নদ শুকিয়ে যাওয়ায় চিনকে সন্দেহ ও কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর অরুণাচল সফরের মধ্যেই উত্তর-পূর্বে, চিন সীমান্ত ঘেঁষে. শুরু হল সেনা ও বিমানবাহিনীর যৌথ মহড়া। সাম্প্রতিক কালের সব থেকে বড় এই মহড়ার পোশাকি নাম ‘প্রলয়’। এই সঙ্গেই মিজোরামে চলছে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার যৌথ সেনা মহড়া।
চিনের তরফে নাগাড়ে হুমকি ও দখলদারির আতঙ্কের জবাবে ভারত, উত্তর-পূর্বে মোতায়েন করছে ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ‘আকাশ’। ভারতীয় বিমানবাহিনীর হাতে গত কালই এই ক্ষেপণাস্ত্র তুলে দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি। সেই সঙ্গে নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয় টিএএল টর্পেডো। দু’টিই হায়দরাবাদের ‘ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড’-এ তৈরি। এই সঙ্গে শুরু হয়েছে বিমান বাহিনী, সেনা বাহিনীর যৌথ মহড়া। চারদিনব্যাপী এই মহড়ায় আধুনিক সব সামরিক সম্ভার ব্যবহার করা হচ্ছে। |
৪ নম্বর কোরের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল এন এন জোশী ও ইস্টার্ন কম্যান্ডের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক গ্রুপ ক্যাপ্টেন টি এস সিংগা জানায়ন, দিন ও রাতের যুদ্ধে ভারত কতটা পারদর্শী তা যাচাই করতে নানা পরিস্থিতি ও পরিবেশের মধ্যে মহড়া চালানো হচ্ছে। ব্যবহৃত হচ্ছে সুখোই ৩০-এমকেআই, মিরেজ ২০০০, মিগ ২৯, জাগুয়ার, মিগ ২১ বাইসন যুদ্ধবিমান, এমআই ১৭ হেলিকপ্টার, বিশেষ ধরনের বিমান সি ১৩০ জে, মালবাহী এএন ৩২, উড়ন্ত জ্বালানি ভরার বিমান ও এডব্লিউএসিএস সতর্কীকরণ প্রযুক্তি। থাকছে রিমোট নিয়ন্ত্রিত বিমানও। প্রথাগত উড়ান ও যুদ্ধের মহড়া ছাড়াও নেটওয়ার্ক ভিত্তিক অভিযান, বৈদ্যুতিন যুদ্ধপ্রণালী ও তথ্য-সম্প্রচার কেন্দ্রিক লড়াইয়ের মতো, আধুনিক যুদ্ধের নানা উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে ‘প্রলয়’ পর্বে হাত মেলাচ্ছেন সেনা ও বিমানবাহিনীর প্রযুক্তিবিদরা। স্থলভাগেও, আধুনিক নানা অস্ত্রসম্ভার, কামান, বিমান বিধ্বংসী কামান, ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির দক্ষতা যাচাই করা হচ্ছে। জোশী বলেন, “এ বারের মহড়া থেকে প্রতিরক্ষা বিভাগের শক্তি ও দুর্বলতাগুলি যাচাই করে ভবিষ্যতে সেই শিক্ষা কাজে লাগানো হবে।”
অন্য দিকে, মিজোরামের ভাইরেংতে এলাকায় ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার সেনাবাহিনী আজ যৌথ মহড়া শেষ করল। ভারতীয় সেনার ‘কাউন্টার ইনসার্জেন্সি অ্যান্ড জঙ্গল ওয়ারফেয়ার স্কুল’ (সিআইজেডব্লিউএস)-এ এই মহড়া হয়। মহড়ার পোশাকি নাম ছিল ‘গরুঢ় শক্তি’। ভাইরেংতে থেকে, টি এস সিংগা ফোনে বলেন, “সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ দমনে নানা ধরনের পদ্ধতি-সহ, গেরিলা যুদ্ধের পুরোপুরি অনুশীলন হয়েছে এখানে। লুসাই পাহাড়ে ‘বানানো সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি’ ধ্বংস করে, মহড়া শেষ হয়।” ইন্দোনেশীয় বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল গাতোত হেরু পুয়ানা। ভারতীয় বাহিনীর হয়ে মহড়ায় অংশ নেয় ১৯ মাদ্রাস ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন। সিআইজেডব্লিউএস-এর প্রধান মেজর জেনারেল এ কে সেন জানান, এমআই ১৭ কপ্টার ও ১৩ ধরনের ফায়ারিং রেঞ্জ ব্যবহার করে, পুরোপুরি যুদ্ধের মহড়া হয়েছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশ, পোল্যান্ড, ইজরায়েলের সেনা কম্যান্ডোরাও এই স্কুলে মহড়া দিয়েছেন। |