মনোরঞ্জন...
হিরণের ‘দাদা’
দু’জনের মধ্যে কোথাও কোনও মিল নেই। আবার কোথাও যেন এক গভীর মিল রয়েছে।
একজন কেরিয়ারে যে কত বার প্রত্যাবর্তন করেছেন, তার হিসেব নেই। অন্য জন দাঁড়িয়ে প্রত্যাবর্তনের মুখে।
এবং দ্বিতীয় জন প্রথম জনের কাছ থেকে অনবরত শুষে নিচ্ছেন সেই প্রত্যাবর্তনের অনুপ্রেরণা।
প্রথম জনের নাম সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। দ্বিতীয় জন, হিরণ চট্টোপাধ্যায়।
‘ম্যাচো মস্তানা’য় হিরণের নতুন লুক।
কিন্তু এই গল্পটায় মোচড় অন্য জায়গায়। অনেকের মতো দূর থেকে নিজের রোল মডেল-কে দেখে অনুপ্রাণিত হতে হয়নি হিরণকে। সৌরভের বীরেন রায় রোডের বাড়িতে তাঁর অবারিত দ্বার। দু’জনের মধ্যে সম্পর্কটা দাদা আর ভাইয়ের।
বেহালায় তাঁরা প্রতিবেশী। কিন্তু পরিচয় মাত্র বছর চারেক আগে এক পার্টিতে। সে সময় নাগাদই হিরণের কেরিয়ারে শুরু হয় ভাঁটার টান। সেই আলাপের সূত্রেই একদিন বীরেন রায় রোডের বাড়িতে হিরণকে আসতে বলেন তাঁর সৌরভদা।
“বারবার অন্যায়ের শিকার হয়েও দাদার লড়াই করে ফিরে আসার স্পিরিটটাই আমায় অনুপ্রেরণা দেয়। সেই দাদার এত কাছাকাছি চলে আসাটাই একটা বিরাট ব্যাপার আমার জীবনে,” বলছেন হিরণ।
কিন্তু নিছক পরিচিতিতে আটকে থাকেনি সম্পর্কটা। যে সময়ে হাতে ছবি নেই, কাঁধে চোট, পিঠে চোট, চিকিৎসা চলছে, সে সময়টায় সৌরভের কাছ থেকে হিরণ পেয়েছেন লড়াই চালিয়ে যাবার নানা টিপ্স।
বলতেন, ‘হিরণ, ধৈর্য ধরো। তোমার সময় আসবেই। আমি তোমার সঙ্গে আছি।’
বলতেন, ‘কথা কম বলবে। কাজ দিয়ে প্রমাণ করবে নিজেকে। দিনের শেষে কাজটাই থেকে যায়। কে কী বলল, সেগুলো নয়।’
এক বছর বসে থাকার পর হিরণের জীবনে সেই ‘সময়টা’ এল। বড় ছবি। বিরাট বাজেট। ‘ম্যাচো মস্তানা’। হিরণকে এইট প্যাকস তৈরি করতে হবে। সেটাই চ্যালেঞ্জ।
সেই চ্যালেঞ্জেও হাত ধরলেন সৌরভ।
“ট্রেনিং করতাম নিউ আলিপুরের একটা জিমে। তার পর ‘কে হবে বাংলার কোটিপতি’তে গিয়েছিলাম দাদার আমন্ত্রণে। সেখানেই দাদাকে বললাম আমি এইট প্যাকস তৈরি করছি নতুন ছবির জন্য। শুনেই বললেন তা হলে ট্রেনিংটা আমার প্রাইভেট জিমেই করো। বিশ্বাস করুন, এতটা আশাই করিনি!” বলছেন হিরণ।
বীরেন রায় রোডে, সুইমিং পুলের ধারে, নিজের প্রাইভেট জিমের একটা চাবিও হিরণকে দিয়ে দেন সৌরভ। “কী বলেছিলেন জানেন? বলেছিলেন এমনি জিমে তো ট্রেনারকে পুরো সময় পাওয়া যায় না। এইট প্যাকস করতে গেলে সারাক্ষণ ট্রেনারকে দরকার। এক কাজ করো, আমার জিমে তোমার ট্রেনারকেও ডেকে নাও। তা হলে পুরো সময়টাই ও তোমায় দিতে পারবে,” বলছিলেন ‘ম্যাচো মস্তানা’র নায়ক। সেটা গত বছরের জুন মাসের ঘটনা।
সেই ছবি তৈরি হয়ে গেছে। মুক্তি আগামী শুক্রবার। কিন্তু সৌরভের জিমের চাবি এখনও হিরণের কাছেই। এখনও তিনি ট্রেনিংটা ওখানেই করেন।
সৌরভের সঙ্গে কোনও দিন ট্রেনিং করেছেন?
‘না। আমি যে সময়ে যাই, সে সময় দাদা থাকেনই না। আমার তো বেশি দেখা হয় ডোনাদির সঙ্গে।’
তার মানে আপনার ইন্সপিরেশনের সঙ্গে দেখাই হয় না?
‘দাদা’র সঙ্গে, প্র্যাক্টিসে। ছবি: উৎপল সরকার
“খুব বেশি হয় না। কত কিছু নিয়ে ব্যস্ত দাদাখেলা, কমেন্ট্রি। কিন্তু যখন দেখা হয়অনেক কিছু নিয়ে আড্ডা হয়।”
এত ব্যস্ততার মধ্যেও কিন্তু ঠিক সময় বের করে ‘ভাই’য়ের ছবির প্রোমোশনের জন্য ‘দাদা’
একটা লম্বা বাইটও দিয়েছেন। শুধু তাই নয়। দরকার পড়লে আমির খানের সঙ্গেও যোগাযোগ করিয়ে দেবেন বলেছেন হিরণকে।
আমির কেন?
“গজনি’র জন্য এইট প্যাকস তৈরি করেছিলেন না? তখন থেকেই ওঁর ফিটনেস রেজিমটা আমি ফলো করি। তা ছাড়া কেরিয়ারের ওঠাপড়ার সঙ্গে যুঝতে আমিরও আমার একজন অনুপ্রেরণা। সেই আমিরের সঙ্গে যদি একবার দেখা করতে পারি। এইট প্যাকসটা দেখাতে পারি... দাদা তো বলেছে আলাপ করিয়ে দেবে,” হিরণের বক্তব্য।
কিন্তু শুধু আমির তো নন। শাহরুখই তো প্রথম সিক্স প্যাক তৈরি করেছিলেন ‘ওম শান্তি ওম’-এর জন্য? ‘কলকাতা নাইট রাইডর্স’-এর মালিকের কথা বলেননি সৌরভ?
“জিজ্ঞেস করেছিলাম। দাদা বললেন, শাহরুখের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ নেই,” হিরণের উত্তর। সত্যিই সময় কত বদলে গেছে!
আর তাঁর এইট প্যাকস দেখে দাদা নিজে কী বললেন?
“দাদা তো খেতে খুব ভালবাসেন। সেদিন ওঁর বাড়ির একটা প্রোগ্রাম ছিল। সেখানে গিয়ে আমি কিছুই খাচ্ছি না দেখে বললেন, আরে খেয়ে নাও। একদিনে কিচ্ছু হবে না। আর ডোনাদিকে বললেন, দেখেছ ডেডিকেশনটা। কী ভাবে মেনটেন করছে নিজেকে?”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.