শহর জুড়ে আবর্জনা, ভোগান্তি
দীর্ঘদিন ধরেই তেহট্ট মহকুমা সদর হিসাবে পরিচিত। সম্প্রতি নদিয়া জেলা সফরে এসে তেহট্ট ও হরিণঘাটাকে পুরসভা করা হবে বলেও মন্তব্যও করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ খোদ সেই মহকুমা সদরের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। দিনকে দিন রাস্তা ঘাটে বেড়েই চলেছে আবর্জনার স্তুপ। ফলে শ্রী হারাচ্ছে সীমান্ত লাগোয়া তেহট্ট। ১৯৯৬ সালে তেহট্টকে মহকুমা হিসাবে ঘোষনা করা হয়। মহকুমার যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালত সবই রয়েছে তেহট্টে। প্রতিদিনই নানা কাজে মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অজস্র মান্ুষ আসেন এখানে। এ দিকে তেহট্টের রাস্তাঘাটে প্রকাশ্যে যেভাবে জঞ্জাল ও আবর্জনা বেড়ে চলেছে তাতে রীতিমত অস্বস্তিতে পড়েন বহিরাগতদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও।
প্রশাসন ও স্থানীয়সূত্রে জানা গিয়েছে মহকুমা প্রশাসনের ভবন, মহকুমা আদালত, হাসপাতাল থেকে শুরু করে মহকুমা সদরে যা যা থাকার কথা সবই রয়েছে তেহট্টে। ফলে সপ্তাহের ছয়দিনই সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত বাইরে থেকে বিস্তর মানুষ আসেন তেহট্টে। কিন্তু একটা এলাকা প্রতিনিয়ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য যে পরিকাঠামো থাকার দরকার তার কিছুই নেই এখানে। স্থানীয় বাসিন্দা প্রণব বাইন বলেন, ‘‘এলাকার যা চেহারা হচ্ছে তাতে বাইরে থেকে কোনও অতিথি এলে আমাদের সত্যিই অস্বস্তিতে পড়তে হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষেরও তো কিছু করার নেই। প্রতিটি বাড়িতেই রোজদিনই কিছু না কিছু আবর্জনা জমে। কিন্তু সেগুলো তো আর ঘরের মধ্যেই জমিয়ে রাখা যায় না, অথচ ফেলারও কোনও নির্দিষ্ট জায়গা নেই। ফলে কখনও বাড়ির পাশে কোনও ফাঁকা জায়গায়, কখনও রাস্তার পাশে কোনও খাদে সেই নোংরা ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন লোকজন। এইভাবে বিভিন্ন জায়গায় বেড়ে চলেছে আবর্জনার স্তুপ। তৈরি হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এই বিষয়ে নানাভাবে স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কোনও ফল হয়নি।’’
তেহট্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কংগ্রেসের সঞ্জিত ঘোষ বলেন, ‘‘তেহট্টের যেখানে সেখানে প্রতিনিয়ত নোংরা, আবর্জনা বাড়ছে একথা ঠিক। কিন্তু সেই আবর্জনা একটা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে এলাকাকে প্রতিনিয়ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে যা যা করার দরকার সেই ধরণের পরিকাঠামো গ্রাম পঞ্চায়েতের নেই। এই সমস্ত কাজকর্ম করতে গেলে প্রচুর কর্মী, অর্থ ও আবর্জনা ফেলার জন্য গাড়ির দরকার। এসব কিছুই আমাদের নেই। তবে তেহট্ট পুরসভা হয়ে গেলেই এই সমস্যা আর থাকবে না।’’
তেহট্ট ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছে তেহট্ট। প্রতিনিয়ত আবজর্নার স্তুপ বাড়তে বাড়তে তেহট্ট নিজেই কার্যত এখন ডাস্টবিন হয়ে গিয়েছে। এলাকার রাস্তাঘাট ও নিকাশি ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ। সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে যায় তেহট্টের বেশ কিছু রাস্তায়। তেহট্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে থেকে লোকনাথ মন্দির পর্যন্ত যে রাস্তাটি আছে সামান্য বৃষ্টির পর তা একটা ড্রেনের চেহারা নেয়। এলাকায় যে ড্রেন আছে দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার ও সংস্কারের অভাবে সেগুলোও বিকল হয়ে পড়ে আছে। ফলে সামান্য বৃষ্টির পর জমা জল ও আবর্জনা মিলেমিশে তেহট্ট তখন নরকের চেহারা নেয়।’’ সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘তবে খুব শীঘ্র তেহট্ট পুরসভা হয়ে যাবে বলে শুনছি। তখন এইধরণের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তবে পাশাপাশি এটাও ঠিক যে, মানুষকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। নিজের বাড়ি যেমন আমরা সবসময় পরিষ্কার রাখি তেমনি এলাকাটাকেও পরিষ্কার রাখার দায় ও দায়িত্ব দুটোই আমাদের নিতে হবে। নাহলে পুরসভা হওয়ার পরেও কোটি কোটি টাকা খরচ করেও এলাকা পরিষ্কার রাখা যাবে না।’’
তেহট্টের মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘মহকুমা হাসপাতালে যে আবর্জনা জমা হয় সেগুলো যাতে গাড়ি করে নিয়ে অন্য কোথাও ফেলা হয় সে ব্যাপারে আমরা জেলায় একটা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আর এলাকার নোংরা আবর্জনা পরিষ্কার করার ব্যাপারে স্থানীয় বাজার ব্যবসায়ী সমিতি ও পঞ্চায়েতগুলোকে নিয়ে খুব শীঘ্র একটা আলোচনায় বসা হবে। তবে পুরসভা হয়ে গেলে তখন এই ধরণের সমস্যা আর থাকবে না।’’


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.