আমতার স্কুলে অচলাবস্থা
পরিচালন সমিতিতে দুই তৃণমূল নেতা চাইছেন ‘পছন্দের লোক’
ক জন উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের সভাপতি, অন্য জন ওই কেন্দ্রেই দলের কার্যকরী সভাপতি। দুই নেতাই চান, তাঁদের পছন্দের অভিভাবকদের আমতা পীতাম্বর হাইস্কুলের পরিচালন সমিতিতে নেওয়া হোক। কিন্তু মাস তিনেক ধরে এ নিয়ে দুই নেতার ‘চাপ’-এ গঠন করা যায়নি পরিচালন সমিতি। ফলে, ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলা যাচ্ছে না। বন্ধ মিড-ডে মিল। আটকেছে পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন। খাতা কেনার টাকা না-থাকায় ছাত্রদের ‘ইউনিট টেস্ট’-এর লিখিত পরীক্ষার বদলে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।
ওই স্কুলের পরিচালন সমিতি রয়েছে তৃণমূলের হাতেই। গত ৩১ ডিসেম্বর সমিতির সহ-সভাপতি, সম্পাদক-সহ চার জন অভিভাবক প্রতিনিধির কার্যকাল শেষ হয়। এ ক্ষেত্রে চার জন নতুন অভিভাবককে অন্তর্ভুক্ত করে ফের পদাধিকারী নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু সেই নির্বাচন কবে হবে, তা এখনও নির্দিষ্ট হয়নি। কেননা, উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সভাপতি বিশ্বনাথ লাহা এবং কার্যকরী সভাপতি তপন চক্রবর্তী অভিভাবকদের পৃথক তালিকা জমা দিয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নান্দনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি পড়েছি সমস্যায়। সব ঘটনা উলুবেড়িয়ায় অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শককে জানিয়েছি। আইনজীবীদের সঙ্গেও কথা বলছি। শিক্ষা দফতরের নির্দেশ পেলেই নির্বাচন করা হবে।” অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক তন্দ্রা সরকার বলেন, “এ বিষয়ে বিশদে কিছু বলতে পারব না।” রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের অধিকর্তা দিব্যেন মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “স্কুলের কাছে টাকা থাকতেও পড়ুয়ারা মিড-ডে মিল পাচ্ছে না, এটা গুরুতর ঘটনা। দ্রুত খোঁজ নিয়ে বিষয়টিতে স্কুল শিক্ষা দফতর হস্তক্ষেপ করবে।”
স্কুল সূত্রের খবর, গত ২৪ ডিসেম্বর পরিচালন সমিতির বৈঠক হয়। সভাপতিত্ব করেন তপন চক্রবর্তীর অনুগামী হিসেবে পরিচিত ওই সমিতির এক সদস্য। তিনি বৈঠকে তপনবাবুর পছন্দের চার অভিভাবকের নামের তালিকা পেশ করেন। সেই চার অভিভাবককে প্রাথমিক ভাবে সমিতিতে নেওয়া হবে বলে ঠিক হয়। কিন্তু বৈঠকের আধ ঘণ্টা পরে বিশ্বনাথবাবুর পছন্দের একটি তালিকা আসে। সেই তালিকা থেকে পরে এক জনকে নিয়ে তপনবাবুর ‘প্যানেল’ থেকে এক জনকে বাদ দেওয়া হয়।
কিন্তু সমস্যা মেটেনি। বিশ্বনাথবাবুর দাবি, “আমি যোগ্য চার জনের নাম অনেক আগেই ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলাম। সেই চিঠিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আমি চাই ওই চার জনকেই নেওয়া হোক।” তাঁর তালিকায় থাকা অভিভাবকেরাও ‘যোগ্য’ বলে দাবি তপনবাবুরও। তিনি বলেন, “ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে সম্পাদক-সহ পদাধিকারী নির্বাচন করতে বলা হয়েছে। তিনি তা না করে মিড-ডে মিল বন্ধ করে দিয়েছেন। এটা চক্রান্ত।” বিশ্বনাথবাবুর চিঠি নিয়ে নান্দনিকবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, “মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়ার ভয়ে বিশ্বনাথবাবুর প্যানেল থেকে এক জনকে নেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। কারণ, ওই অভিভাবক আইনি চিঠি ধরিয়েছেন।” দুই তৃণমূল নেতার এই কাণ্ড-কারখানায় বেজায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজি বলেন, “সমস্যাটা অনভিপ্রেত। দলীয় পর্যায়ে আলোচনা করে মিটিয়ে দেব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.