া যাওয়া জিনিসপত্র। সপ্তাহ দুয়েক আগে বসিরহাট থানারই উত্তর কাঁকড়া গ্রামের ব্যবসায়ী সুশান্ত নাথের বাড়িতে হামলা চালায় এক দল দুষ্কৃতী। গুলি চালিয়ে, কুপিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে আহত করে এবং মহিলাদের মারধর করে লক্ষাধিক টাকার অলঙ্কার লুঠ করে দুষ্কৃতীরা। মাস তিনেক আগে খোলাপোতা এলাকার দু’টি বাড়ি এবং একটি পেট্রল পাম্পেও ডাকাতি হয়। সব ঘটনাগুলিরই তদন্ত চলছে এবং ইতিমধ্যে কয়েক জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। |