|
|
|
|
সালুয়া থেকে সিআইএফ শিবির সরানোরই সিদ্ধান্ত প্রশাসনের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা ও খড়্গপুর |
শেষ পর্যন্ত খড়্গপুরের সালুয়া থেকে সিআইএফ (কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্স) জওয়ানদের শিবির অন্যত্র সরানোরই সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য প্রশাসন। সেখানকার শ’দেড়েক জওয়ানকে ১০ দিনের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার মহাকরণে মুখ্যসচিব সমর ঘোষ বলেন, “কোথায় ক্যাম্প সরানো হবে, তা দু’-চার দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে।”
সালুয়ার পরিবর্তে ওই শিবির পুরুলিয়ার ছররা বা বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে বলে বাহিনী সূত্রের খবর।
এক পুলিশকর্তা বলেন, “গত বছর জানুয়ারি নাগাদই পুরুলিয়ার ছররায় সিআইএফ-কে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সে ব্যাপারে সরকারি নির্দেশনামা বেরিয়ে গেলেও পরে তা বাতিল হয়।” ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলের (ইএফআর) জওয়ান এবং
তাঁদের পরিজনেদের সঙ্গে গত কয়েক দিনে দফায়-দফায় বিবাদ-সংঘর্ষের পরে শেষ পর্যন্ত শিবির সরানোর এই সিদ্ধান্ত। এই শিবির সরানো নিয়ে অবশ্য এ দিন মুখ খুলতে চাননি রাজ্য পুলিশের কর্তারা। ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি। এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।” |
|
সালুয়া থেকে বাড়ি ফিরছেন সিআইএসএফ জওয়ানেরা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
পুলিশ সূত্রে খবর, সালুয়ায় দুই বাহিনীর রেষারেষির সূত্রপাত বছর খানেক আগেই। সিআইএফ ব্যারাক লাগোয়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জমিতে সীমানা-পাঁচিল দেওয়া নিয়ে বিবাদ বাধে। সে সময়ে গুটিকয় ইএফআর পরিবার আপত্তি জানায়। যদিও শুক্রবার মুখ্যসচিব বলেন, “সালুয়ায় পরিবার নিয়ে ইএফআর জওয়ানদের থাকার অনুমোদন নেই। তবে রীতি অনুযায়ী তাঁরা যেখানেই থাকুন না কেন পরিবার নিয়ে থাকেন।”
বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে সিআইএফ জওয়ানদের অধিকাংশও দাবি তোলেন, তাঁরা আর সালুয়ায় থাকবেন না। নির্দিষ্ট সময় জঙ্গল এলাকায় কাটানোর পরে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশে যেন তাঁদের নিয়োগ করা হয়। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মেদিনীপুর পুলিশ লাইনেও দীর্ঘ ক্ষণ তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। ইএফআর পরিবারের সদস্যদের ‘তাড়ায়’ বৃহস্পতিবার দুপুরেই শিবির ছেড়ে কলাইকুণ্ডা বায়ুসেনাঘাঁটিতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন সিআইএফ জওয়ানেরা। রাতে তাঁদের মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পৌঁছেই নিরাপত্তার প্রশ্নে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই জওয়ানেরা। এমনকী, পুলিশ লাইন থেকে বেরিয়ে মেদিনীপুর স্টেশনের দিকেও রওনা হয়ে যান অনেকে। পরে একাধিক পুলিশকর্তার আশ্বাসে তাঁরা লাইনে ফিরে আসেন। গভীর রাতে আলোচনায় বসেন সিআইএফের আইজি সিদ্ধিনাথ গুপ্ত-সহ একাধিক পুলিশকর্তা। শুক্রবার দিনভর সালুয়ার পরিস্থিতি আপাত-শান্তই ছিল। বৃহস্পতিবার সিআইএফ ব্যারাকে ভাঙচুর চালিয়েছিলেন ইএফআর পরিবারের লোকজন। ব্যারাকের সরঞ্জাম বের করে তাতে আগুন লাগানোও হয়। শুক্রবার সকালে সেই সব সরঞ্জাম মেদিনীপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্তত ৮টি পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছিল আগের দিন। সেই গাড়িগুলিও সরানো হয়। তবে ওই ঘটনার জেরে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি বলেই জানিয়েছেন ডিআইজি (মেদিনীপুর) বিনীত গোয়েল। এ দিন তিনি ছাড়াও আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) গঙ্গেশ্বর সিংহ, পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি, সিআইএফের এসপি মনোজ বর্মা এলাকা ঘুরে দেখেন। |
|
|
|
|
|