উত্তর ২৪ পরগনায় ছাত্র পরিষদ-টিএমসিপি চাপানউতোর
অধিকাংশ কলেজ-ভোটে ‘জোটহীন’ দুই শরিক
সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দুই শরিক দল কংগ্রেস ও তৃণমূলের ‘সম্পর্কের’ প্রভাব পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনার কলেজ ভোটেও।
এ জেলায় পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মোট কলেজের সংখ্যা ৬৪টি। এর মধ্যে ৪৮টি ডিগ্রি কলেজ। এই কলেজগুলির ছাত্রসংসদের ১৫টির ক্ষেত্রে ভোট হয়ে গিয়েছে। বাকিগুলিতে ভোট আগামী ৫ মার্চ। সব মিলিয়ে তিনটি কলেজ বাদ দিলে কোথাও জোট হয়নি দুই দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মধ্যে। হাতে গোনা যে সব জায়গায় জোট হয়েছে, তাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলেই ব্যাখ্যা করেছেন দুই ছাত্র সংগঠনের নেতারা। ইতিমধ্যে যে ১৫টি কলেজে ভোট হয়েছে, তার মধ্যে এক মাত্র গোবরডাঙা হিন্দু কলেজে জোট হয়েছিল দু’পক্ষের। বাকি যে কলেজগুলিতে ভোট, সেখানে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, বসিরহাট কলেজ ও হাবরার শ্রীচৈতন্য মহাবিদ্যালয় (কমার্স) বাদে আর কোথাও জোট হয়নি।
কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি?
তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “টিএমসিপি একক ভাবে ওই কলেজগুলিতে জয়ী হওয়ার মতো ক্ষমতা রাখে। সে কারণেই তারা একক ভাবে লড়ছে।” জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি সঞ্জয় রাহা বলেন, “ছাত্র পরিষদের সঙ্গে জোট করিনি, তার কারণ যখন আমরা কলেজে কলেজে এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতাম, তখন আমাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেওয়া হত না। পোস্টার, ফ্ল্যাগও লাগাতে দেওয়া হত না। সে সময়ে আমাদের ছেলেরাই লড়াই করেছে। মার খেয়েছে। ছাত্র পরিষদ তখন আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি।”
অন্য দিকে, জেলা কংগ্রেস সভাপতি দেবী ঘোষালের বক্তব্য, “জাতীয় স্বার্থে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে লোকসভা এবং বিধানসভায় জোট হয়েছিল। তার মানে এটা নয়, সর্বত্রই জোট করতে হবে।” দেবীবাবুর কথায়, “ওরা (তৃণমূল) আলাদা রাজনৈতিক দল। তা ছাড়া, কলেজ ভোটে জোটের জন্য ওরা কোনও আবেদন করেনি। আমরাও করিনি। যেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ দুর্বল, সেখানে ওরা নিজেদের স্বার্থে জোট করেছে।” বস্তুত, রাজ্য ও জেলায় সাম্প্রতিক ‘ঘটনাবলী’ দুই শরিকের সম্পর্কে এমনই ‘প্রভাব’ ফেলেছে যে দু’তরফেই জোটের পরিস্থিতি তৈরিই হয়নি বলে দু’দলের নেতারাই মেনে নিয়েছেন। সেই মতোই চলছে ‘বিষোদ্গার’-এর পালা। ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি আবু সেলিম বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে শিক্ষক, অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। যার পিছনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ছিল। ওরা শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। সে কারণেই আমরা জোট করিনি।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ সমাদ্দার আবার বলেন, “ওরা মনে করছে ওরা একক ভাবে জিতবে। সে কারণে আলোচনা করেনি। আমরাও একক ভাবে লড়ছি।”
তিনটি কলেজে জোট-প্রসঙ্গে সঞ্জয়বাবুর ব্যাখ্যা, দু’টি কলেজে এসএফআই মনোনয়ন পত্র জমাই দেয়নি। নির্বাচনে প্রচুর টাকা খরচ হয়। ওই খরচ যাতে না হয়, সে জন্যই স্থানীয় ভাবে সমঝোতা হয়েছে। যে সব কলেজে ইতিমধ্যেই ছাত্রসংসদের ভোট হয়েছে, তার সব ক’টিতেই এসএফআই ধরাশায়ী। কয়েকটি কলেজে তারা মনোনয়নই জমা দেয়নি। এ বিষয়ে সংগঠনের জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি দাস বলেন, “প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। ভয় দেখিয়ে আমাদের কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সরকার পদক্ষেপ করবে বললেও কিছুই করেনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.